আশিক মিয়া-

দোয়ারাবাজার  পল্লীতে এক সংঘর্ষে বিএনপি নেতাসহ দুইজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত শতাধিক। শনিবার সংঘর্ষে এসব হতাহতের ঘটনা ঘটে। দোয়ারাবাজারে নিহত ব্যক্তি উপজেলা বিএনপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক শেরুজ্জামান।  পূর্ব বিরোধের জের ধরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে গুরুতর আহত ১৮ জনকে সিলেটের বিভিন্ন বেরসকারী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ফের সংঘর্ষের আশংকায় এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ ৭ রাউন্ড রাবার বুলেট ছুঁড়েছে। পুলিশ তাৎক্ষণিক শেরুজ্জামানের ভাই শাওন মিয়া এবং তার আরেক আত্মীয় আব্দুল আউয়ালের ছেলে রাসেল মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে। বিকালে উভয় পক্ষের ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত রমজান মাসে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার মিয়া আনু’র ইফতার মাহ্ফিল থেকে ফেরার পথে পূর্ব বিরোধের জের ধরে গোরসপুরের আরজ আলী ও তার আত্মীয়-স্বজন মিলে একই ইউনিয়নের বেরীগাঁওয়ের কাওছার মিয়াকে মারধর করে। কাওছার মিয়া দীর্ঘদিন এ ঘটনায় অসুস্থ ছিলেন। এ ঘটনা নিয়ে দুই পক্ষের বিরোধ আরো বেড়ে যায়। শনিবার সকাল ৯ টায় ছাতক থেকে ফেরার পথে ইউনিয়নের প্রতাপপুর গ্রামের পাশের সড়কে কাওছার তার ভাই মাসুক মিয়া এবং তার ভাতিজা তারেকসহ কয়েকজন শেরুজ্জামানকে বেধরক মারপিট করে। আহত শেরুজ্জামানকে (৪২) সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার সময় পথেই তার মৃত্যু ঘটে। নিহত শেরুজ্জামান গোরসপুর গ্রামের মৃত ওমর আলীর ছেলে। pic-7 এ খবর গোরসপুর পৌঁছালে শেরুজ্জামানের পক্ষের লোকজন প্রথমে চৌমোহনা পয়েন্টে কাওছারের দোকানে  হামলা চালায়, পরে বেরীগাঁওয়ে গিয়ে এবাদুল হকের (৪০) উপর হামলা চালায় এবং ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু ঘটে। নিহত এবাদুল হক বেরী গাঁওয়ের মৃত ফয়জুর রহমানের ছেলে। দুই পক্ষের হামলা-পাল্টা হামলার সময় উভয়পক্ষের কমপেক্ষ ৫০ জন আহত হয়েছে। এবাদুল হকের পক্ষের গুরুতর আহত ফরিদ উদ্দিন, সমসুদ্দোহা, আব্দুল হামিদ, আব্দুল কাহার, মুজিবুল হক, রাজ্জাক, সুয়েভ ও আল শাহীন এবং শেরুজ্জামানের পক্ষের গুরুতর আহত রমজান আলী, রফিক আলী, শানুর আলী, নূর আহমদ, সাদ্দাম হোসেন, আয়ুব আলী, জহুর উদ্দিন, আমিনুল ইসলাম, আব্দাল হোসেন, নজরুল ইসলাম ও কালা শাহ্কে সিলেটের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাদের স্বজনরা।
নিহত এবাদুুল হকের বোনের জামাই আব্দুল মজিদ জানিয়েছেন, গোরসপুরের লোকজন অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে তাদের বাড়িতে এসে হামলা চালায় এবং এলোপাতাড়ি মারধর করে। এসময় ঘটনাস্থলেই এবাদুল হক মারা যান। শেরুজ্জমানের বোন স্বপ্না ইয়াছমিন জানান, ছাতক থেকে ফেরার পথে চৌমোহনা পয়েন্টে কাওছারের দোকানের পাশে আসলে তার ভাইকে ১০-১৫ জন মিলে রামদা দিয়ে কুপিয়েছে। পরে সংঘর্ষের সময় তাদের ১৫-২০ জন আহত হয়েছে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার মিয়া আনু জানান, পূর্ব বিরোধের জের ধরে প্রথমে শেরুজ্জামানকে অপর পক্ষের লোকজন মারপিট করেছে। পরে এই পক্ষের লোকজন হামলা চালিয়ে এবাদুল হককে মেরেছে। ঘটনাস্থলে থাকা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সঞ্জয় সরকার বলেন,‘সংঘর্ষ থামাতে ৭ রাউ- রাবার বুলেট ছুঁড়া হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে মোতায়েন রয়েছে। ১৬ জন গ্রেপ্তার হয়েছে। আরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’বিকালে জেলা প্রশাসক মো. সাবিরুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার মো. বরকতুল্লাহ খান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn