দীন ইসলাম

ভূমিকম্প পরবর্তী ক্ষতি কমাতে ১৯টি নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়কে এসব নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। গত ৬ই মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ‘জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাউন্সিল’- এর সভায় এসব নির্দেশনা দেয়া হয়। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী ভূমিকম্প পরবর্তী ক্ষতি কমানোর ওপর জোর দিয়ে বলেন, সম্ভাব্য ভূমিকম্পে জীবন ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে হবে। এজন্য বিদ্যুৎ ও গ্যাসলাইন এমনভাবে স্থাপন করতে হবে যাতে নির্দিষ্ট মাত্রার ভূমিকম্প হলে ওই লাইন স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। উচ্চপর্যায়ের ওই সভায় মহানগরীর ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোয় রাজউক বা সিটি
করপোরেশন কর্তৃক লাল রঙের সাইনবোর্ড লাগানোর নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। সাইনবোর্ডে ‘ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ এবং এ ভবনে বসবাস করা নিরাপদ নয়’- কথাটি লেখা থাকবে। কাউন্সিলের সভায় সব সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বছরে অন্তত দুবার সুবিধাজনক সময়ে ভূমিকম্পের মহড়া অনুষ্ঠান আয়োজননের জন্য অনুশাসন দেয়া হয়। এছাড়া একটি নির্দিষ্ট তারিখ ও সময়ে সারা দেশে একযোগে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকম্পের সচেতনতা বিষয়ক কার্যক্রম হাতে নেয়ার কথা বলা হয়। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার কথা শিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ এবং ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১০ই মার্চ সারা দেশে জাতীয় দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস পালন করা হয়। এছাড়া গেল বছরের ১৩ই অক্টোবর আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবসে দুর্যোগবিষয়ক মহড়ার আয়োজন করা হয়। ওই সময় প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও মহাবিদ্যালয়গুলোয় ভূমিকম্পবিষয়ক মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উচ্চপর্যায়ের এ সভায় উপকূলীয় ৩৭টি উপজেলায় তিন হাজার ২৯১টি ইউনিট চলমান থাকার বিষয়টি আলোচিত হয়। পাশাপাশি অতিরিক্ত ৩৯৩টি নতুন ইউনিট গঠন করে পাঁচ হাজার ৮৯৫ জন স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগের কথা বলা হয়। এছাড়া সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে সব সময় সচল ও প্রস্তুত রাখার ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। কাউন্সিলে আলোচনায় নেপালে ভূমিকম্পের সময়ে ত্রাণসামগ্রী পাঠানোর অভিজ্ঞতা নিয়ে আলোচিত হয়। বলা হয়, নেপালে ভূমিকম্পের পরই দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দুই জন কর্মকর্তা বোতলজাত পানি, তাঁবু, চালসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম পাঠাতে মনিটরিং করে। ওই সময় সৈয়দপুর বিমানবন্দর বড় ভূমিকা পালন করে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর ১৯টি নির্দেশনা বাস্তবায়ন মনিটরিং করার জন্য ১৯ জন কর্মকর্তাকে ফোকাল পয়েন্ট নিযুক্ত করা হয়েছে। তারা ছক অনুযায়ী প্রতি মাসের ২৭ তারিখের মধ্যে অগ্রগতি প্রতিবেদন সচিবের কাছে পাঠাবেন।
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn