অনৈতিক কাজের জন্য বৃটেনে শীর্ষ সম্মানের অধিকার বা পুরস্কারপ্রাপ্ত ১১ ব্যক্তির পুরস্কার কেড়ে নেয়া হচ্ছে। এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে লন্ডনের ‘অনারস ফরফিইটিউর কমিটি’। এ সংস্থাটি সরকারের সিনিয়র প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও আইনজীবীদের নিয়ে গঠিত। আধুনিক সময়ে সম্মানজনক পুরস্কার কেড়ে নেয়ার একটি একক ঘটনা এটাই। যাদের পুরস্কার কেড়ে নেয়া হচ্ছে তার মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের সাবেক একজন সহকর্মী রয়েছেন। তাকে দেয়া হয়েছিল অফিসার অব দ্য মোস্ট এক্সিলেন্ট অর্ডার অব দ্য বৃটিশ এম্পায়ার (ওবিই) পুরস্কার। কিন্তু তিনি শিশু পর্নোগ্রাফিতে অভিযুক্ত হয়েছেন। তাই তার পুরস্কার কেড়ে নেয়া হচ্ছে। এ ছাড়া রয়েছেন বাকিংহাম রাজপ্রাসাদে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করে দেয়ার জন্য রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের একজন সহকর্মীর বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ। এ খবর দিয়ে অনলাইন ডেইলি মেইল একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। পশু চিকিৎসায় মেডিসিন সেবা খাতে ২০০৭ সালে মেম্বার অব দ্য মোস্ট এক্সিলেন্ট অর্ডার অব দ্য বৃটিশ এম্পায়ার (এমবিই) খেতাব পান ফিলিপ্পা রোডেলে। কিন্তু ২০১৫ সালে পশুর সঙ্গে নৃশংস আচরণের কারণে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। একটি কুকুরের পশ্চাৎদেশে ভেঙে যাওয়ার পরও এর প্রতি ১০ দিন দৃষ্টি না দেয়ার অভিযোগে তাকে জরিমানা করা হয়।  ফিলিপাইনে মিশনারিতে দাতব্য কাজ করার জন্য ২০০৪ সালে এমবিই পদক পান ক্রেইগ বারোস। ১৯৮০র দশকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগের জবাব দিতে তাকে ২০১৫ সালে বৃটেনে ফিরিয়ে নেয়া হয়। দু’জন যুবতীকে তার সঙ্গে ও তার স্ত্রীর সঙ্গে ৫ বছর থাকতে বাধ্য করা হয় বলে অভিযোগ প্রমাণিত হয়। তিনি দাবি করেন, এ কাজটি করেছিল তার স্ত্রী, যার সঙ্গে পরে তার বিচ্ছেদ হয়ে যায়। ১৯৯২ সালে রাজনীতিতে অবদান রাখার কারণে ওবিই পদক দেয়া হয় প্যাট্রিক রোককে। তিনি কনজার্ভেটিভ পার্টির একজন কর্মী। ১৯৭০ এর দশক থেকে তিনি পার্লামেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। ২০১১ সালে তাকে ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে ডেপুটি ডাইরেক্টর অব পলিসি হিসেবে দায়িত্ব দেন তখনকার প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। ২০১৪ সালে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে। বলা হয়, তিনি শিশুদের নগ্ন ছবি তৈরি করেন। গত বছর জুনে তাকে এ অভিযোগে শর্তসাপেক্ষে দু’বছরের জন্য ছেড়ে দেয়া হয়েছে। বৃটেনে শীর্ষ সম্মানের স্থানে থাকা ব্যক্তিদের এমন অবস্থা ও তাদের পদক কেড়ে নেয়ায় সংশ্লিষ্টদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। লেবার দলের বর্ষীয়ান এমপি পল ফ্লিন শনিবার রাতে এ সিস্টেমটাকে পুরোপুরি ‘ডিজঅনার’ বা অসম্মানের বলে আখ্যায়িত করেছেন। ওদিকে ৫৭ কোটি ১০ লাখ পাউন্ডের পেনশন খেলাপি থাকা সত্ত্বেও ডিপার্টমেন্ট স্টোর চেইন বিএইচএস বিক্রি করে দেয়ার পর ধনকুবের স্যার ফিলিপ গ্রিনের নাইট উপাধি কেড়ে নেয়ার দাবি জোরালো হয়। কিন্তু সরকার এমন দাবি মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায়।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn