আগামী ৭ই জুন বৃটেনে পার্লামেন্ট নির্বাচন। এ নির্বাচনে এখন পর্যন্ত যেসব প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা শোনা যাচ্ছে তার মধ্যে অসম প্রেম রয়েছে কমপক্ষে দু’প্রার্থীর। এর একজন হলেন এমপি কেভিন ফস্টার (৩৮)। অন্যজন হলেন ডেহেনা ডেভিসন (২৩)। প্রথমজন তার থেকে ২৮ বছরের বড় ৬৬ বছর বয়সী নারী হ্যাজেল নুনানের সঙ্গে চুটিয়ে প্রেম করছেন। পার্লামেন্ট নির্বাচনের দু’দিন পরেই ১০ই জুন তাদের বিয়ে হওয়ার কথা রয়েছে। এরই মধ্যে এ বিষয়ে দৈনিক মানবজমিন-এ রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছে। অন্যদিকে ডেহেনা ডেভিসন হলেন  ২৩ বছর বয়সী একজন ছাত্রী। তিনি একটি কম্পিউটার গেমের দোকানে কাজ করেন। তবে তার ভালবাসায় রয়েছেন তার থেকে ৩৪ বছরের বড় স্থানীয় কাউন্সিলর জন ফারেহাম (৫৭)। কেভিন ফস্টার ও ডেহেনা ডেভিসন দু’জনেই ক্ষমতাসীন কনজার্ভেটিভ পার্টির। ডেহেনা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বৃটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের আসনে। এ আসনটি হলো ডারহামের সেজফিল্প। ১৯৩৫ সাল থেকে আসনটি বিরোধী লেবার দলের দখলে। এ আসনে ২৪ বছর ধরে এমপি ছিলেন টনি ব্লেয়ার। এখানে কনজার্ভেটিভদের বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। তবু ডেভিসন বিজয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা জানি সেজফিল্ড হলো লেবারদের ঘাঁটি। আমরা এটাও জানি সেই লিগেসির দিন এখন শেষ হয়ে গেছে। ওই আসনে বহু মানুষ আছেন যারা আমাদের পক্ষ অবলম্বন করবেন। এটা করবেন লেবার দল নেতা জেরেমি করবিনের কারণে। লোকজন এরই মধ্যে তার কারণে প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে’র পক্ষাবলম্বন করা শুরু করেছে। উল্লেখ্য, ডেভিসনের জন্ম শেফিল্ডে। তার মা একজন নার্স ও পিতা একজন ব্যবসায়ী। তিনি বৃত্তি নিয়ে একটি বেসরকারি স্কুলে পড়ার সময় মাত্র ১৫ বছর বয়সে কনজার্ভেটিভ দলে যোগ দেন। এর ঠিক দু’বছর আগে ১৩ বছর বয়সে সবচেয়ে বড় আঘাত আসে তার জীবনে। ওই সময় তার পিতাকে হত্যা করা হয়। সেই আঘাত তাকে সারাজীবন বয়ে বেড়াতে হচ্ছে। তারপরও তিনি বৃটিশ রাজনীতি ও আইনী বিষয়ে পড়াশোনা করতে ছুটে যান হাল-এ। সেখানেই এখন শেষ বর্ষে পড়াশোনা করছেন। আর এর ফাঁকে স্থানীয় একটি কম্পিউটার গেমসের দোকানে চাকরি করছেন। পড়াশোনার ডিগ্রি অর্জনের অংশ হিসেবে কনজার্ভেটিভ জ্যাকব রিস-মগ এর অধীনে সহকারীর কাজ করেছেন এক বছর। ২০১৫ সালে তিনি হাল নর্থ থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সেই নির্বাচনে লেবার দল ও ইউকিপের পরেই অর্থাৎ তৃতীয় স্থান অর্জন করেন। এতে ওই এলাকায় কনজার্ভেটিভ দলের ভোট বৃদ্ধি পায়। এরই মধ্যে নির্বাচনী প্রচারণার সময় তার সঙ্গে সাক্ষাত হয় প্রফুল্ল মনের অধিকারী কনজার্ভেটিভ দলের কাউন্সিলর জন ফারেহাম (৫৭) এর সঙ্গে। তার সঙ্গে আস্তে আস্তে প্রেম জমে ওঠে ডেভিসনের। এ নিয়ে অনেক সমালোচনা। তার চেয়ে ৩৪ বছরের বড় ফারেহাম। একে বিরাট এক অসম প্রেম বলে আখ্যায়িত করেন অনেকে। কিন্তু বয়সের এই বিশাল ফারাক সম্পর্কে ডেভিসন রোববার বলেছেন, বয়স গণনা হলো সংখ্যা। এর মধ্যে ফারাক খোঁজার কোন অর্থ হয় না। এর আগে তাদের প্রেম নিয়ে বেশ খোলামেলা আলোচনা করেছেন তিনি। বলেছেন, আমি সব সময়ই পরিপক্ব। আমার পরিবার জানে আমি কোন সিদ্ধান্ত আলতোভাবে নিই না। তাই তারা সব ক্ষেত্রেই আমাকে সমর্থন দিয়েছেন। আমি সুখী হলে তারাও সুখী হয়। তারা মনে করেন জন ফারেহাম আমাকে সুখী রাখছেন।

ক্ষমতাসীন কনজার্ভেটিভ পার্টির উচ্চ পর্যায়ে ডেভিসন জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মের সঙ্গে তার একটি ছবি টুইটারে পোস্ট করে। তার স্লোগান হলো- স্ট্যার্ন্ডি উইথ তেরেসা মে ইন সেজফিল্প। অর্থাৎ তেরেসা মের হয়ে সেজফিল্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। ডেভিসন বলেছেন, তিনি আশা করেন প্রধানমন্ত্রী শিগগিরই ওই নির্বাচনী আসন সফরে যাবেন। তবে তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিলÑ এটা তো সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের আসন। এখানে নির্বাচনের শক্তি পেলেন কি করে। জবাবে ডেভিসন বলেন, আমরা প্রেসের প্রচ- মনোযোগ পাচ্ছি। বিশেষ করে সেজফিল্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য। আমি মনে করি এটা প্রতিপক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। তারপরও এটা যে কারো কাছে একটি মার্জিনাল আসন। উল্লেখ্য, এ আসনে তার বিপরীতে লড়াই করবেন লেবার দলের ফিল উইলসন। তিনি দলীয় প্রধান জেরেমি করবিনের কঠোর সমালোচক।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn