কুয়ালালামপুর : মালয়েশিয়ায় ধরপাকড় অভিযান শুরু হওয়ার পর প্রায় এক হাজার ২০০ বাংলাদেশি আটক হয়েছেন। সরকার তাদের ব্যাপারে ভাবছে। পর্যায়ক্রমে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। এ ছাড়া মালিকেরা চাইলে অবৈধদের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পুনঃনিয়োগ করতে পারবেন। এতে তারা ফের কাজের সুযোগ পাবেন। ঙ্গলবার বিকালে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো: শাহরিয়ার আলম গণমাধ্যম কর্মীদের এ তথ্য জানান। মালয়েশিয়া থেকে একাধিক বাংলাদেশি টেলিফোনে জানান, মালয়েশিয়ায় ক্র্যাকডাউন অভিযান সোমবারও হয়েছে। কুয়ালালামপুরসহ দেশটির পাঁচটি স্থানে অভিযানে কিছু অবৈধ বিদেশী অভিবাসী ধরা পড়েছেন। তবে এ তালিকায় কোনো বাংলাদেশি আছেন কি না তা ইমিগ্রেশনের পরিসংখ্যানে উল্লেখ করা হয়নি।

মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সোমবার দেশটির ইমিগ্রেশন অধিদফতরের মহাপরিচালক দাতু শ্রী মোস্তফা বিন আলীর নেতৃত্বে আট সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলের সাথে বাংলাদেশ হাইকমিশনার মুহা: শহীদুল ইসলামসহ দুই সদস্যের প্রতিনিধির রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয়েছে। ওই বৈঠকে ভারত ও নেপালের প্রতিনিধিদলও উপস্থিত ছিল।

সভায় মহাপরিচালক মোস্তফা বিন আলী নিশ্চিত করেছেন, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় বসবাসরত সব অবৈধ বাংলাদেশি রি-হায়ারিং প্রক্রিয়ার আওতায় বৈধ হওয়ার সুযোগ পাবেন। তিনি এ সুযোগ গ্রহণে সবার প্রতি আহ্বান জানান। অবৈধ ব্যক্তিদের ধরপাকড় যেকোনো দেশের অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষার একটি স্বাভাবিক ও চলমান প্রক্রিয়া। তবে গ্রেফতারের ভয় এড়িয়ে রি-হায়ারিং প্রক্রিয়ায় যাতে সব বাংলাদেশি অংশগ্রহণ করতে পারেন, সেজন্য ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ মালিকপক্ষের চিঠির ভিত্তিতে তাদের নিরাপদে ইমিগ্রেশন অফিসে যাতায়াতের সুযোগ করে দেবেন। এ ছাড়াও তারা অন্যান্য কার্যকর পন্থা নিরসনের প্রচেষ্টা করছেন। এটি বাংলাদেশের পক্ষে একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত বলে ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

হাইকমিশনের ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত এক লাখ বাংলাদেশি ই-কার্ডের এবং দুই লাখ ৯৩ হাজার রি-হায়ারিং প্রক্রিয়ার অধীনে এসেছেন, যা সর্বমোট আবদেনের যথাক্রমে ৫৭ ও ৮৯ শতাংশ। মহাপরিচালক বাংলাদেশীদের এ অভূতপূর্ব সাড়ার প্রশংসা করেন এবং আশা প্রকাশ করেন, উভয় পক্ষের মধ্যে সহযোগিতার এ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশ থেকে ট্যুরিস্ট, প্রফেশনাল বা ব্যবসায়িক ভিসা নিয়ে মালয়েশিয়ায় কাজ করার কোনো সুযোগ নেই উল্লেখ করে মহাপরিচালক অনুরোধ করেন, যাতে সঠিক শ্রেণীর ভিসা নিয়ে বাংলাদেশীরা মালয়েশিয়ায় আসেন, যা এয়ারপোর্টে হয়রানির আশঙ্কা হ্রাস করবে।

মালয়েশিয়া ইমিগ্রেশনের বৈঠকের উদ্ধৃতি দিয়ে সাম্প্রতিককালের হিসাব অনুযায়ী, বিভিন্ন ডিটেনশন ক্যাম্পে তিন-ছয় মাস মেয়াদি ১৫ জন, ৬-১২ মাস মেয়াদি চারজন এবং এক বছর মেয়াদি সাতজন সম্ভাব্য বাংলাদেশি আটক আছেন। এ সংখ্যা অন্যান্য সময়ের তুলনায় অনেক কম, যা মহাপরিচালকের ভাষ্য অনুযায়ী বিস্ময়কর ও প্রশংসার দাবিদার। আটক হওয়াদের দ্রুত দেশে পাঠানোর সহযোগিতায় হাইকমিশনকে তিনি ধন্যবাদ জানান বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়েছে।

ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, বিপুল বাংলাদেশিকে সেবা প্রদানে গত সপ্তাহে হাইকমিশন ৩১ হাজার ৯৮৪ জনকে কনসুলার সেবা প্রদান করেছে। এ ছাড়াও প্রতি সপ্তাহে নিয়মিত দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কনসুলার ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মঙ্গলবার রাতে মালয়েশিয়ার বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুহা: শহীদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করে বক্তব্য নিতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn