২০১৪তে জাতীয় দলের হয়ে শেষ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলেছেন ফরহাদ রেজা। এরপর সুযোগ এলেও জাতীয় দলের দরজায় অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে তাকে। সবশেষ আয়ারল্যান্ড সিরিজ ও শ্রীলঙ্কা সফরে দলে থাকলেও মাঠে নামা হয়নি। এই পেস অলরাউন্ডার ২০১১তেই বাদ পড়েছেন ওয়ানডে দল থেকে। আর  টেস্ট তো তার জন্য এখনো অধরা স্বপ্ন। এবারো আছেন আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্ট ও ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য ঘোষিত প্রাথমিক দলে। আশায় আছেন হয়তো সুযোগ মিলবে যে কোনো এক ফরম্যাটে। শুধু ফরহাদ রেজাই নয়, বয়স ৩৪ ছোঁয়া এই ক্রিকেটারের  ফেরার অপেক্ষায় আছেন তার মা ও আরো একজন।যদিও তিনি সেই একজনের নাম বলেননি। গতকাল অনুশীলনের ফাঁকে সংবাদ মাধ্যমের সামনে জানিয়ে দিলেন তিনি কাদের জন্য খেলছেন আর কারাই তার ফেরার অপেক্ষায়। তিনি বলেন, ‘আমি  চেষ্টা করছি দিন দিন উন্নতি করার জন্য। নিজেকে প্রস্তুত রাখছি। আমি এখনো ক্রিকেট খেলছি দুজনের জন্য। তারা হলেন, আমার মা আর একজনের নাম বলবো না। তারা আমার জন্য অপেক্ষায় রয়েছে। যদি কখনো ম্যাচ খেলতে পারি সবচাইতে খুশি হবে তারাই। সেজন্য আমি প্রস্তুত থাকছি।’

আফগানদের বিপক্ষে টেস্ট নাকি ত্রিদেশীয় সিরিজ কোন ফরম্যাটে খেলতে পারেন ফরহাদ রেজা তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই। আগের দুটি সিরিজে দলে থাকলেও একাদশে খেলার সুযোগ হয়নি। এবার ধারণা করা হচ্ছে টেস্ট না হলেও টি-টোয়েন্টি ত্রিদেশীয় সিরিজে তার খেলার সম্ভাবনা আছে। আবার সুযোগ নাও হতে পারে। ফরহাদ নিজেও আছেন ধোঁয়াশার মধ্যে। নিজেকে সব সময় প্রস্তুত বলেও জোর দিয়ে বলতে পারছেন না তার ফেরা হবে কিনা! তিনি বলেন, ‘এই প্রশ্নের উত্তর আমার কাছে  নেই, বিসিবি ভালো বলতে পারবে। আমি সবই খেলতে চাই। আপনি যা খেলাবেন আমি সবই খেলবো কারণ আমি খেলতেই এসেছি। সিম্পল হিসাব। যা বলবেন উনাদের বলেন, উনারা বলে দিবে।’ আগামী ৩০শে আগস্ট টেস্ট দল ঘোষণা হবে। সেখানে ফরহাদ রেজাকে রাখা হবেনা তা অনেকটাই নিশ্চিত। তবে হয়তো তার সুযোগ আসতে পারে টি-টোয়েন্টিতে এমনটাই অভাস পাওয়া গেছে। ফরহাদ নিজেও জানিয়েছেন তিনি বেশি উপভোগ করেন টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডে খেলা। তিনি বলেন, ‘আমি অবশ্যই টি-টোয়েন্টি উপভোগ করি কারণ ওইটা আমার ধাচে যায়। আমি যেমন খেলছি একবছর। আমার জাতীয় লীগ বিসিএল দেখবেন হায়েস্ট উইকেট টেকার হয়ে গিয়েছি। এটা একটা সমস্যা হয়ে গিয়েছে। পারফর্ম করেছি সব জায়গায়, যেটাই খেলি ভালো খেলার চেষ্টা করবো।’
তবে ফরহাদ বেশ ভালো করেই জানেন, সুযোগ না পেলে তার পক্ষে প্রমাণ করা কোনভাবে সম্ভব নয়। তাই বারবারই তিনি  সেই কথাই জানাতে চেয়েছেন। গতকালও তিনি বলেন, ‘আমি অনেকদিন ধরে বাইরে আছি। আমাকে তো আগে খেলতে হবে। যেহেতু আমি অনেক দিন পিছিয়ে আছি। কিন্তু আমি ক্রিকেটই খেলেছি। এই জায়গায় তো ক্রিকেটই খেলবো। আমি যদি ক্রিকেট খেলতে পারি। আমাকে তো প্রমাণ করার জায়গা দিতে হবে। জায়গা পাওয়াটা আমার হাতে না। আমার কাজ পারফর্ম করা, ভালো খেলার চেষ্টা করা। তাও যদি না হয় তা আমার হাতে না।’ তবে জাতীয় দলের ক্যাম্পে এসে দারুণ সুযোগ সুবিধা পাওয়ার কথাও জানিয়েছেন এই পেস অলরাউন্ডার। তিনি বলেন, ‘আগে আমি যে জায়গায় ছিলাম সেখানে সুযোগ সুবিধা কম ছিল। এখানে অনেক সুযোগ, আমি তো ওইটা নিবোই। আরেক ধাপ ওপরে যাওয়ার সুযোগ থাকে।’  অন্যদিকে জাতীয় দলের কোচিংস্টাফে এসেছে বড় পরিবর্তন। বিশেষ করে নয়া প্রধান কোচ ও বোলিং কোচ কাজ শুরু করেছেন ক্রিকেটারদের নিয়ে। জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার ক্ষেত্রে অনেক সময়  কোচের সুনজরও লাগে। সেই হিসেবে দুই নয়া কোচের সঙ্গে কেমন কাটছে ফরহাদ রেজার? প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গোকে নিয়ে তিনি বলেন, ‘তিনি কেবলই  শুরু করেছেন। আমি স্টিভ রোডসকে একটি সিরিজে পেয়েছি। আয়ারল্যান্ড সিরিজে। এরপর তিনি ছিলেন না। তাকেও (ডমিঙ্গো) দুই তিন দিন পেয়েছি। যেহেতু ৩৫ জনের ক্যাম্প তারও সময় লাগে সবাইকে টাইম দিতে। যতটুকু সময় দিচ্ছে ভালোই। আমার জন্য ভালো।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn