অস্বাভাবিক মৃত্যুর তিন মাস পর গৃহবধূ ইফফেত আরার (২৬) লাশ কবর থেকে তোলা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে বৃহস্পতিবার সকালে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে তার লাশ তোলে পুলিশ। এরপর ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়। নিহতের স্বজনরা জানান, দেড় বছর আগে উপজেলার হামিরকুৎসা ইউনিয়নের রায়াপুর গ্রামের ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি এরশাদের সঙ্গে ইফফেতের বিয়ে হয়। কয়েক দফায় সাত লাখ টাকা যৌতুক দেয়া হয়। এরপর আরও যৌতুকের জন্য ইফফেতকে চাপ দিয়ে আসছিলেন তার স্বামী। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, যৌতুক দিতে অস্বীকৃতি জানালে গত ১০ এপ্রিল রাতে এরশাদ ও তার পরিবারের সদস্যরা ইফফেতকে পিটিয়ে আহত করেন। এতে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তার ভাই মনিরুজ্জামানকে খবর দেয়া হয়।
ওই দিন রাতেই ইফফেতকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হলে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১১ এপ্রিল ভোরে ইফফেত মারা যান। কিন্তু পুলিশকে না জানিয়ে লাশ দাফন করা হয়। এদিকে, এ ঘটনার প্রায় দুই মাস পর গত ১৯ জুন তার ভাই মনিরুজ্জামান বাদী হয়ে রাজশাহী চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এরশাদ আলী, তার ভাই জাহিদ হোসেনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ জাহিদ হোসেন নামের এজাহারভুক্ত এক আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।
মনিরুজ্জামান বলেন, বোনকে এভাবে হত্যা করা হয়েছে, তারা আগে বিষয়টি বুঝতে পারেননি। তিনি আরও বলেন, তার বোন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন। চাকরিতে যোগদানের আগেই হত্যার শিকার হয়েছেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বাগমারা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সৌরভ কুমার চন্দ্র বলেন, রোববার আদালত থেকে লাশ উত্তোলনের অনুমতি পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার সকাল নয়টার দিকে প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট বাগমারার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আলমগীর হোসেনের উপস্থিতিতে কবর থেকে লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn