সুনামগঞ্জে দুই ফজলুর মাঝে রশি টানাটানি কে আসল মুক্তিযোদ্ধা?
জেলা প্রশাসকের কাছে করা আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ঝরঝরিয়া (বর্তমান ঠিকানা সাহেবনগর) গ্রামের বাসিন্দা মৃত মাতবর আলীর ছেলে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান মুক্তিযুদ্ধের পর চাকুরীর জন্য ঢাকায় চলে যান। কিছুদিন শ্রমিক হিসাবে কাজ করার পর ডেমরা থানায় কোনা পাড়ায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ওয়ালটনের নিরাপত্তাকর্মী হিসাবে চাকুরি করেন। চাকুরি করার সময় ঝরঝরিয়া গ্রামের পাশে সাহেবনগরে একটি বাড়ি করেন। মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা লাল মুক্তিবার্তা তালিকা করার সময় সাহেবনগরকে তার গ্রামের বাড়ি দেখানো হয়। লাল মুক্তিবার্তায় তার নম্বর-০৫০২০১০১৩৬।
আবেদনে উল্লেখ করা হয়, ঝরঝরিয়া গ্রামের মৃত মনসুর আলীর ছেলে অমুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান সুনামগঞ্জ শহরে নার্সরির ব্যবসা করতেন। সেই সুবাদে প্রশাসনের সাথে তার অন্তরঙ্গতা ছিল। মাতবর আলীর ছেলে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমানের ভারতীয় মুক্তিযোদ্ধার তালিকার নম্বরটি অমুক্তিযোদ্ধা মনসুর আলীর ছেলে ফজলুর রহমান নিজের দাবি করে তালিকাভূক্ত করেন। তার লাল মুক্তিবার্তা নাম্বার-০৫০২০১০৭৮৯। গত জোট সরকারের আমলে তৎকালীন একজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে ভারতীয় তালিকার পিতার নাম প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমানের বাবার নাম মাতবর আলীর স্থলে মনসুর আলী করার জন্য আবেদন করেন। তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তার যোগসাজশে মাতবর আলীর স্থলে মনসুর আলী করার জন্য সুপারিশ করেন। এর পর থেকে অমুক্তিযোদ্ধা নার্সারি ব্যবসায়ী ফজুলর রহমান মুক্তিযোদ্ধা সম্মানীভাতা গ্রহণ করছেন।
গত মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইকালে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সর্বস্মতিক্রমে অভিযুক্ত ফজলুর রহমানের মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিলের সুপারিশ করা হয়। অভিযুক্ত ফজলুর রহমান জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে স্থানীয় যাচাই-বাছাইয়ের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন এবং প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার ভারতীয় তালিকার ২৪৫৮৮ কে তার বলে দাবি করেছেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ফজলুর রহমান বলেন,‘ আমি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। আমার পিতার নাম নিয়ে একটু সমস্যা ছিল তা ইউএনও সাহেবের মাধ্যমে সংশোধন করা হয়েছে। নির্বাচনের জের ধরে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। নির্বাচনে আমি একটি প্যানেলে ছিলাম, অভিযোগ করেছে আমাদের উল্টো প্যানেলের একজন। আমি সদর ও জেলা কমান্ডারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করেছি। ’ এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল মজিদ বলেন,‘ স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইকালে নার্সারি ব্যবসায়ী ফজলুর রহমানের মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে।’