ভারতের উত্তর প্রদেশ ও বিহারে ভারী বর্ষণে সৃষ্ট বন্যায় ১২২ জনের প্রাণহানি হয়েছে। স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছে, বৃহ¯পতিবার থেকে সোমবার পর্যন্ত অন্তত ৯৩ জন বন্যায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। অন্যদিকে বিহারে বন্যা সংশ্লিষ্ট কারণে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৯। এ খবর দিয়েছে বিবিসি। খবরে বলা হয়, শহুরে অঞ্চলগুলোতে বন্যার প্রভাবে সৃষ্ট দুর্দশার ছবি প্রকাশ পাচ্ছে ধীরে ধীরে। বিঘিœত হচ্ছে সড়কে যান চলাচল, ট্রেন সেবা, স্বাস্থ্যসেবা, স্কুল ও বিদ্যুৎ সরবরাহ। দুই অঙ্গরাজ্যের কর্মকর্তারাই নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। এর মধ্যে বিহারের প্রধান শহর পাটনায় অবস্থা দ্রুত বেগতিক হয়ে ওঠেছে। মানুষজন মূল সড়কগুলোয় নৌকা চালাচ্ছে।সেখানে অচল হয়ে ডুবে আছে মোটরগাড়ির সারি। স্থানীয় যোগাযোগ মাধ্যমে বহু ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। এর মধ্যে একটি ভিডিওতে দেখা যায়, এক রিক্সাচালক বুক-সমান পানিতে ডুবে থাকা রিক্সা টেনে যাওয়ার চেষ্টা করছেন কিন্তু পারছেন না। পাটনার ঘরে ঘরে ঢুকে গেছে পানি। শুক্রবার থেকে অর্ধ-নিমগ্ন হয়ে আছে পুরো শহর। বাদ পড়েনি আবাসিক এলাকাগুলোও। হাসপাতালে ক্রমাগত হারে বেড়ে চলেছে রোগীর সংখ্যা। ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআই স্থানীয় কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, পাটনায় একেবারে অপ্রত্যাশিত পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে। রাজ্য সরকার ভারতীয় বিমান বাহিনীকে হেলিকপ্টার ও যন্ত্রপাতি দিয়ে শহর থেকে পানি সেচতে নির্দেশ দিয়েছে। উত্তর প্রদেশেও একই ধরনের দৃশ্য দেখা গেছে। বারানসির স্থানীয় এক বাসিন্দা জানিয়েছে, পানির অবস্থা, শহরের অবস্থা খুব খারাপ। ড্রেন ব্যবস্থা প্রায় অকার্যকর হয়ে গেছে। নৈমিত্তিক জীবন-যাপন অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ভারতের জাতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, দেশটির ইতিহাসে এত দীর্ঘ বর্ষাকালের নজির বিরল। এদিকে, বন্যা ও ভারী বর্ষণে আক্রান্ত  হয়েছে গুজরাট, উত্তরাখণ্ড, মধ্য প্রদেশ ও রাজস্থানও। গুজরাটে বন্যার পানিতে একটি মোটরগাড়ি ভেসে যাওয়ার ঘটনায় তিন নারীর মৃত্যু হয়েছে। রাজ্যটিতে ভারী বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। অন্যদিকে উত্তরাখণ্ড, মধ্য প্রদেশ ও রজস্থানে বিভিন্ন ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১৩ জনের। ভারী বর্ষণে জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে কলকাতার একাধিক রাস্তা। জম্মু ও কাশ্মীরে ৫৪ বছর বয়সী একজন সাব-ইন্সপেক্টর নদীতে ডুবে মারা গেছে বলে আশঙ্কা করছেন কর্মকর্তারা।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn