সানোয়ার হাসান সুনু, জগন্নাথপুর :: সুনামগঞ্জের প্রবাসী অধ্যুষিত জগন্নাথপুর উপজেলায় বিগত বছরের মত এবার ঈদ বাজারে জমজমাট ভাব নেই এর কারণ হিসাবে ঈদ বাজারে প্রভাব পড়েছে, এবার উপজেলার সবকটি হাওর অকাল বন্যায় তলিয়ে যাওয়াতে কৃষকরা ধান গোলায় তুলতে পারেন নি। স্থানীয় কৃষক পরিবারে আর্থিক সংকট চলছে। অন্যদিকে বর্গাচাষী বা নিম্ন আয়ের মানুষেরা রয়েছেন খুবই অভাবে, তারা দু’বেলা অন্ন জোগাতে যেখানে ব্যস্ত সেখানে ঈদের নতুন জামা কাপড় কেনা-কাটা তাদের কাছে বিলাসিতার মতো এ ছাড়া প্রতি বছর এ অঞ্চলের প্রবাসিরা বিশেষ করে লন্ডন প্রবাসীরা তাদের আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া প্রতিবেশীদের টাকা দিয়ে সাহায্য সহযোগিতা করতেন। কিন্তু পাউন্ডের দরপতন সেখানকার সরকারি সুযোগ সুবিধা একেবারে কমিয়ে ফেলা, অন্যদিকে লন্ডনে সাম্প্রতিক বোমাবাজি শেতাঙ্গ ভ্যান চালক কর্তৃক বাংলাদেশী মুসলমানদের হতাহতের ঘটনাসহ বাংলাদেশী মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন সেখানে রয়েছেন খুবই আতংকের মধ্যে। সেখানকার প্রবাসীদের মন ভাল নেই।
এ ব্যাপারে প্রবাসী সাংবাদিক মোঃ তৌফিক আলী মিনারের সাথে মুঠোফোনে আলাপ হলে তিনি জানান, যুক্তরাজ্যের সার্বিক অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছে। বর্নবাদীদের হামলার স্বীকার হচ্ছেন বাংলাদেশীরা। মুসলমান কমিউনিটির লোকেরা আতঙ্কের মধ্যে আছেন। আগের মত আয়-রোজগার নেই। পাউন্টের দামও একেবারে কম। বিভিন্ন ধরনের ভাতা একেবারে কমিয়ে ফেলা হয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে এর একটি প্রভাব পড়েছে।

লন্ডন প্রবাসী কমিউনিটি নেতা সুনামগঞ্জ উন্নয়ন সংস্থার সাধারণ  সম্পাদক জুবায়ের আহমদ হামজার সাথে আলাপ হলে তিনি বলেন, লন্ডন আর আগের লন্ডন নেই। শান্তির দেশে অশান্তির পায়তারা করছে একটি কু-চক্রি মহল, দলমত নির্বিশেষে বাংলাদেশী কমিউনিটিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশের জন্য কাজ করতে হবে। গরীব অসহায়  মানুষের  পাশে  দাড়াঁতে হবে। এদিকে প্রতি বছর ১৫ রমজানের পর থেকে জগন্নাথপুর শহরে ঈদ বাজার জমতে শুরু করে, ২০ রমজানের পর ক্রেতাদের উপচেপড়া ভীড় থাকে, এবার ২৬ রমজানেও সেই অবস্থা নেই। এ ব্যাপারে বিপনী বিতান নিউ ঝলকের পরিচালক মোঃ কদ্দুছ মিয়া বলেন বিগত দিনে ২০ রমজানের পর উপচে পড়া ভীড় থাকত, মধ্যরাত পর্যন্ত বেচা-কেনা চলত, দোকানে তিল ধারনের টাই ছিল না। কিন্তু এবার সেই চিত্র নেই। ঈদের আর ২/৩ দিন বাকি সামর্থ্যবান লোকেরা নতুন জামা কাপড় কিনছেন। মোটামোটি বেচাকেনা চলছে বলে তিনি জানান।
শহর ঘুরে দেখা গেছে আল-জান্নাত মার্কেট, আব্দুল মতলিব সুপার মার্কেট, মিলেনিয়াম মার্কেট, আল-আরাফাহ মার্কেট, মিনারা মার্কেট, আসিদ উল্লা মার্কেটসহ বিপনী বিতানগুলোতে অন্য বারের মত উপচেপড়া ভীড় নেই। সালমান ফ্যাশনের স্বত্বাধিকারী, সালমান আহমদ বলেন আলহামদুলিল্লাহ আমার দোকানে ভালই বেচা-কেনা হচ্ছে, শেষ মুহুত্বে সামর্থ্যবান ক্রেতাদের ভীড় বাড়ছে। তবে নলুয়ার হাওর পাড়ের কৃষক পরিবারের মধ্যে ঈদ কেনা কাটায় অনেকটা ভাটা পড়েছে। কৃষক ছিদ্দিক আলী বলেন অকাল বন্যায়  হাওড় তলিয়ে যাওয়াতে আমরা ফসল তুলতে পারিনি। ফসল বিক্রি করে কেনা কাটা করতাম, এবার সেই অবস্থা নেই।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn