মিয়ানমারের রাখা্ইন প্রদেশে সহিংসতার ঘটনায় নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ৪ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা শরনার্থীদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মিয়ানমারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা উ থাং তুন মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ আহ্বান জানান। পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বৈঠকের বিভিন্ন বিষয় সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা ৩০ হাজার হলেও আসলে মিয়ানমার থেকে ৪ লাখের বেশি শরণার্থী এসেছে বলে প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে জানান। দ্বিপক্ষীয়ভাবে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করার ওপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিবেশীদের মধ্যে সমস্যা হতেই পারে। কিন্তু এটা আমরা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে পারি। এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলে অশান্ত পরিস্থিতির সময় ভারতের সঙ্গে শরণার্থী সমস্যার দ্বিপক্ষীয় সমাধানের কথা বৈঠকে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরে কয়েক লাখ রোহিঙ্গার ভার বহন করা আসছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে গত বছরের শেষ দিকে রাখাইনে সেনা বাহিনীর দমন অভিযানের মুখে নতুন করে বাংলাদেশে আসতে শুরু করে রোহিঙ্গা। এই দফায় ৭০ হাজারের বেশি মানুষ মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে ঢুকেছে। এ প্রসঙ্গে উ থাং তুন বলেন, তারা ‘ন্যাশনাল ভেরিফিকেশন সিস্টেম’ চালু করতে চান। মিয়ানমার থেকে আসা নেশাদ্রব্য ইয়াবার প্রভাবে বাংলাদেশের তরুণদের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার প্রসঙ্গেও আলোচনায় আসে বলে প্রেস সচিব জানান। প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে ইয়াবা চোরাচালানের বিষয়টি তুলে ধরে এ বিষয়ে মিয়ানমার সরকারের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।

মিয়ানমারের নিরাপত্তা উপদেষ্টা এ বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে বলেন, তার সরকার মাদক পাচার বন্ধে ইতোমধ্যে পদক্ষেপ নিয়েছে। উ থাং তুন বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা করেন এবং বলেন, তারা দুই দেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতা চান। এ প্রসঙ্গে দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে যোগাযোগ এবং নিরাপত্তার বিষয়ে তথ্য বিনিময়ের কথা তিনি তুলে ধরেন। পাশাপাশি বাংলাদেশে গ্যাস বিক্রির ব্যাপারেও আলোচনা হতে পারে বলে মন্তব্য করেন।

প্রেস সচিব জানান, দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশের মত করে আশ্রয়কেন্দ্র বানানোরও আগ্রহ দেখিয়েছেন মিয়ানমারের নিরাপত্তা উপদেষ্টা। মিয়ানমারের নিরাপত্তা উপদেষ্টার পর আন্তর্জাতিক অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সির মহাপরিচালক ইয়ুকিয়া আমানো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময় মুখ্য সচিব কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সচিব সুরাইয়া বেগম উপস্থিত ছিলেন।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn