বার্তা ডেস্ক :: কোভিড-১৯ এর সুযোগে ২০২০ সালের শুরু থেকেই চীন তাইওয়ান প্রণালী, দক্ষিণ চীন সাগর ও পূর্ব চীন সাগরে বারবার যুদ্ধবিমান ও যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়েছে। আর এটা করেছে নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করতে। যেটা প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটাচ্ছে। চলতি বছরের মে মাসে চীনা সৈন্যরা লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা লঙ্ঘন করে। এরপর থেকেই ভারত ও চীনের মধ্যে সীমান্ত বিরোধ চলে আসছে।  এর জের ধরে ১৫ জুন দেশ দু’টির সৈন্যদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় উভয়পক্ষের সেনারা হতাহত হয়। এ ঘটনায় ভারত তাদের পক্ষে নিহত ও আহতের বিষয়টি নিশ্চিত করলেও চীন হতাহতের বিষয় নিয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।

ভারত, আমেরিকা, তাইওয়ান এবং দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে উত্তেজনার মধ্যেও চীনের অনলাইন গণমাধ্যমে একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে চীনের পিপলস আর্মির সেনা ও অফিসারদের বলতে শোনা গেছে যে,  যদি দেশের জন্য মৃত্যু হয়, তাহলে পরিবারকে বিদায় চিঠি লেখার বিষয়ে। এই চিঠিকে চীনের সেনা ও কর্মকর্তাদের নিজ দেশের জন্য ত্যাগ ও আনুগত্যের চরম নিদর্শন হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। আর এই চিঠির মাধ্যমে চীনা বাহিনী নিজেদের যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করার চেষ্টা করছে। একই সঙ্গে সৈন্যদের মনোবল বাড়াতেও কাজ করছে। বর্তমানে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি বিভিন্ন ইস্যুতে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে রয়েছে। তাই দেশটির সাধারণ মানুষের মনোযোগকে ডাইভার্ট করে তারা যুদ্ধ যুদ্ধ হাইপ তুলছে। আর এটা মনোযোগ অন্য দিকে ধাবিত করার জন্য বেশ কার্যকর। যাইহোক, চীনের কমিউনিস্ট পার্টি তাদের সেনাবাহিনীকে যুদ্ধের প্রান্তে ঠেলে দিতে প্রস্তুত কিনা সেটি এখনও স্পষ্ট নয়। পরিবারকে বিদায় চিঠি লেখার প্রচারণাটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল দেশটির ফুজিয়ানা রাজ্যে। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কূটনীতি, বিশেষত হংকংয়ে জাতীয় সুরক্ষা আইন পাস পশ্চিমা বিশ্বকে ক্ষুব্ধ করেছে। একই সঙ্গে আমেরিকার নেতৃত্বে একটি বৈশ্বিক জোট তৈরি করেছে।

চীনের কমিউনিস্ট পার্টি তিব্বত থেকে তাইওয়ান প্রণালী পর্যন্ত সামরিক মহড়া শুরু করেছে। তারা এরকম যুদ্ধাবস্থা তৈরি করেছে। সামরিক মহড়া দেওয়ার সময়ে দেশটি ভারত, তাইওয়ান, জাপান এবং দক্ষিণ চীন সাগরের অন্যান্য দেশের সীমানা লঙ্ঘন করেছে। জুনের মাঝামাঝি সময়ে গালওয়ান সংঘর্ষ চীনের কমিউনিস্ট পার্টি (সিসিপি) ও পিপলস আর্মিকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে যে, যেকোনো স্থানীয় দ্বন্দ্ব সবসময় একতরফা হয় না। একই সঙ্গে এতে উভয় পক্ষের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি হয়। সিসিপি এবং পিএলএ এখনো হতাহতদের মোকাবেলায় প্রস্তুত না। চীনের জন্য চরম ত্যাগ স্বীকার করা সেনাবাহিনীর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সেনা এখনো নিখোঁজ রয়েছে। আর এটি সাধারণ মানুষের মধ্যে নেতিবাচক ধারণা তৈরি করতে পারে। এই ধরণের চিঠি চীনা সেনাদের এবং স্থানীয় জনমতের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে। তবে, এই চিঠি লেখা পিপলস আর্মির মধ্যে আস্থার অভাবকে প্রতিফলিত করে। যদিও সেনাবাহিনীর সদস্যরা নিজেদের শত্রু-দেশের সঙ্গে যুদ্ধ করে বিজয় ছিনিয়ে আনতে কাজ করে। সেনাবাহিনী যুদ্ধক্ষেত্র থেকে বিজয় নিয়ে ফিরে আসে, যুদ্ধক্ষেত্রে নিজের শোক বার্তা লিখতে যায় না।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn