নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় একাধিক শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির অভিযোগে একটি মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষককে আটক করেছে র‌্যাব।  বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে মাহমুদপুর বাইতুল হুদা ক্যাডেট মাদ্রাসায় অভিযান চালিয়ে এর প্রধান শিক্ষক মাওলানা আল-আামিনকে আটক করে র‌্যাব। র‌্যাবের সিও কাজী শামসের উদ্দিন চৌধুরী এ কথা জানান। তিনি আরও বলেন, ২৭ জুন সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি কান্দাপাড়া অক্সফোর্ড হাইস্কুলের শিক্ষক আরিফুল ইসলামকে শিক্ষার্থীদের ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর বাইতুল হুদা ক্যাডেট মাদ্রাসার এক শিশু শিক্ষার্থী তার মাকে জানায়, ওই স্কুলের শিক্ষকের তো বিচার হলো, কিন্তু তাদের প্রধান শিক্ষকের তো বিচার হলো না। ওই অভিভাবক বিষয়টি র‌্যাবকে জানায়। পরে র‌্যাব অভিযান চালিয়ে আল-আমিনকে আটক করে।

কাজী শামসের উদ্দিন চৌধুরী জানান, এখন পর্যন্ত আল-আমিনের নির্যাতনের শিকার ১২ শিক্ষার্থীর খোঁজ পাওয়া গেছে। আল-আমিনের স্ত্রী পর্দানশীল। তিনি মাদ্রাসার পেছনের ঘরে থাকেন। এই সুযোগে আল-আমিন প্রাইভেট পড়ানোর কথা বলে, নানা কৌশল অবলম্বন করে শিক্ষার্থীদের ধর্ষণ ও যৌন হেনস্তা করে আসছিল। শিশুদের যৌন হেনস্তার অনেক প্রমাণ তার কম্পিউটারে পাওয়া গেছে। সেই কম্পিউটারও র‌্যাব জব্দ করেছে।

২০১৫ সালে ফতুল্লা থানার ভুইঘরের মাহমুদপুর পাকা রাস্তা এলাকায় বাইতুল হুদা ক্যাডেট মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন আল আমিন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়ানোর সময় নানাভাবে ব্ল্যাকমেইল করে, আবার কোনও শিক্ষার্থীর ছবি পর্নোগ্রাফি নায়িকার মাথা কেটে বসিয়ে দিয়ে তা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে এবং বাবা-মাকে দেখিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ ও যৌন হেনস্তা করে আসছিল। তিনি শিশুশ্রেণি থেকে পঞ্চশ শ্রেণির একাধিক ছাত্রীকে এভাবে হেনস্ত করে আসছিল বলে জানায় র‌্যাব।এদিকে আল-আমিনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।

এলাকাবাসী বলেন, তাকে কঠিন শাস্তি দেওয়া হোক, যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ এমন অপকর্ম করার সাহস না পায়। র‌্যাবের সহকারী পরিচালক পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিন জানান, আটক আল-আমিনের বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। কোনও শিক্ষার্থীর অভিভাবক চাইলে ফতুল্লা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করতে পারবেন। উল্লেখ্য, ২৭ জুন বাইতুল হুদা ক্যাডেট মাদ্রাসা থেকে মাত্র ২ হাজার গজ দূরে অক্সফোর্ড হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক আরিফুল ইসলামকে ২০ শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। ওই শিক্ষককে প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে অক্সফোর্ড স্কুলের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলামকেও গ্রেপ্তার করা হয়।

 

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn