জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের কাদিপুর গ্রামে দুই পক্ষের মধ্যে শত্রুতার জের ধরে মামলা পাল্টা মামলা ও লুটপাট এবং অগ্নিকান্ডের ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোন সময় আবারো বড় ধরণের সংঘর্ষের।আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। এ ব্যাপারে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। স্থানীয়রা জানান, বিগত ২০০৭ সাল থেকে কাদিপুর গ্রামের মৃত ইজ্জত আলীর ছেলে সাজাদ মিয়া ও মৃত আরজু মিয়ার ছেলে আবদুর রহিমের লোকজনের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে এক পক্ষ আরেক পক্ষকে ঘায়েল করতে একাধিক মামলাসহ বিভিন্ন কৌশল আঁটছেন। এতে সাজাদ মিয়ার পক্ষে পুরো গ্রামবাসী ও আবদুর রহিমের পক্ষে মাত্র ৪ ঘরের লোকজন অবস্থান নেন।

এ ব্যাপারে সাজাদ মিয়া অভিযোগ করে বলেন, আবদুর রহিমের গডফাদার হচ্ছে তার চাচাতো ভাই সুজন মিয়া। সুজন মিয়ার কথা মতো আবদুর রহিমের লোকজন একের পর এক মামলায় জড়িয়ে আমার পক্ষের লোকজনকে হয়রানী করছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিগত ২০০৭ সালে তাদের পক্ষের এক মেয়ে গ্রামের এক গরীবের ছেলের হাত ধরে বাড়ি ছেলে পালিয়ে আসাকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসীর সাথে তাদের বিরোধ দেখা দেয়। পরে শুরু হয় জায়গা নিয়ে বিরোধ। এ পর্যন্ত তারা আমাদের পক্ষের লোকজনের বিরুদ্ধে মোট ১৭টি মামলা দায়ের করেন। এর মধ্যে ১২ টি মামলা নিস্পত্তি হলেও বর্তমানে ৫ টি মামলা চলমান রয়েছে। এর মধ্যে গত ১৭ এপ্রিল সাঁকো থেকে পড়ে গিয়ে তাদের পক্ষের আরশ আলী আহত হলেও তারা আমাদের লোকজনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। অবশেষে গত ১৯ মে ভোররাতে তারা লুটপাট ও অগ্নিকা-ের একটি ঘটনা সাজিয়ে আমাদেরকে ফাসানোর চেষ্টা করছে। তাদের যন্ত্রনায় আমরা গ্রামবাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি।

এ ব্যাপারে প্রতিপক্ষের আবদুর রহিম অভিযোগ করে বলেন, পুরো গ্রামের লোকজন একজোট হয়ে আমরা ৪ ঘরের মানুষকে জিম্মি করে রেখেছে। তাদের অত্যাচারে আমরা দিশেহারা হয়ে পড়েছি। গ্রামের সরকারি রাস্তা দিয়ে আমরা চলাচল করতে পারিনা। দীর্ঘ প্রায় ৬ মাস ধরে আমাদেরকে নৌকাযোগে চলাচল করতে হচ্ছে। তাদের হামলা-মামলার ভয়ে আমরা সারাক্ষণ আতঙ্কিত থাকি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মারামারি, দোকান লুটপাট ও অগ্নিকা-ের ঘটনা সম্পূর্ণ সত্য। আমার দোকান লুটপাট ও অগ্নিকা-ের ঘটনায় প্রায় লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। জানতে চাইলে স্থানীয় শালিসি ব্যক্তি আলাল হোসেন রানা ও মাস্টার মিজানুর রহমান বলেন, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নানের পিএস আবুল হাসনাত ও জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আকমল হোসেনের নির্দেশে তাদের দুই পক্ষের দীর্ঘদিনের বিরোধটি নিস্পত্তির লক্ষে উভয় পক্ষের সাথে আলোচনাক্রমে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। গতকাল শনিবার দুপুরে সরজমিনে দেখা যায়, কাদির গ্রামের আবদুর রহিমের বাড়ির সামনে গ্রামীণ রাস্তায় তার ছোট একটি পুরনো টিনের দোকান ঘর রয়েছে। এ ঘরটি লুটপাট ও অগ্নিকা-ের ঘটনায় নাকি লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে। যা স্থানীয়দের মধ্যে অনেকে তা মানতে নারাজ। থানায় অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী জগন্নাথপুর থানার এসআই কবির উদ্দিন জানান, ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। তবে তাদের দুই পক্ষের মধ্যে পূর্বের মামলা-মোকদ্দমাসহ বিরোধ থাকায় আরো গভীর তদন্তের প্রয়োজন আছে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn