শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল থেকে দুই ছাত্রলীগের নেতাকে বের করে দেয়া হয়েছে। ওই দুই ছাত্রলীগ নেতা হলেন স্থগিত কমিটির সহ-সভাপতি সৈয়দ জুয়েম এবং সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম। সূত্র জানায়, মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ার কারনে একাধিক মামলার আসামি সৈয়দ জুয়েমকে সোমবার বিকেলে এবং দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ডাইনিং-এ ফাও খাওয়াসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের জড়িত থাকার অভিযোগে নজরুল ইসলামকে গভীর রাতে বের করে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির চেষ্টায় সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগ রয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, নজরুলের বিতর্কিত কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ হয়ে জুনিয়ররা ক্ষিপ্ত হয়ে মারতে গেলে সিনিয়র নেতৃবৃন্দ এসে ঘটনা নিবৃত্ত করার চেষ্টার এক পর্যায়ে সোমবার গভীর রাতে তাকে হল ছেড়ে পালাতে দেখা গেছে। শাখা ছাত্রলীগের স্থগিত হওয়া কমিটির সহ-সভাপতি মনিরুজ্জামান মনির নজরুলের চক্রান্তেই ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি হয়েছে বলে অভিযোগ করে বলেন, এই নজরুলই ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের অনুষ্ঠিত ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির মূল হোতা।

উল্লেখিত ভর্তি জালিয়াতির চেষ্টাকালে শাবির খাদ্য প্রকৌশল ও চা প্রযুক্তি বিভাগের আটক শিক্ষার্থী আল আমিনকে বিভিন্নভাবে তদবির করে ছাড়িয়ে আনার চেষ্টা করেন বলেও বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিলো। এছাড়াও সে টঙে চাঁদাবাজি, বহিরাগতদের কাছ থেকে টাকা আদায়, ডাইনিং এ ফাও খাওয়াসহ বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত বলে অভিযোগ করেন আরো বেশ ক’জন সিনিয়র ছাত্রলীগ নেতা। আবাসিক হলে আয়েশী জীবনযাপন করা এই নেতা একাই শাহপরান হলের এ বক্লের ২০৭ নম্বর রুম অবৈধভাবে দখল করে থাকত। তার রুমে অবৈধ ডিস লাইন সংযোগসহ ব্যক্তিগত টেলিভিশন আছে।

শাহপরান হল সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে আবাসিক হলে তার কোন বৈধতা নাই। হলের প্রভোস্ট শাহেদুল হোসাইন কৌশলে বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, আমি বিষয়টি এখনো অফিসিয়ালি জানিনি। নজরুল হলের বৈধ শিক্ষার্থী ছিল কিনা তা জেনে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব। স্থগিত হওয়া শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমরান খান বলেন, এদের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগের অনেক ভিত্তিতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে হল থেকে বের করে দিয়েছে। আমরা বিষয়টি পর্যালোচনা করে পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সৈয়দ জুমেয় বলেন, আমাকে হল থেকে বের করে দেয়া হয় নি। পরীক্ষার জন্য বাহিরে আছি। তবে নজরুল ইসলাম বলেন, আমি ঢাকা থেকে এসে নিজ রুমে বিশ্রাম নেই, তখন বড় ভায়েরা এসে বলে হলের বাহিরে থাকার জন্য। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভর্তি (হলে) ছিলাম, পুনঃভর্তিটা করি নাই মনে হয়। প্রসঙ্গত, গত ৮ এপ্রিল এক বহিরাগত ছাত্রীকে কয়েকজন ছাত্রলীগকর্মী কর্তৃক শ্লীলতাহানীর অভিযোগ উঠলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn