শহীদনুর আহমেদ :: অব্যাহতা ভারী বর্ষণ আর পাহাড়ী ঢলে সুরমা নদীর পানি বিপদ সীমার ৬৮ সেন্টিমিটারের উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আস্মিক বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েগেছে সুনামগঞ্জ পৌর শহর, বিশ্বম্ভরপুর, দোয়ারাবাজার, ছাতক, তাহিরপুরের উপজেলার নিম্নাঞ্চল। এছাড়াও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ, জামালগঞ্জ, জগন্নাথপুর, ধর্মপাশা, দিরাই, শাল্লা উপজেলার নিম্নাঞ্চলে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে এই উপজেলাগুলো বন্যার কবলে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন স্থানীয়রা।  সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘন্টা সুনামগঞ্জে বৃষ্টি হয়েছে ৪১৫ মিলিমিটার । অব্যাহত ভারী বর্ষন ও পাহাড়ী ঢলে নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বর্ষায় সুরমা নদীর পানি বিপদ সীমা ৭.২০ সেন্টিমিটার হলেও শুক্রবার দুপুর ১২ পর্যন্ত নদীর পানি প্রভাহিত হচ্ছে ৭.৮৮ সেন্টিমিয়ার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃষ্টিপাতে পরিমাণ আরো বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস সতর্কীকরন কেন্দ্র। ফলে নদীর পানি আরো বৃদ্ধি পেয়ে সৃষ্ট বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি পরিমাণ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের। এদিকে বন্যায় ক্ষয়ক্ষয়তি তালিকা অনুযায়ি ত্রাণ সামগ্রী পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ পুনবার্সন কর্মতকতা ফরিদুল হক।

শুক্রবার সরে জমিনে সুনামগঞ্জ পৌর শহর ও সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বন্যায় প্লাবিত হয়েগেছে সদর উপজেলার কুরবান নগর ইউনিয়নের দারারগাঁও, হালুয়ারঘাট, সুরমা ও জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের নিম্নাঞ্চল । সুনামগঞ্জ পৌর শহরের নবীনগর, বড়পাড়া, উকিলপাড়া, সাববাড়ীঘাট জেল রোডের এলাকার বিভিন্ন ঘরবাড়ি, দোকানপাঠ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্লাবিত হয়েছে। এছাড়াও ড্রেনের সমস্যা পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় জলাবদ্ধতার কবলে পানি বন্ধি রয়েছেন শহরের আরফিনগর, সোমপাড়া, রায়পাড়া, মুক্তারপাড়া, নতুন পাড়া, বখত পয়েন্ট, ষোলঘর পয়েন্ট , বড়পাড়া, কাজির পয়েন্ট, পশ্চিম বাজার, লারী হাটি, মরল আটি, জেলরোডসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ। অনেক বাসাবাড়ী, দোকাপাঠে পানি উঠতে দেখা গেছে। বন্ধ রান্নাঘরের চুলা ও বিদ্যুৎ সংযোগ। এভাবে আরো একদুদিন চলতে থাকলে মানুষের দুর্ভোগ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়তে পারে বলে জানান ভোক্তভোগীরা।  আরফিন নগর এলাকার বাসিন্দা সুজন মাহমুদ বলেন, সকাল থেকে পানি বন্ধি অবস্থায় আছি। বাসার প্রতিটি রুমে পানি ঢুকেছে। সকাল রান্না হয়নি। বাহির থেকে নাস্তা কিনে এনেছি। সাহাববাড়ী ঘাট এলাকার সাহেদ নামে আরেক জন বলেন, নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে অনেকের বাসাবাড়ীতে পানি ঢুকেছে। সাহাববাড়ী ঘাট রাস্তায় হাটু-উরু পানি । এভাবে আরো একদিন চলতে থাকলে মানুষের দুর্ভোগ বাড়বে ।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী আবু বক্কর সিদ্দিকী বলেন, সুরমা নদীর পানি ৬৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃষ্টিপাতের পরিমান আরো বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস সতর্কীকরণ কেন্দ্র।  ত্রান ও দুর্যোগ পুনবার্সন কর্মকর্তা ফরিদুল হক বলেন, বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণের খবর এখনো পাইনি। তবে ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরীর জন্যে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের নির্দেশানা দেয়া হয়েছে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn