একসঙ্গে কোয়ারেন্টিনে থাকার সময়ে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের উপসর্গ থাকা ৫ বছর বয়সী ছেলে কাসিমকে নিজ হাতে খুন করেছেন তুর্কির ৩২ বছর বয়সী সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার সেভার টক্তাস। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর খবর অনুযায়ী, গত ২৩ এপ্রিল নিজের ছেলে কাসিমকে নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন সেভার। কাসিমের গায়ে তখন প্রচণ্ড জ্বর এবং শ্বাসকষ্টও ছিল প্রবল। ফলে ডাক্তাররা কোনো ঝুঁকি না নিয়ে, করোনা উপসর্গ হিসেবে বাবা-ছেলেকে একসঙ্গে কোয়ারেন্টাইনে রাখেন। সেদিনই কয়েক ঘণ্টা পরে বালিশ চাপা দিয়ে নিজের ছেলেকে খুন করেন সেভার। যাতে ধরা না পড়েন তাই সঙ্গে সঙ্গে চিল্লিয়ে ডাক্তারদের ডাকেন তিনি। আগে থেকেই শ্বাসকষ্ট থাকায়, কাসিমের এ মৃত্যুকে করোনা আক্রান্ত হয়ে অন্যান্য মৃতের মতোই গণ্য করেন ডাক্তাররা। পরদিন দাফন করা হয় ছোট্ট কাসিমকে। পরিবারের সদস্যরা কাসিমের মৃত্যুর কারণ হিসেবে কোভিড-১৯ই ধরে নেন। কাসিমের কবরের একটি ছবি তুলে সেভার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেন। সঙ্গে লিখেন, ‘কখনও পৃথিবীর ওপর নির্ভর করো না।’ কিন্তু দাফনের দশ দিন পর নিজ থেকে থানায় যান সেভার এবং বর্ণনা দেন আসল ঘটনার। তিনি জানান, যখন হাসপাতালে কেউ ছিল না, তখন বালিশ চাপা দিয়ে তিনিই ছেলেকে হত্যা করেছেন। কারণ ছোট ছেলের প্রতি তার কোনও ভালোবাসা ছিল না। ঘটনার বর্ণনা দেয়া জবানবন্দিতে তিনি বলেন, পিঠের ওপর ভর দিয়ে শুয়ে ছিল সে (কাসিম)। আমি ওর মুখে বালিশ চেপে ধরি। টানা ১৫ মিনিট সেটি ধরে রেখেছিলাম। আমার ছেলের তখন অনেক কষ্ট হচ্ছিল। যখন আর নড়াচড়া করছিল না, তখন বালিশ উঠিয়ে নেই। সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারদের ডেকে নেই। যেন কেউ আমার ওপর সন্দেহ না করে। তিনি জোর দিয়ে জানান, তার কোনও মানসিক সমস্যা নেই। শুধুমাত্র ভালোবাসতেন না বলেই মেরে ফেলেছেন ছোট ছেলে কাসিমকে।

এ ঘটনায় এরই মধ্যে মামলা হয়েছে সেভারের নামে। হত্যার দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে তাকে। তুর্কির আদালত কাসিমের মরদেহ কবর থেকে তুলে ময়নাতদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। এছাড়া পুরো ঘটনার তদন্ত এখনও চলছে। ৩২ বছর বয়সী সেভার টক্তাস ২০০৭ থেকে ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে তুর্কির সর্বোচ্চ পর্যায়ের লিগে সাতটি ম্যাচ খেলেছেন। সবশেষ বুরসা ইয়েলদ্রিম স্পোরের হয়ে খেলেছেন তিনি।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn