রফিকুল ইসলাম কামাল :: সিলেট জেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি আগামী কিছুদিনের মধ্যে আলোর মুখ দেখছে। বর্তমানে কমিটিতে কারা আসছেন, সেই আলোচনাই তুঙ্গে। বিশেষ করে সভাপতি পদে কে দায়িত্ব পেতে যাচ্ছেন, এ নিয়ে সিলেটে সংগঠনটির নেতাকর্মীদের বেশ আগ্রহ ও কৌতুহল রয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পদে অন্তত ১৫ নেতাকে ঘিরে কম-বেশ আলোচনা চলছে। এসব নেতাদের মধ্য থেকেই কোনো একজনের কাঁধে সভাপতির গুরুদায়িত্ব বর্তাবে বলে মনে করছেন সাধারণ নেতাকর্মীরা। নানা ধরনের বিতর্কিত কর্মকা-, মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের কমিটি গেল সপ্তাহে (১৮ অক্টোবর) বিলুপ্ত করা হয়েছে। কমিটি বিলুপ্তের পরপরই নতুন কমিটি গঠনের জন্য পদপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে জীবনবৃত্তান্ত আহবান করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এজন্য তিন নেতাকে দায়িত্ব দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এ তিন নেতা হচ্ছেন- ছাত্রলীগের সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৃজন ঘোষ সজিব, কেন্দ্রীয় ক্রীড়া সম্পাদক চিন্ময় রায় ও উপ-সাহিত্য সম্পাদক রহমত উল্লাহ খান শাকুর। গত সোম ও মঙ্গলবার এ তিন নেতার কাছে জেলা ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী নেতারা নিজেদের জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ এসব জীবনবৃত্তান্ত যাচাইবাছাই শেষে নতুন কমিটি ঘোষণা করবে বলে জানা গেছে।

জানা যায়, আসন্ন নতুন কমিটিতে সভাপতি পদে বেশ কয়েকজন নিজেদের জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন। তন্মধ্যে ১৫ জনকে ঘিরেই আলোচনা বেশি। ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সিলেট জেলা ছাত্রলীগ কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত। শাহপরান ব্লক ছাত্রলীগ গ্রুপ থেকে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পদপ্রত্যাশী রশিদুল ইসলাম রাশেদ। সদ্য বিলুপ্ত হওয়া কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি ছিলেন রাশেদ। এ গ্রুপ থেকে সদ্য বিলুপ্ত হওয়া কমিটির সহ-সভাপতি সুহেল আহমদ মুন্না এবং সহ-সম্পাদক ইশতিয়াক চৌধুরীও আছেন সভাপতি পদের দৌড়ে। তেলিহাওর গ্রুপ থেকে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পদে আগ্রহী সাবেক সহ-সভাপতি সালাউদ্দিন পারভেজ, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক জাওয়াদ ইবনে জাহিদ খান ও সাবেক যুগ্ম সম্পাদক শাক্কুর আহমদ জনি।

সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পদ পাওয়ার দৌড়ে আছেন সুরমা গ্রুপের মুহিবুর রহমান ও বিপ্লব দাস। সদ্য বিলুপ্ত হওয়া কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন মুহিব, বিপ্লব ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক। ছাত্রলীগের টিলাগড়কেন্দ্রীয় গ্রুপের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক রণজিত সরকারের আশির্বাদপুষ্ট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য নাজমুল ইসলাম, কনক পাল ও অসীম কান্তি কর সভাপতি পদ পেতে আগ্রহী। বিলুপ্ত হওয়া কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন অসীম, গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন কনক। টিলাগড়কেন্দ্রীক গ্রুপের মধ্যে মহানগর আওয়ামী লীগের শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক আজাদুর রহমান আজাদের আশির্বাদপুষ্ট অনিরুদ্ধ মজুমদার পলাশ, হারুনুর রশীদ ও মিজানুর রহমান মিজান জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পদপ্রত্যাশী। গেল কমিটিতে পলাশ ও হারুন উভয়েই ছিলেন সহ-সভাপতি পদে। আর মিজান ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক।

এদিকে, সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের উপদফতর সম্পাদক আখতারুজ্জামান চৌধুরী জগলুর সমর্থনপুষ্ট সাজু আহমদও আছেন সভাপতি পদ পাওয়ার দৌড়ে। সম্প্রতি বিলুপ্ত জেলা ছাত্রলীগের কমিটিতে সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ছিলেন তিনি। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এই ১৫ ছাত্রলীগ নেতার মধ্যে সভাপতি পদে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আছেন রশিদুল ইসলাম রাশেদ, নাজমুল ইসলাম, অনিরুদ্ধ মজুমদার পলাশ, জাওয়াদ ইবনে জাহিদ খান ও মুহিবুর রহমান। সূত্র জানায়, সিলেট জেলা ছাত্রলীগের বিভিন্ন পদে আগ্রহী তিন শতাধিক নেতা নিজেদের জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন। তবে সদ্য বিলুপ্ত হওয়া কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার আলম সামাদ ও সাধারণ সম্পাদক রায়হান চৌধুরী নিজেদের জীবনবৃত্তান্ত জমা দেননি। এ বিষয়ে ছাত্রলীগের সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৃজন ঘোষ সজিব সিলেটভিউ২৪ডটকমকে বলেন, সিলেট জেলা ছাত্রলীগের বিভিন্ন পদে তিন শতাধিক জীবনবৃত্তান্ত আমরা পেয়েছি। এসব জীবনবৃত্তান্ত যাচাইবাছাই শেষে কেন্দ্র থেকে কমিটি দেওয়া হবে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn