সুলতান মোহাম্মদ মনসুর।।

মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, হুসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, সামসুল হক, মাওলানা তর্গবাগিশ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গতাজ তাজ উদ্দিন আহমদের নেতৃত্বে ১৯৪৯ সালের আজকের দিনে গঠিত আওয়ামী লীগ কি আজকের আওয়ামী লীগ? প্রতিষ্ঠার পর থেকে রাজনৈতিক সংগ্রাম, যুক্তফ্রন্ট গঠন ও ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে বিজয়সহ বিভিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে ৫০ এর দশকেই পাকিস্তানের প্রধান রাজনৈতিক শক্তি হয়ে ওঠা দলের নীতি, আদর্শের সাথে আজকের আওয়ামীলীগ দুরত্ব কতটুকু? প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি আব্দুল হামিদ খান ভাসানীসহ অনেকেই রাজনৈতিক মতভিন্নতার জন্য দল ছেড়ে গেলেও পিতা মুজিবের ক্যারিশমাটিক নেতৃত্বে
প্রতিষ্ঠার পর থেকেই প্রাদেশিক স্বায়ত্ত্বশাসনের ওপর বিশেষ গুরুত্বসহ ৪২ দফা কর্মসূচি গ্রহণ করে আওয়ামী লীগ। ৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ৫৪ এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন,৬২ এর শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬ এর মুক্তির সনদ নামে অভিহিত ছয়দফা যার ভিত্তিতেই ৭০ এর নির্বাচনে জয়ী আওয়ামী লীগ, কারাবন্দি বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে বঙ্গতাজ তাজ উদ্দিন, সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও জেনারেল আতাউল গনি উসমানীর নেতৃত্বে নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের জন্ম দেওয়া দলের নাম আওয়ামী লীগ।  এই প্রজন্মের জানা উচিৎ ষড়যন্ত্রের কুশীলবরাই স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধুকে প্রভাবিত করে একদলীয় শাসন বাকশাল সৃষ্টি করিয়ে তার হত্যার পথ প্রশস্ত করে দিয়েছিল।

পরবর্তীতে ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা এবং কারাগারে চার জাতীয় নেতাকে হত্যার পর বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্ব প্রতিরোধ যুদ্ধ  সামরিক শাসনের নির্যাতন আর নিপীড়নের মধ্যে জহুরা তাজ উদ্দিন, আব্দুল মালেক উকিল, আব্দুর রাজ্জাক, সালাউদ্দিন ইউসুফ, আমির হুসেন আমু, তোফায়েল আহমদ ও মুস্তফা মহসীন মণ্টুর নেতৃত্বে বেচে থাকা দল এই আওয়ামী লীগ। পরবর্তী পর্যায়ে নেতৃত্বের বিভেদ সৃষ্টি হলে ঐক্যের সার্থে ডঃ কামাল হোসেন, সাজেদা চৌধুরী ও সাবেক ঢাকা সিটি মেয়র হানিফের পরামর্শে ১৯৮১ সালের ১৭ মে জাতিরজনক কন্যা হিসেবে শেখ হাসিনা দলীয় সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এরপর আন্দোলন শুরু হয় সামরিক স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে।

অবশেষে ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। কিন্ত অপ্রিয় হলেও সত্য সেদিন বঙ্গবন্ধুকে চরম কটাক্ষকারী ভ্রান্ত বাম, নাস্তিকবাদী, স্বৈরাচার ও সুবিধাবাদীরাই আজকের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগে ও সরকারের  সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রক্রিয়ার নিয়ামক শক্তি। কাজেই আজকের দিনে  কার্যকর গণতন্ত্র দুঃখী মানুষের মুখে হাসী ফোটানোর জন্যে মুক্তিসংগ্রামের ধারায় স্বাধীনতার সংবিধানের ভিত্তিতে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মানে জাতীয় ঐক্য অপরিহার্য। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, জয় হোক বাংলার জনগণের।

লেখক: সাবেক ডাকুস ভিপি

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn