মো.শাহজাহান মিয়া-

জগন্নাথপুর উপজেলার পাইলগাঁও ইউনিয়নের ঐহারদাস গ্রামের একটি গ্রামীন রাস্তায় মাটি ভরাটের কাজ শেষ না হওয়ায় ৪ গ্রামবাসীর ভোগান্তি চরমে পৌছেছে। এ নিয়ে স্থানীয় ভূক্তভোগী জনতার মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
জানাগেছে, ঐহারদাস গ্রামে ছোট একটি কাচা রাস্তা রয়েছে। এ রাস্তা দিয়ে স্থানীয় ঐহারদাস, তেরাউতিয়া, মাকরকোনা ও দয়ালনগরসহ ৪ গ্রামবাসীর লোকজন চলাচল করে থাকেন। চলতি বছর প্রায় ১৫শ ফুট দৈর্ঘ্যরে এ রাস্তায় মাটি ভরাট কাজ শুরু হলেও শেষ হয়নি। অথচ কাজ শেষ দেখিয়ে বিল তুলে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। হত দরিদ্র কর্মসূচি কর্মসৃজনের ৪০ দিনের কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) সাড়ে ৩ লক্ষ টাকার কাজ পান স্থানীয় পাইলগাঁও ইউনিয়নের ১ ২ ৩ নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী সদস্য রোসনা বেগম। তিনি মাত্র ৭৩ হাজার টাকার মাটির কাজ করিয়ে বাকি টাকা আত্মসাত করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে নারী ইউপি সদস্য রোসনা বেগমের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন ও সুনাগঞ্জ জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে এলাকাবাসী স্বাক্ষরিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।
শুক্রবার সরজমিনে দেখা যায়, রাস্তায় সামান্য মাটি ভরাটের কাজ করা হয়েছে। বাকি রাস্তায় কাজ না হওয়ায় জনগণ চলাচল করতে পারছেন না। এ সময় স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য আবদুল বাক্কি, সাবেক ইউপি সদস্য আবদুস শহিদ, সাবেক নারী ইউপি সদস্য আম্বিয়া বেগম, ইউনিয়ন আ.লীগের সহ-সভাপতি শালিসি ব্যক্তি ইসলাম উদ্দিন, ওয়ার্ড আ.লীগের সভাপতি আবাব মিয়া, সমাজকর্মী রুবেল মিয়া, সিতাব আলী আবদুন নুর, তফজ্জুল হোসেন, মিনার আলী, ছইল উদ্দিন, বাচ্চু মিয়া, কালাই মিয়া, শাহেদ মিয়া, সুহেল মিযা, কদ্দুছ মিয়াসহ স্থানীয় ভূক্তভোগী জনতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের গ্রামের এ রাস্তা দিয়ে ৪ গ্রামবাসীর লোকজন চলাচল করে থাকেন। এ রাস্তার মাটি ভরাট কাজ শেষ না হওয়ায় আমরা চলাচল করতে পারছি না। গ্রামের ইসলাম উদ্দিনের বাড়ির সামন থেকে ইছকন্দর আলীর বাড়ির সামন পর্যন্ত সাড়ে ৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে কাবিটা’র মাটি ভরাটের কাজ পাওয়া নারী ইউপি সদস্য রোসনা বেগম মাত্র ৭৩ হাজার টাকার কাজ করিয়ে বাকি টাকা আত্মসাত করায় আমাদের রাস্তায় কাজ হচ্ছে না। এতে আমাদের ভোগান্তি চরমে পৌছেছে। এছাড়া নারী ইউপি সদস্য রোসনা বেগমের বিরুদ্ধে রিলিফের চাল নিজে নেয়াসহ আরো নানা অনিয়মের অভিযোগ করেন ভূক্তভোগী জনতা। এর মধ্যে প্রতিবাদী যুবক তরুণ সমাজকর্মী রুবেল মিয়া অভিযোগ করে বলেন, পাইলগাঁও ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল তাহিদ নারী ইউপি সদস্য রোসনা বেগমের মামা হওয়ায় দলীয় ক্ষমতার দাপটে তিনি একের পর এক অনিয়ম করে যাচ্ছেন। কাবিটার টাকা আত্মসাতসহ নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন-নিবেদন করেও কোন কাজ না হওয়ায় এলাকাবাসী হতাশ হয়েছেন। উল্টো প্রতিবাদকারীদের বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দেয়া হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, এ ঘটনার সাথে পাইলগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান মখলুছ মিয়াও জড়িত রয়েছেন। এ রাস্তায় মাটিকাটার কাজ করা শ্রমিক সর্দার রাজা মিয়া বলেন, ৪০ দিনের কাজের মধ্যে আমার ২০ জন শ্রমিক মাত্র ৭ দিন রোজ হিসেবে নয়, হাজার হিসেবে মাটি কেটেছেন। এতে মোট ৭৩ হাজার টাকার মাটি ভরাট কাজ হয়েছে। এরপরও ভূয়া নাম দিয়ে মেম্বারনি রোসনা বেগম ব্যাংক থেকে টাকা তুলেছেন। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত নারী ইউপি সদস্য রোসনা বেগম সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, অকাল বন্যার পানি আসায় রাস্তার কাজ শেষ করতে পারিনি। তবে বাকি কাজ অবশ্যই করা হবে। জানতে চাইলে পাইলগাঁও ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী আবদুল তাহিদ বলেন, আমার উপর আনিত অভিযোগ মিথ্যা-বানোয়াট। এদিকে-চেষ্টা করেও পাইলগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান মখলুছ মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ বলেন, বিষয়টি তদন্তের জন্য উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে (পিআইও) দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) শহিদুজ্জামান বলেন, এ ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn