মনোয়ার চৌধুরী, সুনামগঞ্জ:-সুনামগঞ্জ পৌর শহরের রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা,দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় সুনামগঞ্জের ট্রাফিক পয়েন্ট থেকে ষোলঘরের প্রধান সড়কের বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় অসংখ্য খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তাটি এখন যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তাটির অবস্থা আরো শোচনীয় হয়ে পড়ে। এছাড়াও রাস্তার অধিকাংশ ছোট বড় খানাখন্দে বৃষ্টির পানিতে জমে থাকার কারণে প্রায়ই  ঘটছে দুর্ঘটনা, প্রতিদিনই লেগে থাকছে যানজট। আর এতে  পৌরবাসীর ভোগান্তির শেষ নেই।  সুনামগঞ্জের পৌর শহরের আলফাত স্কয়ার (ট্রাফিক পয়েন্ট) এলাকাটি প্রধানমত ব্যস্ত এলাকা। এই পয়েন্ট থেকে শুরুকরে ডিএস রোডের উকিলপাড়া, কাজির পয়েন্ট, ষোলঘর পয়েন্ট এলাকা পর্যন্ত রাস্তাটিতে ছোট বড় খানাখন্দগুলো দিন দিন আরও বড় আকার ধারণ করে মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিনই কোন না কোন স্থানে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন স্থানীয় নাগরিকরা।এ ব্যাপারে পৌর কর্তৃপক্ষের এমন উদাসীনতায় নাগরিকদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ । শহরের চায়ের দোকানগুলো থেকে শুরু করে রিকশা- অটোরিকশা যাত্রীদের আলোচনায় ও হাট বাজারে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিনত হয়েছে পৌর শহরের বেহাল অবস্থার বিষয়টি। সামাজিক যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ফেসবুকেও হচ্ছে আলোচনা-সমালোচনা।

শহরের এই ব্যস্ত রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন  উকিলপাড়া,কাজিরপয়েন্ট, ষোলঘর, বনানীপাড়া, আলীপাড়া, বলাকা, ধোপাখালি, নবীনগর, ধারারগাঁও, বিলপাড়, মোহাম্মদপুর মাইজবাড়ি সহ শহরের অভ্যন্তরের ও দুর দুরান্তের নাগরিকেরা চলাচল করেন। প্রায় কয়েক লাখ মানুষ ও কয়েক হাজার যানবাহন চলাচল করে এই রাস্তাটি ধরে। প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করতে তাদের সকলকে। দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সুনামগঞ্জবাসী। কিন্তু এসব দেখার যেনো কেউ নেই। পৌর কর্তৃপক্ষের উন্নয়ন কর্মকান্ডের নামে যতো অব্যবস্থাপনা ও অপরিকল্পিত কর্মপন্থা আরও সৃষ্টি করেছে জনভোগান্তি। যত্রতত্রই চলছে রাস্তা খুড়াখুরি। গুরনুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলো কেটে পুনরায় মেরামতের কোন উদ্যোগ চোখে পরছেনা। কেটে রাখা রাস্তাগুলো এখম মরণ ফাঁদ। স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে অভিযোগ করেন পৌরশহরের প্রধান সড়ক আলফাত স্কয়ার (ট্রাফিক পয়েন্ট )- ষোলঘর পয়েন্ট রাস্তাটি পৌর কর্তৃপক্ষের চরম অবহেলায় পরে আছে, উন্নয়নের আশ্বাসের উপর ভর করেই কেটে গেছে মেয়র নাদেরের সময়কাল। কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বরং রাস্তা ঘাটের বেলার দশায় বেড়েছে জনচলাচলে ভোগান্তি।  পৌরশহরের ষোলঘর এলাকার বাসিন্দা মিজান আহমেদ বলেন, ‘রাস্তা নিয়ে কি আর বলবো? পৌরসভার রাস্তা গুলোর সমস্যার শেষ নেই। আমরা প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে শুধুমাত্র অবহেলার কারণে।  রাস্তাটি দ্রুত সংস্কারের জন্য পৌরসভার সুদৃষ্টি কামনা করছি। শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলো যথাযথ টেকসই করে কাজ করা হচ্ছে না’। 

শহরের উকিলপাড়া এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা নাম প্রকাশের অনিচ্ছা জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন ‘পৌরসভার রাস্তাগুলো জগলুল ভাইয়ের সময়ে কেউ কাটতে পারেনি, এমন অবস্থা তার সময়ে আমরা কখনো দেখিনি, তার আপন ছোটভাই মেয়র হলেও এমন বেহাল চিত্র এর আগে আমরা কোনদিনও দেখিনি, কেবল পৌর কর্তৃপক্ষের অবহেলা আর দুর্নীতিবাজদের কারণে আজকে এই অবস্থা সবকিছুর। উন্নয়নের আশ্বাসেই দিন চলে যায়। তিনি পৌর নাগরিকদের দুর্ভোগের কথা মাথায় রেখে পৌর কর্তৃপক্ষকে যত দ্রুত সম্ভব রাস্তাগুলো মেরামতের উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানান। এর বাইরেও শহরের হাসপাতাল রোডের খানাখন্দ রোগীদের তীব্র ভোগান্তিতে ফেলেছে। মমিনুল মউজদীন সড়কের কিছু এলাকায় রাস্তা কেটে জনভোগান্তি সৃষ্টি করা হয়েছে। বাধনপাড়া, নতুনপাড়াসহ বেশ কিছু এলাকায় পানির পাইপ লাইনের সংস্কারের নামে রাস্তা কেটে রাখার পর সেগুলো এখনো মেরামত করে দেয়া হয়নি। এতে ঘটছে দুর্ঘটনা। এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখত বলেন ‘ইতিমধ্যে আমাদের শহরের আলফাত উদ্দিন স্কয়ার(ট্রাফিক পয়েন্ট)-ষোলঘর পয়েন্টের রাস্তাটির সংস্কার কাজের টেন্ডার হয়েছে, এবং টিকাদার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বর্ষা মৌসুম অর্থাৎ বৃষ্টি শেষ হওয়ার অপেক্ষায় আছি। টানা রৌদ ছাড়া বৃষ্টিকালে বিটুমিন দিয়ে রাস্তার কাজ করা সম্ভব না। আমরা আসা করি আগামী ২মাসের মধ্যে রাস্তার কাজ শুরু করতে পারবো। বাকি কাজগুলোও শুরু হয়ে যাবে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn