সুনামগঞ্জ  :: একটি মানুষ কোনো অপরাধ না করে সাধারণ জীবন-যাপন করবে এটিই স্বাভাবিক। কিন্তু কোনো অপরাধ না করে আদালত পাড়ায় দৌঁড়াতে হচ্ছে সুনামগঞ্জের আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, আমিনুল হক, আমিরুল হক ও আব্দাল হোসেনকে।  তারা নিজেরাও জানেন না তারা কি অপরাধ করেছিলেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের শহীদ জগৎ জ্যোতি পাঠাগারে অনুষ্ঠিত এ সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্যই জানান ভুক্তভোগীরা। সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী আব্দুল্লাহ আল মাসুদ বলেন, আমি একজন কয়লা আমদানিকারক। সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় আমি কয়লার ব্যবসা করে আসছি। কিন্তু গেলো কয়েকদিন আগে রাতে আমার বাসায় পুলিশ আসে, আমাকে বলে আমার নামে নাকি গ্রেফতারি পারোয়ানা জারি করা হয়েছে ২ বছরের সশ্রম কারাদন্ডসহ। আমি পুলিশের সাথে থানায় গেলে জানতে পারি মাদারীপুরের থানার একটি মাদক মামলায় আমাকে গ্রেফতার ও সাজা প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু আমি কোনদিন মাদারিপুরে যাই নাই তো মাদক মামলায় কিভাবে জড়াবো। পরবর্তীতে আমি খোঁজ নিয়ে জানতে পারি মাদারিপুর এলাকার বাবুল সরদার নামে এক ব্যক্তির মামলা সেটি আমার নামে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন আদালত পাড়ায় আমাকে দৌঁড়াতে হচ্ছে। অন্যদিকে সিআর-২০১২/১৯ (ঢাকা) ভুয়া একটি মামলায় ছাতক উপজেলার আব্দাল হোসেন ২৭দিনের জেল খেটেছেন এবং তার ছোট ভাই কামরান হোসেন ১ দিন জেল খেটেছেন এবং তাদের প্রতিবেশী আমিনুল হককেও একই গায়েবী মামলায় আসামি ও গ্রেফতার করা হয়। বড় ভাই আব্দাল হোসেন ২৭ দিন জেল খাটলেও কামরান হোসেনের অর্নাস দ্বিতীয় বর্ষে পরীক্ষা থাকায় আদালত তাকে জামিন দেন এবং পরবর্তীতে আদালত সবাইকে জামিন দেন।

ভুক্তভোগীরা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমরাও কোন সময় ঢাকায় যাই নাই। তবুও ঢাকার একটি মামলায় আমাদের আসামি করা হয়েছে এবং জেল খাটতে হয়েছে। তারা দাবি করেন কোন একটি কুচক্রি মহল তাদের হয়রানি করার জন্য এসব ভুয়া মামলা দিয়ে গ্রেফতার করাচ্ছে। এসময় তারা সত্য মিথ্যা যাচাই বাচাইয়ের জন্য সঠিক তদন্তের জন্য আহবান জানান। এ সময়  সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ভুক্তভোগীদের আইনজীবী আবুল বাশার, আবু হানিফ নোমান, অ্যাড. আকিক আহমেদ প্রমুখ। পরে ভুক্তভোগীদের পক্ষে আইনজীবী আবুল বাশার বলেন, তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। আমরা আদালত অনুরোধ করেছি বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখার জন্য। পরবর্তীতে আদালত বিষয়টি খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন সিআর-২০১২/১৯ (ঢাকা) নংয়ে কোন মামলার অস্থিত্ব নেই। ফলে আদালত তাদের মুক্তিপ্রদান পূর্বক মামলার দায় হতে অব্যাহতি প্রদান করে। তিনি আরো বলেন, কয়লা আমদানিকারক আব্দুল্লাহ আল মাসুদকেও যে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারি ও সাজা প্রদান করা হয়েছিলো সেটিরও মাদারীপুরে ওসি, কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক জিআর এর সাথে যোগাযোগ করা হলে উল্লেখিত মামলায় আব্দুল্লাহ আল মাসুদ নামে কোন আসামি অভিযুক্ত নেই বলে জানা যায়।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn