নগরের সদরঘাট থানাধীন পশ্চিম মাদারবাড়ি এলাকায় পিতাকে হত্যা করে লাশ গুমের চেষ্টার সময় ধরা পড়েছে মা, ছেলে, মেয়ে ও খালাসহ ৫ জন। খুনের শিকার তৈয়ব আলীর (৪৭) লাশ পুলিশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে নগরীর মাদারবাড়ি টং ফকির মাজার এলাকার শাহ আলম মঞ্জিলের চতুর্থ তলায় শুক্রবার রাতে। এরপর শনিবার রাত ৯টায় এক বন্ধুসহ রশিদ বিল্ডিং এলাকার আবদুর রশিদ সিটি বালিকা বিদ্যালয়ের সামনের খালে লাশ ফেলতে গিয়ে ধরা পড়ে এক রিকশাওয়ালাসহ নিহত তৈয়ব আলীর পুত্র সোহেল। পরে তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সোহেলের মা কোহিনুর বেগম (৩৮), খালা জাহানারা বেগম (৪১) বোন বৃষ্টি আক্তারকে (১৭) গ্রেফতার করা হয়।

পুলিশ জানায়, শুক্রবার রাত ১০টার দিকে সোহেল বাসায় ঢুকে দেখেন, তার বাবা মায়ের কাছে ৫০০ টাকা চাইছে। মা টাকা নেই বললে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। রাত দেড়টা পর্যন্ত এ বিষয়ে ঝগড়া চলতে থাকে। ১টা ৪০ মিনিটের দিকে ঝগড়ার একপর্যায়ে সোহেলের ক্রিকেট খেলার ব্যাট দিয়ে তার খালা জাহানারা তৈয়ব আলী ঘাড়ের বাম পাশে সজোরে আঘাত করেন। এতে সাথে সাথে তৈয়ব আলী মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে ঘাড়ের ডান পাশে আবার আঘাত করা হয়। এরপর সোহেরের মা এবং খালা দুজনেই তৈয়ব আলীর গলা চেপে ধরে। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে সোহেল বালিশ দিয়ে তার বাবার মুখ চেপে ধরে। ৫ মিনিটের মতো চেপে ধরে রেখে সে বাবার মৃত্যু নিশ্চিত করে।

এরপর আরো নিশ্চিত হওয়ার জন্য কাঁচি দিয়ে ৪০ থেকে ৫০টি আঘাত করে পুরো শরীর ছিদ্র করে দেয়া হয়। তৈয়ব আলীর স্ত্রী দড়ি দিয়ে দুই পা বেঁধে ফেলেন, সোহেলের বোন বৃষ্টি এ সময় বাবার দুই হাত চেপে ধরে রাখে। সোহেল হাতের রগ এবং নিঃশ্বাস পরীক্ষা করে মৃত্যুর ব্যাপারে নিশ্চিত হয়। এরপর সবাই মিলে চটের বস্তায় তৈয়ব আলীর লাশ ভরে বারান্দায় রেখে দেয়। শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে সোহেল তার এক বন্ধুর পরামর্শে লাশভর্তি বস্তাটা নিয়ে রশিদ বিল্ডিং এলাকায় যায়। সেখানে খালে লাশ ফেলতে গিয়ে রিকশাওয়ালাসহ ধরা পড়ে সোহেল। সদরঘাট থানার ওসি মর্জিনা আক্তার বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সোহেল তার মা-খালা মিলে তার বাবাকে হত্যার কথা স্বীকার করে। পরে টং ফকিরের মাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে মা, খালা ও ছোটবোনকে গ্রেফতার করা হয়। সোহেলের পলাতক বন্ধুকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn