জাবেদ রহিম বিজন- ফুটফুটে তিন শিশু। বয়স আট, ছয় ও চার বছর। তাদের রেখেই পরকীয়া প্রেমে মজেছেন মা শাহিদা জাহান মুক্তা। শেষতক প্রবাসী স্বামীর ঘর ছেড়ে পুলিশের এক এএসআইকে বিয়ে করেছেন। সংসার পেতেছেন শহরের কলেজপাড়ায়। পুলিশের ওই এএসআই মো. রাসেল মিয়াও বিবাহিত। দু’সন্তানের জনক। বিয়ের কথা স্বীকার করে দু’জনেই বলেছেন তারা পরিস্থিতির শিকার হয়ে বিয়ে করেছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার মুন্সি হিসেবে কর্মরত ছিলেন রাসেল। বর্তমান কর্মস্থল তার নোয়াখালীতে। এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে দেশে ছুটে এসেছেন সৌদি আরব থেকে মুক্তার স্বামী মো. কবির হোসেন। তার সংসার ভাঙার বিচার চেয়ে জেলার পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগসূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালে সদর উপজেলার ক্ষুদ্র ব্রাহ্মণবাড়িয়া গ্রামের বাহার মিয়ার মেয়ে মুক্তাকে বিয়ে করেন কবির। এরপর ২০১৭ সালের ২রা আগস্ট সৌদি পাড়ি জমান। ২০১৮ সালে কবিরের শ্যালক সাব্বিরের পুলিশ ক্লিয়ারেন্স আনার প্রয়োজনে থানায় যান মুক্তা।

তখনই থানার মুন্সির পদে থাকা রাসেলের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। কবিরের অভিযোগ এরপরই রাসেল ফুসলিয়ে তার স্ত্রী’র সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলে। পরে বিয়ে করে ফেলে তাকে। এরপর তারা দু’জন শহরের কলেজপাড়ায় স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বসবাস করতে থাকে। প্রবাসে থাকাকালে কবির তার স্ত্রীর ব্যাংক হিসাবে ১১ লাখ ১৩ হাজার টাকা পাঠান। কবিরের অভিযোগ সেই টাকাও নিয়ে গেছে মুক্তা। কবির বলেন, তার স্ত্রী খুবই পর্দানশীল ছিলেন। তার সঙ্গে ঘুরতে বেরিয়ে হোটেলে খাবার খেতে বসেও মুখের ওপর থেকে বোরকার কাপড় সরাতো না। কাপড় একটু উঠিয়ে এর নিচ দিয়ে খাবার খেতো। কিন্তু প্রবাসে থাকার সময় সেই স্ত্রীর বেসামাল অবস্থার ছবি পান দেশ থেকে। মুক্তা সিগারেট টানছে- এমন ছবি পাঠানো হয় তার কাছে। মদের বোতল বিছানায় ছড়ানো এমন ছবিও পাঠানো হয়। ফেসবুকের মাধ্যমেই এসব জানতে পারেন। কবির জানান, তার শ্বশুর শহরের কান্দিপাড়া এলাকায় বসবাস করতেন। বিদেশে যাওয়ার সময় সেখানেই রেখে গিয়েছিলেন স্ত্রী-সন্তানদের। রাসেলের সঙ্গে সম্পর্ক হওয়ার পর সে কান্দিপাড়া ছেড়ে কলেজপাড়ায় বাসা ভাড়া নেয়। তারা দু’জন স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে বাসা ভাড়া করে। সেখানে রাসেলের মা এসেও থাকতো। স্ত্রীর এই কাণ্ডকীর্তির খবর পেয়ে ১লা সেপ্টেম্বর দেশে ফিরেন কবির। এরপর ১৭ই সেপ্টেম্বর পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন এএসআই রাসেলের বিরুদ্ধে। তাতে বাসা ভাড়া নিয়ে রাসেল ও মুক্তা স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ব্যভিচারে লিপ্ত বলে অভিযোগ করা হয়। এদিকে বিদেশ থাকাকালে গত ৫ই মে কবিরকে তালাক দেয় মুক্তা। তালাকের এই নোটিশ আগস্ট মাসে সৌদিতে তার কাছে পৌঁছে। এরইমধ্যে রাসেলকে বিয়ে করে ফেলে সে। এ বিষয়ে মুক্তা বলেন, আগের স্বামীর সঙ্গে তার গত ২ বছর ধরে বনিবনা ছিল না। রাসেল পারিবারিকভাবেই তার পরিচিত। তার সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে মানুষ নানা রটনা করে। সেই কারণেই রাসেলকে বিয়ে করেছেন তিনি।

সংসার করা এই বিয়ের উদ্দেশ্য নয় জানিয়ে মুক্তা আরো বলেন, যদি সংসার করার ইচ্ছে থাকতো তাহলে তার সঙ্গে নোয়াখালী চলে যেতাম। আমি তো জানি তার বউ-বাচ্চা আছে। তাছাড়া আমি যদি তার (কবির) সংসার না করি তাহলে আরেকজনকে বিয়ে করার অধিকার তো আমার আছে। রাসেল মিয়া বলেন, তিনি পরিস্থিতির শিকার। তার নাকি ফ্যামিলিগত ভাবে সমস্যা হচ্ছে। বিয়ে না করলে ঝামেলা হবে। সেইজন্য বিয়ে করতে হয়েছে। রাসেল কবিরের এক আত্মীয়ের কাছে কোর্ট ম্যারিজের কথা স্বীকার করে বলেন- চাপে পড়ে বিয়ে করেছেন। আমি চাইছিলাম না। বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে বিয়ে করেছে। ব্ল্যাকমেইলিং করেছে তাকে। রাসেলের এ ঘটনা পুলিশ মহলেও ব্যাপক আলোচিত। ঘটনা জানাজানির পর তাড়াহুড়ো করে সে এখান থেকে বদলি হয়ে যায়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ওসি মো. সেলিম উদ্দিন বলেন- সে এখান থেকে যাওয়ার পর ঘটনা শুনেছি। তবে এ ঘটনায় সে এখান থেকে তড়িঘড়ি বদলি হয়েছে তেমনটা আমার জানা নেই।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn