রিফাত শরীফের বোনের আবেগ আপ্লুত স্ট্যাটাস
ইসরাত জাহান মৌ এর ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকেঃঃ দেশজুড়ে বহুল আলোচিত বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ড। গত ২৬ জুন প্রকাশ্যে দিবালোকে হাজারো মানুষের সামনে ফিল্ম স্টাইলে প্রকাশ্য রাজপথে স্ত্রী মিন্নির সামনে কুপিয়ে হত্যা করা হয় তাকে। সেই রিফাতের ২৬তম জন্মদিন ছিল বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর)। পরিবারের সদস্যরা রিফাতকে হারানোর এ শোক বয়ে বেড়াবে আজীবন। জন্মদিনে রিফাতের ছোটবেলার ছবি আপলোড করে একমাত্র বোন ইসরাত জাহান মৌ ভাইয়ের ভালোবাসা স্মরণ করে আপ্লুত হয়েছেন বার বার। ভাইকে স্মরণ করে ভাই-বোনের ছোটবেলাসহ বিভিন্ন সময়ের ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে মৌ লিখেছেন, শুভ জন্মদিন ভাইয়া। চার মাস আগে এই দিনটা নিয়ে অনেক প্ল্যান করছিলাম। কিন্তু আল্লাহ কবুল করল নারে ভাইয়া। ভাবছিলাম এবার এই দিনটা মনে করব না। কিন্তু আম্মুর জন্য পারলাম না। সকালে নামাজের পর তোর কবরের কাছ থেকে এসে বলে, তোর ভাইয়ার আজ জন্মদিন।’ মৌ আরও লিখেছেন, শেষ পর্যন্ত তোকে ভুলে থাকতে পারলাম না আমরা। ভাইয়া তোর হাসিটা ছিল আমাদের ভালো থাকার কারণ। ছোটবেলা যদি ফুরিয়ে না যেত, কতই না ভালো হতো। তাইনা রে ভাইয়া। অনেক অনেক দোয়া করি, আল্লাহ যেন তোকে জান্নাতুল ফেরদৌসে রাখেন। বাবা-মা আল্লাহর কাছে চলে গেলে সন্তান এতিম হয়ে যায়। আর ভাই আল্লাহর কাছে চলে গেলে বোন হতভাগা হয়ে যায়, তাই নারে ভাইয়া?
আমি এখন সেই হতভাগাদের দলে। পৃথিবীর সবচেয়ে পবিত্র ভালোবাসা ভাই-বোনের ভালোবাসা। সেই সম্পর্ককে কিছু মানুষরূপী জানোয়ার ইতি টেনে দিল। ভালো থাকুক পৃথিবীর সব ভাই-বোন। দোয়া করি আল্লাহর কাছে- যেন তাদের এভাবে কখনো কেউ আলাদা না করে দেয়’ লিখেছেন মৌ। ১৯৯৪ সালের ১৭ অক্টোবর খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাত ১১টা পাঁচ মিনিটে জন্মগ্রহণ করেছিলেন রিফাত শরীফ। গত ২৬ জুন সকালে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে সন্ত্রাসীরা রিফাত শরীফকে প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান তিনি। এ ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখসহ পাঁচ-ছয় জনকে অজ্ঞাত আসামি করে বরগুনা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। বরগুনার আলোচিত রিফাত শাহনেওয়াজ শরীফ হত্যা মামলায় স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ২৪ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দিয়েছে পুলিশ।আসামিদের ১০ জনকে এক খণ্ডে (মূল) এবং ১৪ জনের বয়স ১৮ বছরের কম হওয়ায় শিশু আইনে বিচারের জন্য পৃথক খণ্ডে ওই চার্জশিট দেয়া হয়। মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ায় তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৬ জুলাই রিফাত হত্যা মামলায় মিন্নিকে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ। অথচ এর আগে মিন্নি একজন প্রত্যাক্ষদর্শী স্বাক্ষী হিসেবে দায়েরকৃত এজাহারে ছিলেন।পরে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করলে ঢাকার একটি আইনজীবী দল বরগুনায় গিয়ে মিন্নীর জামিন আবেদন করেন। পরে সেখানে জামিন নামঞ্জুর হলে তিনি হাইকোর্টে জামিন লাভ করেন। এরপর থেকে আয়েশা সিদ্দীকা মিন্নী অনেকটা লোকচক্ষুর আড়ালে চলে যান।