ছাত্রলীগের সহ-সভাপতির বিরুদ্ধে দলীয় নেত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা
সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে তার দলের স্কুল কমিটির এক নেত্রীকে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় ওই নেত্রীর মামা মোজাম্মেল হক সরকার বাদি হয়ে ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণ এবং সহযোগিতা ও মারপিটের অভিযোগে তার ৫ সহযোগীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।স্থানীয় থানা পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাত্বিতের অভিযোগ উঠায় আদালতের বিচারক শহিদুল ইসলাম মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিকেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।সিরাজগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের এপিপি অ্যাড. আনোয়ার পারভেজ লিমন জানান, আজ আদালতে মামলাটি দায়ের করা হয়। ধর্ষিতা স্কুলছাত্রী বেলকুচির দৌলতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী ও একই বিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি এবং উপজেলার ধুকুরিয়াবেড়া ইউপির কলাগাছি গ্রামের হতদরিদ্র পরিবারের মেয়ে।
মামলার আসামিরা হল, জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও বেলকুচির চরখাষিয়া গ্রামের রকিব উদ্দিন মাষ্টারের ছেলে রিয়াদ হোসেন (২৫), একই উপজেলার চরচালা গ্রামের মিন্টু কসাইয়ের ছেলে আরমান হোসেন (২৬), একই গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে আল-আমিন হোসেন ও মৃত সোনা উল্লার ছেলে রুবেল শেখ, কলাগাছি গ্রামের মমিন সেখের ছেলে রতন শেখ ওরফে পিচ্চি রতন (২৪) এবং গাড়ামাসি গ্রামের নিমাই ডাক্তারের ছেলে পাপ্পু। মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, ৭-৮ মাস আগে ছাত্রলীগ নেতা রিয়াদ হোসেন স্কুল কমিটি গঠনের জন্য দৌলতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে গেলে ওই শিক্ষার্থীর সাথে রিয়াদের পরিচয় হয়। তাকে কমিটিতে সিনিয়র সহ-সভাপতির পদও দেয়া হয়। এই সূত্র ধরেই উভয়ের মধ্যে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে ওঠে। বিয়ের প্রলোভনে তা এক পর্যায়ে দৈহিক সর্ম্পকে রূপ নেয়। এই অবস্থায় গত ১৩ই অক্টোবর ছাত্রলীগ নেতা রিয়াদ ওই শিক্ষার্থীকে চরচালায় অবস্থিত তার মেসে ডেকে নিয়ে তারা আবারও দৈহিক মেলোমেশায় লিপ্ত হয়। ওই সময় বিয়ের জন্য চাপ দিলে রিয়াদ তাতে তালবাহানা শুরু করে।
বিষয়টি প্রকাশ করে দেয়ার জন্য ভয়ভীতি দেখালে রিয়াদ ওই শিক্ষার্থীকে মারপিট করে এবং সংবাদ পেয়ে সেখানে উপস্থিত হয়ে তার আরও ৫ সহযোগীও শিক্ষার্থীকে মারপিট করে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে তাকে তাড়িয়ে দেয়। এরপর ওই শিক্ষার্থী তার স্বজনদের বিষয়টি অবগত করে এবং বাবাকে নিয়ে থানায় মামলা দায়ের করতে যায়। এই সংবাদ পেয়ে অভিযুক্তরা থানায় গিয়ে পুলিশের সামনে আবারও ওই শিক্ষার্থীকে মারপিট করে এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে আবারও সাদা কাগজে বাবা-মেয়ের স্বাক্ষর নিয়ে তাদের থানা থেকে বের করে দেয়। যে কারণে দেরিতে হলেও ঘটনার বিষয়ে তারা আদালতের যান বলে এজাহারে উল্লেখ্য করেছেন মামলার বাদী। প্রেম ও ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করে ছাত্রলীগ নেতা রিয়াদ হোসেন বলেন, ওই মেয়েটি ১৩ই অক্টোবর রাতে হঠাৎ আমার মেসে প্রবেশ করে ঘরের দরজা আটকে রেখে আমাকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে মেস থেকে বের করে দেয়া হয়। এরপর সে থানায় গিয়ে পুলিশের কাছে আমার বিরুদ্ধে তথ্য প্রমাণ দেখাতে ব্যর্থ হওয়ায় থানার ওসি সাজ্জাদ হোসেন তাকে বিদায় করে দেন। তিনি আরো জানান, আসন্ন বেলকুচি উপজেলা ছাত্রলীগের সন্মেলনে আমি সভাপতি পদের প্রার্থী। যে কারণে প্রতিপক্ষরা ওই মেয়েকে আমার বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছে। এ বিষয়ে বেলকুচি থানার ওসি সাজ্জাদ হোসেনের দাবি, ওই মেয়েটি অভিযোগ করার জন্য থানায় এসেছিল। কিন্তু তার বাবা মামলা করতে রাজি না হওয়ায় তারা চলে যান। ওই সময় থানায় কোন মারপিটের ঘটনা ঘটেনি, এমনকি সাদা কাগজে কোন স্বাক্ষর নেয়া হয়নি।