অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ মাঠে গড়াতে বাকি আর তিনমাস। ২০১৮ সালের জানুয়ারি/ ফেব্রুয়ারিতে নিউজিল্যান্ডে বসবে এবারের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের আসর। এরই মধ্যে সেখানে অংশ নিতে অনুশীলন শুরু করেছে বাংলাদেশ যুব দল। ২০১৬ তে বাংলাদেশের মাটিতে এ আসরে মেহেদী হাসান মিরাজের দল প্রথমবারের মতো সেমিফাইনাল খেলেছিল। তাই এবার দলের তরুণ দলটির ওপরও  প্রত্যাশার কমতি নেই। তবে নিউজিল্যান্ডের কঠিন কন্ডিশনে আসরটি হবে বলে কিছুটা শঙ্কাও আছে।তাই কোনোদিক থেকেই যেন দলের প্রস্তুতিতে কমতি না হয় সেজন্য বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) দলের ব্যাটিং পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে ভারতের জম্মু-কাশ্মীরের ক্রিকেটার মিথুন মানহাসকে। বিশেষ করে সদ্য আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৩-১ এ সিরিজ হারে বাংলাদেশ দল। তারপর থেকেই নড়েচড়ে বসে বিসিবি। গতকাল থেকে মানহাস বাংলাদেশে এসে কাজেও যোগ দিয়েছেন নয়া লক্ষ্য নিয়ে। এরই এক ফাঁকে তিনি বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল নিয়ে নিজের লক্ষ্যের কথা সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘আমি ওদের ব্যাটিংয়ে উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করব। পাশাপাশি ভালো ক্রিকেটার হিসেবে গড়ে তুলতে ওদের মানসিক দক্ষতা বৃদ্ধিতেও সাহায্য করব। আজ যেসব ব্যাটসম্যানেরা এখানে খেলছে আগামীতে আমি ওদের বাংলাদেশ জাতীয় দলে দেখতে চাই। তাছাড়া আমি যদি ওদের আন্তর্জাতিক অঙ্গনের সর্বোচ্চ পর্যায়ে দেখতে পাই, তাহলে আমার চাইতে খুশি বোধ হয় কেউই হবে না।’

ব্যাটিং পরামর্শক হিসেবে মিথুনের সঙ্গে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের চুক্তি ২০১৯ সাল পর্যন্ত। তবে বিশ্বকাপের বাকি মাত্র তিনমাস। এত অল্প সময়ে যুব বিশ্বকাপের জন্য গড়ে তোলা কতটা চ্যালেঞ্জিং? জবাবে মিথুন বলেন, ‘দেখুন, আপনি যখন লড়াইয়ে নামবেন তখন কোনো কিছুই হালকাভাবে নেয়া ঠিক হবে না। কেননা মাঠের কাজটি কিন্তু সবসময়ই কঠিন। যদিও আমরা নিয়মিতই ম্যাচের মধ্যে থাকব। তাছাড়া উন্নতি হলো একটি চলমান প্রক্রিয়া।’ শুধু ব্যাটিং দক্ষতা বৃদ্ধিই নয়, বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের ব্যাটসম্যানদের মানসিক দক্ষতা বাড়ানো নিয়ে কাজ করতে চান ভারতের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে দারুণ পারফরম্যান্স করা এ ব্যাটিং অল রাউন্ডার।
ভারতের জম্মু কাশ্মীরের পাওয়ার হাউস খ্যাত এই ক্রিকেটার ঘরোয়া ক্রিকেটে ছিলেন নিয়মিত পারফর্মার। ২০১৬ তেই তিনি বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের আসর ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লীগে মোহামেডানের হয়ে লিস্ট ‘এ’ ম্যাচ খেলে গেছেন। তাই বাংলাদেশ সম্পর্কে তাই তার ধারণাও আছে বেশ। জাতীয় দলে খেলার সুযোগ না পেলেও ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটে দারুণ পারফরম্যান্স করেছে তিনি। প্রথম শ্রেণিতে ১৫৭ ম্যাচে, ২৭ সেঞ্চুরি, ৪৯টি হাফ সেঞ্চুরিতে ৪৫.৮২ গড়ে রান করেছেন ৯৭১৪। লিস্ট এ ক্রিকেটে ১৩০ ম্যাচে ৪৫.৮৪ গড়ে, ৫ সেঞ্চুরি, ২৬ ফিফটিতে রান করেছেন ৪১২৬। তবে তার ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি পারফরম্যান্স ততটা আহামরি নয়। ৯১ ম্যাচে হাঁকিয়েছেন মাত্র একটি হাফ সেঞ্চুরি। আর বল হাতে, প্রথম শ্রেণিতে ৪০, লিস্ট এ ২৫ ও টি টোয়েন্টিতে ৫টি উইকেটে পেয়েছেন এই অফব্রেকার। ১৯৯৭ সালে তার প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট ক্যারিয়ার শুরু হয়। শেষ করেন গেল বছর। ৩৮ বছর বয়সেই শুরু করেছেন কোচিং ক্যারিয়ার। জাতীয় দলে খেলতে না পারলে ছিলেন ভারতের অনূর্ধ্ব-১৯ ও ‘এ’ দলে। তাই এ দীর্ঘ অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের তরুণদের উপকারে আসবে বলেই তিনি বিশ্বাস করেন।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn