বার্তা ডেস্ক:: ক্যান্সার, কিডনি, লিভার সিরোসিস, স্ট্রোকে আক্রান্ত প্যারালাইজড ও জন্মগত হৃদরোগের মতো জটিল রোগীদের চিকিৎসায় এককালীন ৫০ হাজার টাকা সহায়তা দিবে সরকার। চলতি বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় ১৫ হাজার রোগী এ আর্থিক সুবিধা পেলেও সারাদেশ থেকে এবার ৩০ হাজার রোগীকে এ সহায়তা প্রদানের ঘোষণা আসছে আগামী বাজেটে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সামাজিক নিরাপত্তা শাখার এক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, রোগীদের স্বস্তি দিতে হার্টের রিং পরানো, কিডনি ডায়ালাইসিস ও যাবতীয় রোগ নির্ণয় খরচ কমানোর পদক্ষেপ থাকছে আসন্ন বাজেটে। লিভার ও কিডনি প্রতিস্থাপন, রোগী ও লাশ পরিবহনে এ্যাম্বুলেন্স খরচ কমানো এবং তা সহজলভ্য করার ঘোষণা দেয়া হবে। ক্যান্সার, গ্যাস্ট্রিক আলসার, ডায়াবেটিস, ডায়রিয়া, ঠান্ডা ও বাতজনিত সকল রোগের ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণ করার পদক্ষেপ থাকছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে দেয়া হবে অত্যাধুনিক চিকিৎসা সেবা। এতে বিত্তশালীদের বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা নেয়ার প্রবণতা হ্রাস পাবে। সূত্রে জানা যায়, প্রতিবছর দেশে প্রায় ৩ লক্ষাধিক মানুষ এ সমস্ত রোগে মৃত্যুবরণ করে এবং আরও ৩ লক্ষাধিক লোক ক্যান্সার, কিডনি, লিভার সিরোসিস, স্ট্রোকে আক্রান্ত প্যারালাইজড ও জন্মগত হৃদরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। অর্থের অভাবে এসব রোগে আক্রান্ত রোগীরা ধুঁকে ধুঁকে মারা যায়। কখনো বা কোনো কোনো রোগীর পরিবার চিকিৎসা ব্যয় বহন করে নিঃস্ব হয়ে পড়ে। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ক্যান্সার, কিডনি ও লিভার সিরোসিস রোগীর আর্থিক সহায়তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন নীতিমালা ২০১৩-এর আওতায় রোগীদের এ সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। তবে প্রচারের অভাব ও যথাযথ প্রক্রিয়ায় আবেদন না করার কারণে কম সংখ্যক রোগীই এ সুবিধা নিতে পারছেন। সম্প্রতি তুর্কি পরিবার ও সমাজনীতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণে আঙ্কারা সফরে গিয়ে সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ আনাদুলো এজেন্সিকে বলেন, সরকার প্রতি বছরই নির্দিষ্ট কিছু রোগে আক্রান্ত রোগী, যারা নিজেদের চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে পারেন না, তাদের আর্থিক সহায়তা দিয়ে থাকে। তবে রোগীর অবস্থা বিবেচনায় এ অনুদান কমানো বা বাড়াতে পারে মন্ত্রণালয়। তিনি বলেন, দরিদ্র, অসুস্থ, অক্ষম ও বয়স্ক মানুষের সহযোগিতায় সামাজিক পরিষেবা প্রদানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল বিশ্বের জন্য একটি রোল মডেল হতে পারে। আমি আপনাকে আশ্বস্ত করতে পারি যে আগামী পাঁচ বছরে আমাদের দেশ সমাজ কল্যাণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে।

উল্লেখ্য, জটিল এই পাঁচ রোগে আক্রান্তদের শনাক্ত করে সমাজসেবা অধিদপ্তরের জনবল, স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও সুধীজনের সহযোগিতায় প্রকৃত দুঃস্থ ও অসহায় ব্যক্তিদের তালিকা প্রণয়ন করে গৃহীত কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে সরকার। এক্ষেত্রে এসব রোগে আক্রান্তদের অবশ্যই রেজিস্টার্ড চিকিৎসক কর্তৃক প্রত্যয়িত হতে হবে। সেই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রোগের বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের ব্যবস্থাপত্র ও টেস্ট রিপোর্টও থাকতে হবে। যেমন-ক্যান্সারের ক্ষেত্রে Biopsy বা অন্যান্য টেস্ট রিপোর্ট থাকতে হবে এবং কিডনি রোগের ক্ষেত্রে; Acute Renal Failure অথবা Chronic Renal Failure এ আক্রান্ত ডায়ালাইসিস সেবা নিচ্ছে এমন রোগীদেরকে বিবেচনা করতে হবে। তবে যেসব এলাকায় ডায়ালাইসিস সেবা নেয়ার সুযোগ নেই, সেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কর্তৃক রোগের স্বপক্ষে প্রত্যয়ন গ্রহণ সাপেক্ষে এ সাহায্য প্রদান করা যাবে। এছাড়া রোগীর জাতীয় পরিচয় পত্র/জন্ম সনদ (১ম শ্রেণীর গেজেটেড অফিসার কর্তৃক সত্যায়িত ফটোকপি) থাকতে হবে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn