২৪শে জুলাই সকাল সাড়ে ১১টা। স্বামী ফারুকুল ইসলাম ঘুমে ছিলেন। এ সময় আমাদের তিন বছরের একমাত্র বাচ্চা  ফাইজা তাবাসসুম রাহার জ্বর জ্বর ভাব ছিল। স্বামী ফারুকুল ইসলামকে ঘুমের মধ্যে বিরক্ত করলে  ফারুকুল রাগান্বিত হয়ে আমাকে গালিগালাজ করে এবং মেয়েকে তার নানীর বাসায় দিয়ে আসতে বলে। আমি রাহাকে তার নানীর কাছে রেখে বাসায় ফিরে এলে ফারুকুল আমাকে দেখে দ্রুত বাসার মালামাল গোছানোর জন্য গালিগালাজ করে। আমি ফারুকুলকে  গালিগালাজ না করতে নিষেধ করলে ফারুকুল আক্রশ  হইয়া আমার চুলের মুঠি ধরে সোফার ফেলে দেয়। এ সময় আমি সোফার পাশে থাকা স্টিলের ট্রে দিয়ে ফারুকুলের মাথায় আঘাত করলে তার প্রচুর রক্তক্ষরণ শুরু হয়। আমি সোফা থেকে উঠে ঘরের বাইরে যাবার সময় সেলাই মেশিন ও আসবাবপত্র ফারুকুলের বুকের উপর ফেলে যাই। কিছুক্ষণ পর ঘরে এসে দেখি তার কোন নড়াচড়া নেই। নিহত ফারুক উপজেলার ৩নং শ্রীমঙ্গল ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামের মৃত ইমাম উদ্দিনের ছেলে। দীর্ঘ ১১ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশের কাছে নিজের স্বামীকে হত্যার এই বর্ণনা দেন স্ত্রী শিরিন আক্তার। এ ঘটনায়  ফারুকুলের মা জয়না বিবি বাদী হয়ে শিরিন আক্তার ও অজ্ঞাতনামা আরো দুই তিন জনকে আসামি করে শ্রীমঙ্গল থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। ওই মামলা শিরিনকে পুলিশ শ্যোন অ্যারেস্ট দেখিয়েছে।  সোমবার দিবাগত রাতে শ্রীমঙ্গল থানার ওসি কে এম নজরুলের দীর্ঘ ১৩ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদে সে পুলিশকে হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে জানায়। ওসি নজরুল বলেন, দীর্ঘসময় জিজ্ঞাসাবাদের পর মঙ্গলবার ভোর সাতটায় শিরিন মুখ খুলে পুরো ঘটনার জবানবন্দি দেয়। তারই স্বীকারোক্তি মতে গতকাল সকালে তাদের সুরভীপাড়া ভাড়াটিয়া বাসা থেকে নাস্তা দেয়ার ট্রেটি উদ্ধার করেছি। তিনি বলেন, প্রথমে ফারুকুলের স্ত্রী জিজ্ঞাসাবাদে বলছে, মাথার উপর থেকে সিলিং ফ্যান ছুটে পড়ে নাকি মাথায় আঘাত লেগে মারা গেছে। তিনি বলেন, ‘নিহতের স্ত্রী শিরিনা বেগমের (২৫) সঙ্গে বিয়ের পর থেকেই নাকি স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি ছিল। এসব নিয়ে স্থানীয়ভাবে একাধিক বিচার সালিশ হয়। তাদের ঔরসে তিনবছর বয়সী রাহা নামের এক কন্যা সন্তান রয়েছে। তাকে ফারুকুলের মায়ের জিম্মায় দেয়া হয়েছে।’

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn