ঝলমলে শোবিজ দুনিয়া। তারকার মেলা। এই ঝলমলে দুনিয়ার আলো মেখে অনেকেই নিজেকে আলোকিত করেন। পৃথিবীকে জানান দেন। কেউ কেউ প্রতিনিধিত্ব করেন দেশকেও। কাজ করে পরিশ্রমের কল্যাণে তারকার তকমা নিয়ে সবার মাঝে সমাদৃত হন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে নিয়ে যান অনন্য উচ্চতায়। পত্রপত্রিকায় বিনোদন পাতায় বড় হরফে নাম ওঠে সেসব তারকার ভক্তমহলে চলে নানা আলোচনা। কিন্তু এর মাঝ থেকেই কেউ কেউ পিছু হটেন। শোবিজ দুনিয়াকে ‘গুডবাই’ বলে বেছে নেন আপন ভুবন। নেপথ্যে কারণ থাকে কারো ব্যক্তিগত আর কারো আত্মোপলব্ধি। হ্যাঁ, শোবিজ জগতে এমন ঘটনা নিহায়েত কম নয়। কয়েক বছর আগে মিডিয়াকে বিদায় জানান জনপ্রিয় অভিনেত্রী হাসিন রওশন জাহান। প্রস্তুতিটা আগের হলেও হুট করেই ঘোষণা দেন ক্যামেরার সামনে আর কাজ না করার। ২০১১ সালে ভিট-চ্যানেল আই টপ মডেল প্রতিযোগিতায় সেরার মুকুট জয় করে মিডিয়ায় ক্যারিয়ার শুরু হয় হাসিনের। এরপর বিজ্ঞাপনচিত্র ও নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে দারুণভাবে সাড়া জাগান তিনি। দেশের নানা প্রান্তে অনেক ভক্তও তৈরি হয় এই অভিনেত্রীর। কিন্তু ব্যক্তিগত কারণে মিডিয়া থেকে সরে দাঁড়ান হাসিন।

২০১৬ সালে বিদায় নেয়ার সময় গণমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, এটা আমার একান্ত ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। এখন থেকে পুরো সময়টাই আমি পরিবারের সঙ্গে কাটাতে চাই। বিয়ের পর আমার স্বামী মারুফ আমাকে যথেষ্ট স্বাধীনতা দিয়েছেন, সেসঙ্গে আমার পরিবারও। এখন তাদের সময় দিতে চাই। তাই কারও কোনো চাপে নয়, আমি নিজেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কারণ, আমি জানি একদিন না একদিন আমাকে অভিনয় ছাড়তেই হবে। তাই আগেই চলে গেলাম এখান থেকে। হাসিনের বিদায়ের পর ঘোষণা না দিয়ে অনেকেই মিডিয়া ছেড়েছেন।

অবশ্য তার বছর চারেক পর আবার ঘোষণা দেন জনপ্রিয় মডেল-অভিনেত্রী সুমাইয়া জাফর সুজানা। এই অভিনেত্রীর ছেড়ে দেয়ার কারণটা ভিন্ন। অনেকটা ধর্মীয় উপলব্ধি থেকে শোবিজ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন সুজানা। ১৬ বছরের ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক, বিজ্ঞাপনচিত্র আর মিউজিক ভিডিওতে কাজ করে ব্যাপক তারকাখ্যাতি পান তিনি। কিছুদিন আগে থেকেই ধর্মে কর্মে বেশি মনোনিবেশ করেন সুজানা। তাই শোবিজ জগৎ থেকে নিজেকে আড়ালে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

গণমাধ্যমকে সুজানা বলেন, গত ৩ মাসে কোরআন, হাদিস থেকে যা শিখেছি সেখান থেকে আমি যে শান্তি পেয়েছি, তা আগে কখনই পাইনি। আমার মন থেকে মিডিয়ায় কাজের ইচ্ছে নষ্ট হয়ে গেছে। তাই আমি মিডিয়াতে আর কাজ করবো না। ২০০১ সালে মডেলিংয়ের মাধ্যমে মিডিয়ায় যাত্রা শুরু করেন সুজানা। ২০০৩ সালে তিনি লাক্স ফটোসুন্দরী খেতাব পান। এরপর অনেক বিজ্ঞাপন, মিউজিক ভিডিও, নাটকে তার দেখা মিলেছে। গত ৩ বছর ধরে মিডিয়াতে অনিয়মিত সুজানা। বর্তমানে বুটিক্স ব্যবসা করছেন। এদিকে সুজানার পথ ধরে আগে থেকেই ধর্মে কর্মে মন দিয়েছেন আরেক অভিনেত্রী এ্যানি খান। করোনার মধ্যেই তিনি উপলব্ধি করেন, শোবিজ জগতে কাজ করে ঈমান আমল বিফলেই যাবে। যে কারণে সে পথ ছেড়ে নিজেকে ইসলামের আদর্শে প্রতিষ্ঠা করা শুরু করছেন এ্যানি। তিনি বলেন, করোনার ছুটিতে নিজেকে অন্যভাবে খুঁজে পেয়েছি। জীবনে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। অনেকেই এ ছুটি শেষ হওয়ার প্রহর গুনেছেন। আর আমি তা কাজে লাগিয়েছি ইবাদত বন্দেগির মাধ্যমে। প্রতিনিয়ত মহান আল্লাহকে ডেকেছি। নামাজ আদায় করছি। আল্লাহ চাইলে কিনা পারেন। আমি আল্লাহর রাস্তায় হাঁটছি। এটা বলতেই যেন শান্তি অনুভব করি প্রতিনিয়ত। শিশুশিল্পী হিসেবে ক্যারিয়ার শুরুর পর টিভি নাটক ও উপস্থাপনায় নিজের ক্যারিয়ার বিস্তৃত করেছিলেন এ্যানি। প্রায় দুই যুগেরও বেশি সময় এই অঙ্গনে সক্রিয় ছিলেন এই সুদর্শনী।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn