যশোর শিক্ষাবোর্ডে এবার এইচএসসিতে পাসের হার কমেছে ১৩ শতাংশ। আর জিপিএ-৫ প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। বোর্ডের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চৌগাছা উপজেলার কলেজগুলোর ফলাফল আরো খারাপ। এমন বিপর্যয়ের মধ্যে চমক দেখিয়েছেন চৌগাছা মৃধাপাড়া মহিলা কলেজের অদম্য তিন কন্যা সোনিয়া খাতুন, রেকসোনা আজাদ সুইটি ও আমেনা খাতুন। তারা জিপিএ-৫ পেয়ে অবাক করে দিয়েছেন সবাইকে। এমন সাফল্য অর্জন তাদের জন্য এতটা সহজ ছিল না। দুর্গম পথ পাড়ি দিয়েই তারা সফলতা পেয়েছেন। এবার তারা উচ্চ শিক্ষার মিশনে জয়ী হতে চান। কিন্তু আর্থিক অনটন, তাদের সেই স্বপ্নপূরণের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেতবুও হার মানতে নারাজ তিন কন্যা। সব বাধা পেরিয়ে সাফল্যে চূড়ায় পৌঁছতে চান তারা।

সোনিয়া খাতুন:
যশোরের চৌগাছা উপজেলার চাঁদপাড়া গ্রামের হজরত আলী ও সুফিয়া খাতুনের কন্যা সোনিয়া খাতুন বাণিজ্য শাখা থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। পিতা দিনমজুর। দারিদ্রতার নির্মম কষাঘাতে জর্জরিত হলেও লেখাপড়ার হাল ছাড়েননি। পরিবারের আর্থিক অনটনের মধ্যেও সোনিয়া তার লক্ষ্যপূরণে অবিচল রয়েছেন। ভবিষতে তিনি ম্যাজিস্ট্রেট হতে চান।

রেকসোনা আজাদ:
চৌগাছা উপজেলার নিয়ামতপুর গ্রামের ক্ষুদ্র কাঁচামাল ব্যবসায়ী আবুল কালাম আজাদ ও জহুরা বেগমের কন্যা রেকসোনা আজাদ সুইটি মানবিক শাখা থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছেন। তার অদম্য ইচ্ছেশক্তিই ভালো ফলাফল করতে সহযোগিতা করেছে। অভাবের সংসারের নানা প্রতিকূলতা থাকলেও লেখাপড়া চালিয়ে গেছেন। শিক্ষকদের সহযোগিতা ও নিজের ইচ্ছেশক্তির জোরে ভাল ফলাফল সম্ভব হয়েছে। তিনি উচ্চ শিক্ষিত হয়ে মানুষের মত মানুষ হতে চান। তবে উচ্চ শিক্ষার পথ মসৃণ হবে না। আর্থিক সীমাবদ্ধতায় সংগ্রাম করেই এগিয়ে যেতে হবে তাকে।

আমেনা খাতুন:
চৌগাছা উপজেলার উপজেলার গুয়াতলি গ্রামের দরিদ্র কৃষক সিরাজুল ইসলাম ও খাদিজা বেগমের কন্যা আমেনা খাতুন। দারিদ্রতা তাদের নিত্যসঙ্গী। অল্প জমিতে কৃষি কার করে যে ফসল হয় তাই দিয়ে চলে তাদের সংসার। অতি কষ্টের মধ্যে থেকেও অদম্য ইচ্ছে শক্তি দিয়ে লেখা পড়া করছে আমেনা খাতুন। এইচএসসি কারিগরি শাখা থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে সকলকে মুগ্ধ করেছেন তিনি। আমেনা খাতুন জানান, উচ্চ শিক্ষা নিয়ে কর্মকর্তা হতে চান। মানুষের কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত রাখতে চান। এ প্রসঙ্গে চৌগাছা মৃধাপাড়া মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ ড. মোস্তানিছুর রহমান জানান, ওদের সাফল্যে আমরা সবাই খুশি। নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে ওরা ভাল ফলাফল করেছে। ভবিষতে আরো অনেক দূর এগিয়ে যাবে এটা আমার বিশ্বাস।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn