ননএমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীদের চলমান অন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ননএমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশন নেতাদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন। এ তথ্য জানিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা এমএ খায়ের জানান, আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ২০ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬টা ফেডারেশনের নেতাদের সরাসরি আলোচনায় বসার সিদ্ধান্ত হয় এবং ২০ তারিখ পর্যন্ত ফেডারেশন ঘোষিত আমরণ অনশন কর্মসূচি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়। এমপিও নীতিমালা ২০১৮ স্থগিত করে স্বীকৃতিই একমাত্র মানদণ্ড ধরে শুধু স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ননএমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য আন্দোলন করে আসছিলেন শিক্ষকরা। এ দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতের জন্য বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ননএমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের গণঅবস্থান কর্মসূচির তৃতীয় দিনে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী দুপুর ১২টার দিকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করে। প্রায় ১০ হাজারের বেশি শিক্ষক-কর্মচারীর অংশগ্রহণে পদযাত্রাটি হাইকোর্টের সামনে গেলে পুলিশ বেরিকেড দিয়ে বাধা সৃষ্টি করে। এসময় কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে সংগঠনের সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ ড. বিনয় ভূষণ রায় পুলিশের এমন আচরণের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বক্তব্য দেন। একই সঙ্গে বিক্ষুব্ধ শিক্ষক-কর্মচারীদের শান্ত করেন ও নির্দেশনা দেন। নির্দেশনা মেতাবেক শিক্ষক-কর্মচারীরা পুনরায় প্রেসক্লাবের সামনে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা করে ফিরে এসে গণঅবস্থান নেন। গণঅবস্থান কর্মসূচিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা দেন, প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতের কোনো বার্তা না পেলে শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) যথারীতি গণঅবস্থান চলবে এবং জুমার নামাজ শেষে আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু হবে। যতদিন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ পাবো না ততদিন আমাদের আমরণ অনশন চলবে। এতে যদি আমাদের মৃত্যুও হয় তবু আমরা কর্মসূচি চালিয়ে যাবো।

শিক্ষকদের এ ঘোষণার পর কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা এলো।

বৈষম্যপূর্ণ এমপিও নীতিমালা সংশোধন, স্তর ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির সিদ্ধান্ত বাতিল ও স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সকল প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্তি করার দাবিতে গত তিনদিন থেকে ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কের পাশে ফুটপাতে বসে শিক্ষক-কর্মচারীরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এমপিওভুক্তির জন্য বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। এ বিষয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকেও সম্মতি দেওয়া হয়েছে। এবছর মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মিলিয়ে ২ হাজার সাতশরও কিছু বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হতে পারে। যেকোনো সময় এমপিওভুক্তির এই তালিকা প্রকাশ করা হতে পারে।

উল্লেখ্য, সর্বশেষ ২০১০ সালে ১ হাজার ৬২৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত হয়েছিল। এরপর থেকে এমপিওভুক্তির দাবিতে শিক্ষক-কর্মচারীদের আন্দোলন চলছে। এমপিওভুক্ত হলে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা সরকার থেকে মাসে মূল বেতন ও কিছু ভাতা পান। বর্তমানে সারা দেশে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রায় ২৮ হাজার। এগুলোতে শিক্ষক-কর্মচারী আছেন প্রায় ৫ লাখ।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn