ছাত্রীকে ‘শ্লীলতাহানি’ চেষ্টার অভিযোগে জাবি ছাত্রকে পুলিশে সোপর্দ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রীকে ‘যৌন হয়রানি’র অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক ছাত্রকে পুলিশে সোপর্দ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। মঙ্গলবার দিবাগত রাত দেড়টার সময় অভিযুক্ত ছাত্রকে পুলিশের হাতে তুলে দেন প্রক্টর সিকদার মো জুলকারনাইন। অভিযুক্ত সাহেদ ইসলাম ওরফে আল আমিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ৪২ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক ছাত্র। প্রক্টর অফিস সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় এক ছাত্রকে মারধর করা হচ্ছে এমন খবরে প্রক্টরিয়াল বডি সেখানে উপস্থিত হয়ে আল আমিনকে গণধোলাইয়ের হাত থেকে উদ্ধার করে। এরপর তাকে প্রক্টর অফিসে নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এক ঘন্টার জিজ্ঞাসাবাদে আল আমিন লিখিত বক্তব্যে জানায়, ‘শ্লীলতাহানি’র অভিযোগকারী ছাত্রীর সাথে তার পরিচয় হয় ফেইসবুকে। পরিচয়ের তৃতীয় দিন, সোমবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের খালেদা জিয়া এবং বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা হলের সামনের মাঠে (বৃন্দাবন বলে পরিচিত) তাদের দেখা হয়। এসময় আল আমিন সেই ছাত্রীকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। প্রস্তাব দেয়ার পরপরই শারীরিক সম্পর্ক করতে চাইলে ছাত্রীটি তাকে বাঁধা দেয়। এরপর পরদিন মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মেয়েটি আল আমিনকে ফোনকল করে পুনরায় তার সাথে দেখা করতে চয়। রাত দশটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় দেখা করতে এলে সেই ছাত্রীর সাথে থাকা বিভাগের সহপাঠি এবং সিনিয়র শিক্ষার্থীরা তাকে মারধর করে। আল আমিনকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়ার পর প্রক্টর সিকদার মো জুলকারনাইন সাংবাদিকদের বলেন, “আল আমিন একজন বিকৃত মস্তিষ্কের মানুষ। যেহেতু ঘটনাটি যৌন নিপীড়নের পর্যায়ে পড়ে সেহেতু এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন বিরোধী যে সেল রয়েছে তারাই দেখবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শৃঙ্খলা বিধি ভঙ্গের কারণে প্রক্টরিয়াল টিম তাকে পুলিশে সোপর্দ করেছে। এ ঘটনায় সে যাতে সর্বোচ্চ সাজা পায় সেজন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো। যদিও নিজের মানহানির ভয়ে এখনো পর্যন্ত সেই ছাত্রী কোনো লিখিত অভিযোগ করেনি তবুও এ ঘটনায় তাকে সবরকম সহায়তা করার জন্য আমরা তৈরি আছি।” এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আল আমিন ইতিপূর্বে ৪৬ ব্যাচে জাবিতে ভর্তির জন্য অপেক্ষমান তালিকায় থাকা এক ছাত্রীকে উপাচার্য কোটায় ভর্তি করানোর প্রলোভন দেখিয়ে তার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। পরে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হলে ঐ ছাত্রীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে তাকে ভর্তি করানো হয়েছে বলে জানায়। ঐ ছাত্রী আল আমিনের কথায় বিশ্বাস করে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বিভাগে এক বছর ক্লাস করার পর বার্ষিক পরীক্ষার ফরম ফিলাপের সময় জানতে পারে যে, সে আসলে জাবির শিক্ষার্থীই নয়। ভর্তি জালিয়াতির এই ঘটনায় এ বছরের ১৮ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আল আমিনকে সাময়িক বহিষ্কার করে।