সুনামগঞ্জ  :: সুনামগঞ্জ জেলার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সরকারি হাসপাতালে দামি ওষুধ পাননা রোগীরা। প্যারাসিটামল, হিস্টাসিন, ওমিপ্রাজলসহ কম দামের ওষুধই পান রোগীরা। সরকার দামি অ্যান্টিবায়োটিক, ইনজেকশন, সিরাপ দিলেও সাধারণ রোগীরা সেসব ওষুধ পাননা।  এই ওষুধ কোথায় যায় এ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে সুধীজনের। দামি ওষুধ হাসপাতালে থাকার পরও এগুলো কিনতে হয় বাইরের ফার্মেসি থেকে। এই ফার্মেসিগুলোর বেশিরভাগই আবার হাসপাতালের চাকুরেদের। সরকারি হাসপাতালে ওষুধসহ সকল প্রকার মেডিসিন পাওয়ার কথা থাকলেও বাইরে থেকে কিনে আনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রোগীর স্বজনরা। রবিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের অন্তঃবিভাগ ও বহিঃবিভাগের প্রাপ্ত ওষুধের তালিকায় ৭৮ প্রকারে ওষুধের মধ্যে মাত্র ২৫ প্রকারের ওষুধের মজুদ রয়েছে বলা হয়েছে। কাগজে-কলমে ওই পরিমাণ ওষুধের কথা বলা হলেও বাস্তবে প্যারাসিটামল, এন্টাসিড, হিস্টাসিন, ওমিপ্রাজলই পাচ্ছেন বহির্বিভাগের রোগীরা। দামি ইনজেকশন নিউপেনাম, অ্যান্টিবায়োটিক সেফরক্সিমসহ দামি ওষুধগুলো বাইরে থেকেই কিনতে হচ্ছে।

হাসপাতালের অন্তবিভাগের পুরুষ ওয়ার্ড, শিশু ওয়ার্ড ও লেবার ওয়ার্ডে রোগীদের সঙ্গে কথা বলে নানা অভিযোগ পাওয়া যায়। রোগীরা জানান, সকাল-বিকেলে দুয়েকবার দুয়েকটা বড়ি খাওয়ালেও ইনজেকশন, সুতা, স্যাভলনসহ সকল প্রকারের অ্যান্টিবায়োটিক ও বিভিন্ন মেডিসিন বাইরের ফার্মেসি থেকে কিনতে হচ্ছে। পুরুষ ওয়ার্ডে ছেলে অন্তরকে নিয়ে ভর্তি আছেন সদর উপজেলার শিল্পী রাণী দাস। শিল্পী রাণী বলেন, দুই দিন ধরে হাসপাতালে আছি। সকাল বিকেলে দুয়েকটা ট্যাবলেট ছাড়া সকল ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হয়। আজও ৪২০ টাকার ওষুধ কিনেছি। শিশু ওয়ার্ডে নিউমোনিয়া আক্রান্ত সন্তানকে নিয়ে ৬ দিন ধরে আছেন উপজেলার কাঠইর ইউনিয়নের গোলাম হোসেন। তিনি বলেন, সকল দামি দামি ওষুধ, ইনজেকশন বাইরের ফার্মেসি থেকে কিনতে হচ্ছে। লেবার ওয়ার্ডে ছেলের বউ ও সিজারের নবজাতককে নিয়ে ৪ দিন ধরে রয়েছেন দিরাই উপজেলার রূপালী রাণী। তিনি বলেন, সকাল-বিকাল দুয়েকটা বড়ি ছাড়া কিছুই পাই না। সকল ওষুধ বাইরে থেকে কিনতে হয় আমাদের। আজও ৫১০টাকার ওষুধ কিনতে হয়েছে। এদিকে জরুরি বিভাগে রোগীর স্বজনরা জানান, বেশির ভাগ মেডিসিনই বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। ইনজেকশনের সরঞ্জামসহ সবকিছুই বাইরে থেকে কিনতে হয়।  তবে বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. আশুতোষ দাস জানান, হাসপাতালে পর্যাপ্ত ওষুধ মজুদ রয়েছে। প্রয়োজন অনুযায়ী সব ওষুধই রোগীদের দেওয়া হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে কোন অনিয়ম হচ্ছে না।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn