বিশেষ প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জ পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের তেঘরিয়া পীরবাড়ি আবাসিক এলাকায় ড্রেইন নির্মাণের ফলে সাংবাদিক আশিক পীরের বসতভিটের দেয়াল ভেঙ্গে যাওয়ার উপক্রম হয়ে দাড়িয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় সরজমিনে গিয়ে এ অবস্থা পর্যবেক্ষন করে এসেছেন সাংবাদিকরা। জানা যায়,জিওবির অর্থায়নে পিডি/এসপিআইআই/আরডি প্যাকেজ প্রকল্পের আওতায় ড. মকব্বির আলী সাহেবের বাসা থেকে পীরবাড়ি সংলগ্ন রাস্তায় ড্রেইন নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় নতুন ড্রেইন নির্মাণের কাজ শুরু করেছে সুনামগঞ্জ পৌরসভা।

কাগজেপত্রে মেসার্স মাহবুব এন্টারপ্রাইজ নামে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ঐ কাজটির কার্যাদেশ পেলেও বাস্তবে কাজ করছেন শহরের নতুনপাড়ার জনৈক বাবুল। এছাড়া ৭নং ওয়ার্ডের তেঘরিয়া পীরবাড়ির ড্রেইন নির্মাণ প্রকল্পের স্থানে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে ২নং ওয়ার্ডের বিহারী পয়েন্টের লে: কর্ণেল লিটন রোড থেকে সদর হসপিটেল পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ কাজের সাইনবোর্ড। ড্রেইনের কাজ শুরু করার পূর্ব থেকেই আশিক পীর তার বাসার দেয়ালটি ঠিকমতো সংরক্ষণ করে যথাস্থানে ড্রেইনের কাজ শুরু করার জন্য পৌর মেয়র, নির্বাহী প্রকৌশলী ও সংশ্লিষ্ট সকল প্রকৌশলীসহ ঠিকাদারের ভাগিদার বাবুল এর সাথে দফায় দফায় আলাপ করে যাচ্ছেন। কিন্তু কেউই তার কথা আমলে নিচ্ছেননা।

একপর্যায়ে আশিক পীর ও পাড়া মহল্লার লোকজনের আপত্তির মুখে গত ১৯ সেপ্টেম্বর রোববার থেকে মূল সীমানার বাইরে গিয়ে দেয়াল ঘেষে সোজা না করে বাকানোভাবে আশিক পীরের প্রবাসী চাচা অধ্যাপক হাফিজুর রহমান পীরের বাসার দেয়াল ঘেষে ড্রেইন নির্মাণের কাজে হাত দেন ঠিকাদারের ভাগীদার বাবুল। এতে করে বৃহস্পতিবার বিকেলে হুমকীর মুখে পড়ে ঐ বাসভবনটির দেয়াল। ইতিমধ্যে দেয়ালে দেখা দিয়েছে ফাটল এবং দেয়ালের নীচ দিকে ভিটের মাটি ধ্বসে পড়ছে পৌরসভার ড্রেইনে। দেয়ালটি যাতে ধ্বসে না পড়ে সেজন্য বাঁশ দ্বারা ঢিকে দিয়ে দেয়ালটিকে রক্ষা করার ব্যর্থ চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

সুনামগঞ্জ পৌরসভা ড্রেইন নির্মাণের নামে কেন এবং কোন যুক্তিতে সাংবাদিক আশিক পীরের বাসভবনের দেয়াল ভেঙ্গে দেয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে জানতে চেয়ে পৌরসভার মেয়র নাদের বখত এর মুঠোফোনে কল করলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা যায়নি। মেয়র সাহেব ঢাকায় আছেন উল্লেখ করে নির্বাহী প্রকৌশলী মীর মোশাররফ হোসেন বলেন, কারো কোন ক্ষতি হউক আমরা তা চাইনা। আশিক পীরের বাসার দেয়াল ভেঙ্গে গেলে আমরা তাঁর দেয়াল পুনরায় নির্মাণ করে দেব। তিনি শুক্রবার সরজমিনে গিয়ে ড্রেইনের নির্মাণ কাজ সঠিকভাবে হচ্ছে কিনা তা তদারকি করবেন বলে জানান।

এই মুহুর্তে ঢাকায় ব্যস্ত রয়েছেন উল্লেখ করে ঠিকাদার মাহবুবুর রহমান বলেন, আমার লাইসেন্স নিয়ে কার্যাদেশ পেলেও পূজি বিনিয়োগসহ সকল কাজ করছে বাবুল। আমি তাকে বলে দিচ্ছি যাতে ড্রেইন নির্মাণ করতে গিয়ে তার দ্বারা কারো বাসাবাড়ির কোন ক্ষতিসাধিত না হয়। সুনামগঞ্জ পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের নির্বাচিত কাউন্সিলর আহসান জামিল আনাছ বলেন, আমি সরজমিনে গিয়ে ড্রেইন নির্মাণে কোন ত্রুটি বিচ্যুতি হচ্ছে কিনা তা দেখার পরে মেয়র সাহেবকে বলে ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

ঠিকাদারের ভাগীদার বলেন, ড্রেইন নির্মাণে অভিযোগের ব্যাপারে সকালে আলাপ করবো। সাংবাদিক আশিক পীর বলেন, ড্রেইনের নির্মাণ কাজের শুরু থেকে আমি পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে দফায় দফায় অভিযোগ করে যাচ্ছি। কিন্তু তারা আমার কোন কথাই আমলে নিচ্ছেননা। সরাসরি সোজাভাবে ড্রেইনের নির্মাণ কাজ না করে তারা ইচ্ছেকৃতভাবে আমার চাচার বসতভিটের দেয়াল ঘেষে বাকানোভাবে ড্রেইনের কাজ করে যাচ্ছেন। এতে করে আমাদের অপুরনীয় ক্ষতিসাধন করছে সুনামগঞ্জ পৌরসভা। আমি এ ব্যাপারে আইনী পদক্ষেপ গ্রহনের চেষ্টা করছি।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn