বার্তা ডেস্ক:  ইতিহাস তৈরির সন্ধিক্ষণে দিল্লি ক্যাপিটালস। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের সামনে ফের ট্রফি ধরে রাখার সুযোগ। ৫২ দিনের দীর্ঘ লড়াই শেষে মঙ্গলবার (১০ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত হচ্ছে ফাইনাল। দু’দলেই রয়েছেন তারকা ক্রিকেটার, একাধিক ম্যাচ উইনার। উত্তেজক লড়াইয়ের অপেক্ষায় ক্রিকেটপ্রেমীরা। রোহিত শর্মার পরীক্ষা নিতে তৈরি কাগিসো রাবাদা। অন্যদিকে শিখর ধাওয়ানকে শান্ত রাখার চেষ্টা করবেন যশপ্রীত বুমরা। লড়াইটা বুমরা বনাম রাবাদারও। ১৪ ম্যাচে বুমরার উইকেট সংখ্যা ২৭। দুই ম্যাচ বেশি খেলে রাবাদা নিয়েছেন ২৯টি। ফাইনালে দুই পেসারের ওপরেই নির্ভরশীল দু’দল। এদিকে, আজ ২০০তম আইপিএল ম্যাচ রোহিত শর্মার। একই সঙ্গে ফাইনালও। দারুণ এক অনুভূতি নিয়ে নামছেন হিটম্যান। রাহুল চাহারের পরিবর্তে জয়ন্ত যাদব জায়গা পেয়েছেন মুম্বইয়ের প্রথম একাদশে। দিল্লি শিবির অবশ্য দলে কোনও পরিবর্তন আনেনি। এর মাঝেই টস জিতে ফাইনালে আগে ব্যাটিং নিলেন দিল্লি অধিনায়ক শ্রেয়াস আয়ার। স্কোর বোর্ডে বড় রান করে মুম্বাইয়ের ওপরে চাপ তৈরি করাই লক্ষ্য দিল্লির। তবে প্রথম বলেই দিল্লি শিবিরে আঘাত হানেন ট্রেন্ট বোল্ট। শিখর ধাওয়ানের সঙ্গে ওপেন করতে নামেন মার্কাস স্টইনিস। আগের ম্যাচেও ওপেন করতে নেমে ঝড় তুলেছিলেন এই অজি। তবে সব দিন যে একরকম নয়, এ দিন ট্রেন্ট বোল্টের প্রথম বলেই কুইন্টন ডি ককের গ্লাভসে ক্যাচ দিয়ে মাঠ ছাড়েন স্টইনিস। শট খেলবেন কি-না, তা নিয়ে দ্বিধায় ছিলেন এই মারকূটে। শেষ মুহূর্তে শট খেলতে গিয়েই বিদায় নিতে হয় তাকে। খাতাও খোলা হয়নি এদিন। শুরুতেই এই উইকেটের খোঁজে ছিল মুম্বাই। সেটা তারা পেয়েও গেলো।

শিখর ধাওয়ান ও আজিঙ্কা রাহানের ওপর নির্ভরশীল ছিল দিল্লি। দুই তারকা ব্যাটসম্যানের অভিজ্ঞতা অনেক। সেই অভিজ্ঞতা দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারতেন তাঁরা। কিন্তু বোল্টের আগুনে বোলিংয়ে রাহানেকেও ফিরতে হলো দ্রুত। মাত্র ২ রান করেন এই ডানহাতি। ১৬ রানে ২ উইকেট পড়ে যায় দিল্লির। এমন অবস্থায় নেমেই বিপজ্জনক শট খেলেন অধিনায়ক শ্রেয়াস। যদিও সে যাত্রায় বাউন্ডারি পান তিনি। পরের বলেই দিয়েছিলেন ক্যাচ তুলে। তবে ভাগ্য সহায় ছিল অধিনায়কের। তাই তো ক্যাচটি ধরতে পারেননি বোল্ট। এ অবস্থায় চতুর্থ ওভারে বুমরাকে সরিয়ে জয়ন্ত যাদবকে আক্রমণে আনেন রোহিত। মুম্বাই অধিনায়কের এহেন সিদ্ধান্তের সমালোচনা করছিলেন কিংবদন্তী সুনীল গাভাস্কার। তাঁর যুক্তি- দুই উইকেট হারিয়ে চাপে এখন দিল্লি। বুমরাকে আক্রমণে রেখে দেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু ধাওয়ানের মতো অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান ধৈর্য হারিয়ে এমন হতশ্রী শট খেলবেন, তা কে ভেবেছিলো? জয়ন্তের সোজা বল ভেঙে দিল ধাওয়ানের উইকেট। তিন বাউন্ডারিতে ১৫ রান করেন বাঁহাতি ওপেনার। ফলে ৪ ওভারে দিল্লির স্কোর দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ২৫। যা নিয়ে স্বপ্নের ফাইনালে রীতিমত চাপে চিঁড়ে চ্যাপ্টা শ্রেয়াসের দল।

এবারের আইপিএলে এখনও পর্যন্ত মুম্বাইকে একবারও হারাতে পারেনি দিল্লি। বরং তিন সাক্ষাতেই হেরেছে আইয়ার বাহিনী। টুর্নামেন্ট চলাকালীন চোটের জন্য অমিত মিশ্র, ইশান্ত শর্মারা ছিটকে গিয়েছেন। তবুও দমানো যায়নি দিল্লিকে। তরুণ অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ারের নেতৃত্বে প্রথমবার ফাইনালে তারা। মার্কাস স্টইনিস, রাবাদা, ধাওয়ানরা দিল্লির ভরসা। অন্যদিকে, চেন্নাই সুপার কিংসের কাছে হেরে টুর্নামেন্ট শুরু করেছিল রোহিতের দল। কিন্তু মুম্বাই দলে অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের সংখ্যা যে বেশি। প্রথম ম্যাচে হারের ছাপ পড়েনি লিগ বা প্লে অফে। ফাইনালের আগে অবশ্য একদমই উত্তেজিত নন হার্দিক পান্ডিয়া, রোহিতরা। কারণ তাঁরা আগেও ফাইনাল খেলেছেন। বড় ম্যাচে নিজেদের কীভাবে প্রয়োগ করতে হয়, তা জানেন। দিল্লি সেই জায়গায় অনভিজ্ঞ। তবে ফাইনালের আগে তাদের উজ্জ্বীবিত করছে একটাই তথ্য। জিতলে প্রথমবার আইপিএল ট্রফি যাবে দিল্লিতে।-স্পোর্টস নিউজ

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn