‘বিবাহিত নেতারা ৭২ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগ কর। নইলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা। ’ বুধবার দেওয়া কেন্দ্রীয় এই নির্দেশনাকে পাত্তাই দিচ্ছেন না চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের বিবাহিত নেতারা। একই সঙ্গে বিভিন্ন ওয়ার্ড, থানা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতারাও কেন্দ্রের নির্দেশ মেনে পদত্যাগ করছেন না। সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের সব মিলে দেড় শতাধিক বিবাহিত নেতা রয়েছেন। পদ ধরে রাখতে তারা তাদের ‘বিবাহিত’ হওয়ার তথ্যটি ধামাচাপা দিয়ে রেখেছেন বলে জানান অনেকেই। ছাত্রলীগের দেড় শতাধিক নেতা বিবাহিত। এদের অনেকে সন্তানের বাবা হয়ে গেছেন। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক আবু তৈয়ব বলেন, কেন্দ্রীয় নির্দেশনা পাওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই পদত্যাগের বিষয়ে জানান দিলেও আনুষ্ঠানিকভাবে কেউ পদত্যাগপত্র এখনো জমা দেননি। তবে কেউ পদত্যাগপত্র জমা দিলে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা মোতাবেক ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান এই নেতা।

নিজের বিয়ের বিষয়টি অস্বীকার করে নগর ছাত্রলীগ সভাপতি ইমরাদ হোসেন ইমু বলেন, ‘গোপনে বিয়ের দরকার কী! আমি বিয়ে করলে বড় আয়োজন করেই করব। আমি নিজে বর্তমান কমিটির কয়েকজনের বিয়ে খেয়েছি। ’ কেন্দ্রীয় নেতাদের দোষারোপ করে উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুদ্দিন বলেন, ‘নিয়মতান্ত্রিকভাবে মেয়াদ শেষ এমন কমিটি ভেঙে দেওয়া, বিবাহিত, অছাত্রসহ নানাবিধ অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকলে কোনো ঘোষণা ছাড়াই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে হবে। কোনো আলটিমেটাম প্রয়োজন নেই। ’

মহানগর ছাত্রলীগ: চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের ২৯১ সদস্যের কমিটি এবং ওয়ার্ড কমিটির অর্ধশতাধিক নেতা বিবাহিত। এর মধ্যে নগর সভাপতি ইমরাদ হোসেন ইমুও বিয়ে করেছেন বলে একাধিক নেতা জানান। এ ছাড়া বিবাহিতদের মধ্যে সহসভাপতি ছয়জন, সম্পাদকমণ্ডলীর তিনজন ও নির্বাহী সদস্য পাঁচজন। পাশাপাশি ৩৫ জন বিয়ে করেছেন গোপনে। তা ছাড়া কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান পাওয়া সদস্যদের মধ্যে ১০ জনসহ নগর কমিটির ৭০ জনের মতো বিবাহিত। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিবাহিতদের মধ্যে নগর ছাত্রলীগ সভাপতি ইমরাদ হোসেন ইমু ছাড়াও সহসভাপতি মিথুন মল্লিক, তালেব আলী, লুত্ফুল এহসান সাহা, আবু মোহাম্মদ আরিফ, ইমতিয়াজ চৌধুরী বাবলা, সরোয়ার উদ্দিন, সৌমেন বড়ুয়া, জাহিদুল হক চৌধুরী ও মঈনুল হাসান চৌধুরী শিমুল বিয়ে করেছেন। যুগ্ম-সম্পাদকের মধ্যে গোলাম সামদানি জনি, সুজন বর্মণ, অমিতাভ চৌধুরী বাবু আর সাংগঠনিক সম্পাদকের মধ্যে শওকত আলী রনি ও হাসমত আলী রাসেল এবং নির্বাহী সদস্যদের মধ্যে সাখাওয়াত পেয়ারুসহ প্রায় অর্ধশত নেতা বিবাহিত।

দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগ: কর্ণফুলী থানা ছাত্রলীগ সভাপতি জসিম উদ্দিন এক কন্যাসন্তানের জনক। সাতকানিয়া থানা ছাত্রলীগ আহ্বায়ক ও পাঁচজন যুগ্ম-আহ্বায়ক বিবাহিত। লোহাগাড়া ছাত্রলীগের আহ্বায়ক দুই সন্তানের জনক। চন্দনাইশের আহ্বায়ক, বোয়ালখালী ও পটিয়া থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বিবাহিত। আনোয়ারা ও বাঁশখালীতে কমিটি না থাকলেও অনেকেই বিবাহিত বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। তারাই নতুন কমিটিতে আসতে লবিং-তদবির করছেন।

উত্তর জেলা ছাত্রলীগ: উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি বি কে লিটন, মাহবুব উল্লাহসহ ১০ জন, যুগ্ম-সম্পাদক ৩ জন, সাংগঠনিক সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন ছাড়াও নির্বাহী কমিটির আরও কয়েকজন এবং থানা ও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের দায়িত্বশীল ৬০ জনের মতো বিবাহিত।

 

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn