বার্তা ডেক্সঃঃমেট্রোরেলের স্থাপনার জন্য দেশের ঐতিহ্যবাহী কমলাপুর রেলস্টেশন অন্যত্র সরানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। এই প্রস্তাবে রাজি হয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমতি সাপেক্ষে নেওয়া হবে বলে জানা গেছে। আজ বুধবার রেলের মহাপরিচালক মো. শামসুজ্জামান বিষয়টি জানিয়েছেন। এর আগে মঙ্গলবার রেল ভবনে এক বৈঠকে এ আলোচনা হয়। বৈঠকে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাতবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান উপস্থিত ছিলেন। এ বিষয়ে কারিগরি দিক তুলে ধরে জাপানি প্রতিষ্ঠান কাজিমা করপোরেশনের নেতৃত্বে একটি সাবওয়ার্কিং গ্রুপ। রেলের মহাপরিচালক বলেন, ‘কমলাপুর স্টেশন ঘিরে মাল্টিমোডাল হাব গড়ে তোলা হবে, যা শাহজাহানপুরসহ আশপাশের রেলের জায়গাজুড়ে বিস্তৃত হবে। এই প্রকল্পের আওতায় বিদ্যমান কমলাপুর রেলস্টেশনের আদলেই নতুন স্টেশন নির্মাণ করা হবে। পাঁচ বছরের মধ্যেই কাজ শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে। বাস্তবায়ন শেষ হতে ১০ বছর লাগতে পারে।

মহাপরিচালক জানান, মেট্রোরেলের কারণে কমলাপুর স্টেশন আড়ালে পড়ে গেলে এর সৌন্দর্য আর থাকবে না। তাই সরিয়ে নেওয়াই উত্তম বিকল্প। রেল সূত্রে জানা গেছে, নতুন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য কমলাপুর স্টেশনটি ভেঙে বর্তমান জায়গা থেকে ১৩০ মিটার উত্তরে নতুন করে তৈরি করতে হবে। যদি বিদ্যমান পরিকল্পনাটি বাস্তবায়িত হয় তাহলে স্টেশনটি ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট-৬-এর কাঠামো দিয়ে পুরোপুরি ঢেকে যাবে। বর্তমান পরিকল্পনাটি যদি সংশোধনও করা হয় তারপরও স্টেশনের একটি অংশ ঢাকা পড়ে যাবে, তাই স্টেশন অন্যত্র বানানো ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।

যদিও এর আগে রেল কর্তৃপক্ষের দাবি ছিল, মেট্রোরেল কমলাপুর স্টেশনের সৌন্দর্যহানি ঘটাতে পারে বলে রুট পরিবর্তন করা হোক। কিন্তু মেট্রোরেলের বাস্তবায়নকারী সংস্থা ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) রুট পরিবর্তন করতে রাজি ছিল না। তবে শেষ পর্যন্ত কাজিমা করপোরেশনের নকশা ধরে কমলাপুর স্টেশনটিই ১৩০ মিটার উত্তরে সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে রেল কর্তৃপক্ষ রাজি হয়েছে। ছয় দশকেরও বেশি পুরোনো কমলাপুর স্টেশনকে রেলের ঐতিহ্যবাহী ভবন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এর সঙ্গে সংস্থাটির আবেগ জড়িয়ে আছে। তাই মেট্রোরেলের রুট পরিবর্তনেই বেশি জোর দিয়েছিল রেল বিভাগ। তবে বিকল্প করা হলে তা ব্যয়বহুল বলে স্টেশনটি সরিয়ে একই ধরনের ভবন তৈরির বিকল্পে সায় দিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। এতে স্টেশনের ভেতরে থাকা রেললাইনও সরাতে হবে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn