‘মা কথাটি ছোট্ট অতি, কিন্তু জেনো ভাই, ইহার চেয়ে নাম যে মধুর তিন ভুবনে নাই।’ সত্যি পৃথিবীর সবচেয়ে মধুর এবং শ্রেষ্ঠ শব্দ ‘মা’। সন্তানের কাছে সবচেয়ে আপন, সবচেয়ে প্রিয় তার ‘মা’। সম্পর্কের বেড়াজাল ছিন্ন করে সবাই দূরে সরে যেতে পারে। চলে যেতে পারে প্রেয়সীও। কিন্তু ‘মা’র স্নেহ-ভালোবাসার বন্ধন কখনই ছিন্ন হওয়ার নয়। ‘মা’ এমন একজন, যিনি সারাজীবন সন্তানকে বুকের মধ্যে আগলে রাখেন। আজ বিশ্ব মা দিবস। মা দিবস মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা-ভালবাসা প্রকাশ, মাতৃত্ব ও মাতৃত্বের বন্ধনকে সম্মান জানানো এবং সমাজে মায়েদের প্রভাবকে স্বীকার করে নেয়ার উদযাপন। সারাবিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয়। দিবসটির মূল উদ্দেশ্য, মাকে যথাযথ সম্মান দেয়া, ভালোবাসা। দিনটি উপলক্ষে দেশে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে বিভিন্ন সংগঠন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এরমধ্যেই মাকে ভালোবাসা জানিয়েছেন বহু সন্তান।

যেভাবে এল মা দিব
যুক্তরাষ্ট্রে আনা জার্ভিস ও তার মা অ্যান মেরি রিভস জার্ভিসের উদ্যোগে মা দিবসের সূচনা হয়। আনা জার্ভিস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোর ও ওহাইওর মাঝামাঝি ওয়েবস্টার জংশনের বাসিন্দা ছিলেন। তার মা অ্যান মেরি রিভস জার্ভিস সারা জীবন ব্যয় করেন অনাথ-আতুরের সেবায়। মেরি ১৯০৫ সালে মারা যান। লোকচক্ষুর অগোচরে কাজ করা মেরিকে সম্মান দিতে চাইলেন মেয়ে আনা জার্ভিস। অ্যান মেরি রিভস জার্ভিসের মতো দেশজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা সব মাকে স্বীকৃতি দিতে আনা জার্ভিস প্রচার শুরু করেন। সাত বছরের চেষ্টায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পায় মা দিবস। ১৯১১ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি রাজ্যে মা দিবস পালনের ঘোষণা দেয়া হয়। ১৯১৪ সালের ৮ মে মার্কিন কংগ্রেস মে মাসের দ্বিতীয় রোববারকে মা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।  তবে মা দিবসের প্রবক্তা আনা জার্ভিস দিবসটির বাণিজ্যিকীকরণের বিরোধিতা করে বলেছিলেন, মাকে কার্ড দিয়ে শুভেচ্ছা জানানোর অর্থ হলো, তাকে দুই কলম লেখার সময় হয় না। চকলেট উপহার দেয়ার অর্থ হলো, তা নিজেই খেয়ে ফেলা। বিশ্বব্যাপী মে মাসের দ্বিতীয় রোববারে মা দিবস পালিত হলেও, প্রতিটি দেশের নিজস্ব ধর্ম ও সংস্কৃতি অনুযায়ী মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা-ভালবাসা জানিয়ে একটি দিবস পালনের রীতি আছে। প্রাচীন ইতিহাস ঘাঁটলেও এমন দিন খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে না। সারাবিশ্বের মত বাংলাদেশেও মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার পালিত হয় দিবসটি। মায়ের প্রতি সম্মান ও ভালোবাসা অক্ষুন্ন রাখার প্রত্যয় নিয়ে সন্তানরা সারা বছরই আগলে রাখুক মাকে, বিশেষ দিনে এমন প্রত্যাশা সবার।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn