মুহাম্মদ হাবীবুল্লাহ হেলালী-

দোয়ারাবাজার উপজেলার সবক’টি সড়কের বেহাল দশায় বিপর্যস্থ হয়ে উঠেছে এখন জনজীবন। প্রধান প্রধান সড়কগুলো ছাড়াও গ্রামীণ রাস্তাঘাটগুলো যেন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রতিটি পাকা সড়কের কয়েক হাত দূরে দূরেই বড় বড় গর্ত ও খানাখন্দে ভরপুর। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়েছে সব ক’টি সড়কই। প্রতিটি সড়কে মড়ক লেগে থাকায় দূর্ভোগের জনপদ হয়ে উঠেছে দোয়ারাবাজার উপজেলা। উপজেলার ৫ ইউনিয়নের যোগের একমাত্র প্রধানতম সড়ক দোয়ারাবাজার-বাংলাবাজার (ব্রিটিশ) সড়কটি যান চলাচল তো দূরের কথা পায়ে হেঁটে ভয়ঙ্কর ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। সড়কটির একাধিক সরো ব্রিজ, খোদ উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের কয়েক শ’ গজ অদূরে কালিউড়ী নদীর ব্রিজের দুই দিকের মাটি সরে গিয়ে বড়বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ফকিরের পুলের দু দিকের মাটি সরে গিয়ে বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। খানাখন্দ ও গর্তের মধ্যে জোড়া জোড়া রড দাড়িয়ে থাকায় প্রায় মোটর সাইকেল ও তিন চাকার গাড়ী দুর্ঘটনায় পড়তে হয়।

ওই সড়কে মাঝে মধ্যে সংস্কার ও জোড়া তালির নামে লাখ লাখ টাকা ঠিকাদারদের পকেটে গেলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। আর হবেই বা কিভাবে  এ যেন ক্যান্সার রোগীকে ঝারফুঁক দিয়ে বাঁচানোর ব্যর্থ চেষ্টা জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।   উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগের প্রধান সড়ক দোয়ারাসদর-বাংলাবাজার, বাঁশতলা-হকনগর বাজার, মহব্বতপুর-বোগলা বাজার, মহব্বতপুর-লক্ষ্মীপুর, বালিউড়া-নরসিংপুর, নোয়ারাই-বাংলাবাজার সড়কসহ সবক’টি পাকা রাস্তার বেহাল দশার সৃষ্টি হয়েছে। চরম অসুখি দোয়ারাবাজার-বাংলাবাজার (ব্রিটিশ) সড়কটি সংস্কারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাড়া না পেয়ে চলাচল অযোগ্য হয়ে পড়ে আছে। দীর্ঘদিনেও কমেনি ওই সড়কে জনভোগান্তি। মেরামত কাজের আওতা বহির্ভূত ওই সড়কের ফকিরের পুল নামে খ্যাত সরোব্রিজ দুইদিক ও কালিউড়ী নদীর ব্রিজের দুই তীর ভেঙে বড় ফাঁটলের সৃষ্টি হয়ে এখন আরো তীব্র ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। কয়েক দফা দু’টি ব্রিজে দায়সারা মেরামত কাজ করার কারণে ইতোমধ্যে দু’দিকের মাটি সরে গেছে। মাত্র কয়দিনে ফের ভাঙন ও ফাঁটল ধরে পূর্বের ঝুঁকিপূর্ণ রূপ পেয়েছে।

গত কয়েক দিনে ব্রিজে উঠতে গিয়ে ৩ চাকার অটোরিক্শাসহ মোটরবাইক উল্টে গিয়ে অনেক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। সড়কে বড় বড় গর্তে কাদামিশ্রিত বৃষ্টির পানিতে পিচ্ছিল হয়ে যানবাহন চলাচল তো দূরের কথা মানুষের পায়ে হেঁটে চলাচল করাই যেন কঠিন থেকে আরো কঠিনতর হয়ে পড়েছে। আর প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা তো ঘটছেই। মাত্র ২০ মিনিটের রাস্তা থেমে থেমে পাড়ি দিতে হয় ঘণ্টা দেড়েক সময়ে। ক্ষতবিক্ষত সড়কগুলোতে গত কয়েক বছরে বেশ কয়েক জনের প্রাণহানীসহ অনেককে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে সারাজীবনের জন্য পঙ্গুত্ব বরণ করে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে। এ অভিশপ্ত সড়কে চলাচলের কারণে ভারী যানবাহনসহ মোটরসাইকেল ও ৩ চাকার গাড়ি প্রতিনিয়ত ওয়ার্কশপে লাইন ধরে মেরামত করতে দেখা গেছে।

ছোট যানবাহনের একাধিক চালক ও যাত্রীরা জানিয়েছেন- সবক’টি সড়কের কয়েক হাত দূরে দূরে বড় গর্ত ও ভাঙনের কারণে কোমড় ও বুকের ব্যাথায় চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। কবে যে ওই উপজেলার মানুষজন রাস্তাাঘাটের অভিশাপ থেকে মুক্তি পাবে আমাদের জানা নেই। আর কত ভোগান্তি পোহালে সংস্কারের উদ্যোগ নেবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। রাস্তাঘাটের বেহালবস্থার কারণে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন গাড়ির মালিক-চালকরা। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে সড়কগুলোর করুণ অবস্থার কারণে এখন যাত্রীরা আর গাড়িতে উঠতে চায়না। প্রয়োজনীয় কাজে মাইলের পর মাইল পায়ে হেঁটে যাতায়াত এখন নিরাপদ চলাচল বলে মনে হচ্ছে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn