আসিফ মহিউদ্দিন(ফেসবুক থেকে)-ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রো এবং তাঁর স্ত্রীকে নিয়েও ব্যঙ্গবিদ্রূপ বা ট্রল করেছিল শার্লি এবদো। কী নিয়ে? সেই ট্রলের বিষয়বস্তু কী ছিল? ম্যাক্রোর স্ত্রী তাঁর থেকে বয়সে প্রায় ২০ বছরের বড়। এবং এটা নিয়ে হাস্যরসাত্মক কার্টুন বানিয়েছিল শার্লি এবদো। প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রো এই নিয়ে সমালোচনাও করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, এই কার্টুন খুবই পুরুষতান্ত্রিক এবং নারীর প্রতি অবমাননাকর। কিন্তু তিনি শার্লি এবদোর কার্টুন আঁকার অধিকারের বিরুদ্ধে একটি কথাও বলেননি।
কারণ শার্লি এবদোর যদি কার্টুন আঁকার অধিকার থাকে, তাঁরও সেই কার্টুনের সমালোচনার অধিকার রয়েছে৷ তিনি সেই অধিকারের চর্চা করেছেন। কিন্তু শার্লি এবদোর কার্টুন আঁকার অধিকারের বিপক্ষে দাঁড়াননি। ইউরোপের বাক স্বাধীনতার বিষয়টিই এমন। বাংলাদেশ বা মুসলিম প্রধান দেশগুলোর মানুষের পক্ষে এই বিষয়টি বোঝা কঠিন। কারণ, এই কাজটি বেশির ভাগ মুসলিম দেশে ঘটলে সেই কার্টুনিস্টকে পুলিশ তুলে নিয়ে গিয়ে ক্রসফায়ারে দিয়ে দিতো। বা হাসিনার অনুগত ছাত্রলীগের কর্মীরা বাড়িতে আগুন দিতো। দিনে দুপুরে গুম হয়ে যেতে হতো। কিন্তু প্রবল ক্ষমতাবান ফরাসী প্রেসিডেন্টের সেই ক্ষমতাটুকুই নেই। তিনি শুধু ঐ কার্টুনটির সমালোচনা করতে পারবেন। এর চেয়ে বেশি তাঁর পক্ষে করা সম্ভব না।
জার্মানিতে আমি রাস্তায় এঞ্জেলা মারকেলের নগ্ন কার্টুন দেখেছি। যিশুকে নিয়ে ঠাট্টা তামাশা, পোপদের নিয়ে হাসাহাসি, এগুলো এখানে ডালভাত। এই দেশের সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে, জনগণ যেন কোন প্রকার ভয়ভীতি ছাড়াই সরকারের সমালোচনা, ট্রল, কার্টুন এবং নিজের মত প্রকাশ করতে পারে, তা নিশ্চিত করা। এটি নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার৷ কোন ক্ষমতাবানের সাধ্য নাই, এই অধিকার হরণ করে। কোন প্রকার ভয়ভীতি, আতঙ্ক, দমনপীড়নের আশঙ্কা ছাড়াই মানুষ যেন তাদের মত প্রকাশ করতে পারে, সেটাই এই দেশগুলোর সাংবিধানিক অধিকার। আপনি সেই কার্টুনের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারেন, সমালোচনাও করতে পারেন। কিন্তু ভয় দেখাতে পারবেন না৷ স্বাধীনতা হরণ করতে পারবেন না। আমি এই অধিকারের পক্ষে।

 

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn