আশিস রহমান (ফেসবুক থেকে সংগৃহীত) হুমকি ধামকি আমি ভয় পাইনা। সাংবাদিকতায় অসাধু উপায়ে ব্যক্তি স্বার্থের উর্ধ্বে সবসময় নির্মোহ ভাবে পেশাদারিত্বকে গুরুত্ব দেওয়ার চেষ্টা করেছি। দীর্ঘদিন ধরে সরকারি লিজ ছাড়াই সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার খাসিয়ামারা নদীতে নদীর তীর কেটে পরিবেশ বিরোধী বালু ও পাথর উত্তোলন করে আসছিল একটি সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট। নদীর তীর কেটে বালু উত্তোলন করায় শুরু থেকেই নদীর দুতীরের বাসিন্দারা বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে তীব্র আপত্তি জানিয়ে আসছিল। প্রশাসনকে লিখিতভাবে অভিযোগও করেছিল। এলাকাবাসীর স্বার্থে গত ১৩ আগস্ট খাসিয়ামারা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে আমি একটি নিউজ করেছিলাম। নিউজটি প্রশাসনসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নজর কাড়ে। এরই ফলশ্রুতিতে গত ১৭ আগস্ট দোয়ারাবাজার থানা পুলিশের একটি টিম খাসিয়ামারা নদীতে মাইকিং করে বালু ও পাথর উত্তোলন এবং এসব অবৈধ বালু পাথর পরিবাহী স্টিলবডি, ট্রলার, নৌকা চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। স্থানীয় বাসিন্দারাও এদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়। প্রশাসন ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় কিছুদিনের জন্য বালু ও পাথর উত্তোলন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। স্বস্তি ফিরে আসে খাসিয়ামারা নদীর দুপারের বাসিন্দাদের মাঝে। কিন্তু এতে কপাল পুড়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারী ও তাদের মদদদাতাদের। বাড়া ভাতে ছাই দেওয়ায় এদের টার্গেটে পরিণত হই আমি।
জানতে পেরেছি সম্প্রতি খাসিয়ামারা নদীতে গভীর রাতের আঁধারে আবারো অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীরা সক্রিয় হয়। গভীর রাতে নদীর তীর কেটে বালু উত্তোলন করতে আসলে স্থানীয় বাসিন্দারা বাধা দেয়। কে বা কারা বাধা দিয়েছে তাও অজ্ঞাত। অবৈধ বালু উত্তোলনের মদদদাতা সিন্ডিকেটের ইশারায় পরেরদিন রবার ড্যাম থেকে সুনামগঞ্জ অভিমুখী যাত্রীবাহী নৌকা সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার হরিনাপাটিতে (সুরমা নদীতে) আটক করে ওই এলাকার কয়েকজন মানুষ। তারা নৌকার কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চায় নৌকায় আমার নিজ গ্রাম আলীপুরের বাসিন্দা কেউ আছে কিনা ! অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে বাধা দেওয়ায় আমার গ্রাম আলীপুরের যেকেউ এদিক দিয়ে আসা যাওয়া করলে আটক করা হবে বলেও শাসানো হয় জানতে পেরেছি। সম্প্রতি আমার গ্রামের কয়েকটি বানিজ্যিক মাছের নৌকাকেও আটক করে পরে আবার ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অনেকেই। একেইত প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে রাতের আঁধারে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন (চুরি করা) অপরদিকে এই অবৈধ কাজে বাধা দেওয়ায় উল্টো শাসানি! এযেন মগের মু্ল্লুক!
নিউজ করায় আমার সাথে পেরে উঠতে না পেরে স্থানীয় অসাধু সিন্ডিকেটের ইশারায় নৌপথে সুনামগঞ্জে যাতায়াতকারি আমার এলাকার মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে, পরোক্ষভাবে আমাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। অবশ্য এখনো আমি সরাস‌রি কোনোধরনের হুমকি ধামকি পাইনি। তবে আমি বিষয়টি হরিনাপাটি ও আমার এলাকার জনপ্রতিনিধিসহ একাধিক গোয়েন্দা সংস্থাকে অবহিত করেছি। যেকোনো সময় আমি, আমার পরিবারের সদস্যসহ আমার এলাকার লোকজন হয়রানির শিকার হতে পারে। শিঘ্রই আমি আইনের আশ্রয় নেব। সবার জ্ঞাতার্থে বিষয়টি আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করলাম।
আশিস রহমান
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
দৈনিক গণকণ্ঠ
 
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn