জিয়াউর রহমান লিটন-

দিরাই উপজেলার করিমপুর ইউনিয়নে পানি উন্নয়ন বোর্ড হাওর রক্ষায় স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে বাঁধ স্থায়ী করতে চান্দপুর স্লুইস গেইট নির্মাণ করে। বাঁধ সুরক্ষায় গ্রামবাসী ও স্কুল-কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থীদের রাস্তা চালাচলের সুবিধার্থে বিভিন্ন প্রজাতির কয়েকটি গাছ রোপণ করা হয়। নিজের দাবি করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অনুমোদনের অজুহাত দেখিয়ে ৮-১০টি বড় গাছ কেটে লক্ষাধিক টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন জনৈক সুধাংশু শেখর দাস। যার ফলে হুমকির মুখে পড়ছে স্লুইস গেইট ও হাওররক্ষা বাঁধ চলাচলের রাস্তা। এ নিয়ে বেশ কয়েকদিন ধরে চান্দপুর গ্রামে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে চান্দপুর গ্রামবাসীর পক্ষে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।

গ্রামের লোকজন বলছেন- পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধিনস্থ কালনী নদীর তীরবর্তী চামটি নদীর মুখে  চান্দপুর স্লুইস গেইটের রাস্তা হতে অবৈধভাবে গাছকাটার অভিযোগে আমরা গত ১৫ মে নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিতভাবে অবহিত করি। কিন্তু ১৮ মে একই গ্রামের মৃত সুরেন্দ্র চন্দ্র দাসের ছেলে সুধাংশু শেখর দাস গ্রামবাসীর বাধা উপেক্ষা করে তার বাহিনীর লোকজন দিয়ে ৮টি বড় গাছ কেটে ফেলে। ২১ মে গ্রামবাসীর অভিযোগ তদন্তে ভূমি অফিসের কানুনগো, তহশিলদার ও সার্ভেয়ার সরেজমিনে গিয়ে গাছ কাটার বিষয়ে প্রমাণ পেলেও অভিযুক্ত সুধাংশু দাসের সাথে রফাদফা করে প্রতিবেদন দিতে গড়িমসি করছেন। গাছ কাটার ফলে স্লুইস গেইটের রাস্তার মাটি ধসে পড়ছে। স্থায়ীভাবে নির্মিত হাওররক্ষা বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। পরিবেশের ক্ষতি হবে বলে তারা আশংকা প্রকাশ করছেন।

অভিযুক্ত সুধাংশু শেখর দাস বলেন- “আমি গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে গত ৩০ জানুয়ারি পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে লিখিতভাবে আবেদন করলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের আফসার উদ্দিন স্যার ও খলিল স্যার আমাকে গাছ কাটতে মৌখিকভাবে বলে দেন। এরপর আমি আমার নামীয় ভূমিতে স্লুইস গেইটের উপর দিয়ে জনসাধারণ ও বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের চলাফেরার সুবিধার্থে উক্ত গাছগুলো কাটার উদ্যোগ নেই।”

এদিকে, অভিযোগকারী উপানন্দ চৌধুরী, জীবন সূত্রধর, হিরন দাস, ননীগোপাল দাস, গোপী বর্মন, রঞ্জিত দাস ও সাগর দাসসহ গ্রামের অনেকেই বলছেন- স্লুইস গেইটের উপর দিয়ে জনসাধারণ ও স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীদের চলাফেরার সুবিধার্থে এবং রাস্তা ও বাঁধ সুরক্ষায় বেশ কয়েক বছর আগে গাছ লাগানো হয়েছিল। কিন্তু গ্রামবাসীকে উপেক্ষা করে অভিযুক্ত সুধাংশু দাস রাস্তার পাশে বড় বড় গাছগুলি কেটে কয়েক লাখ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন।

করিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, আছাব উদ্দিন সরদার বলেন- এই জায়গা পানি উন্নয়ন বোর্ড সীমানা নির্ধারণ করে তাদের অন্তর্ভুক্তি করে নেয়। গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে আবেদনের কপি দেখাতে পারলেও অনুমোদনের কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনি সুধাংশ দাস, আমার কাছে গ্রামের লোকজন আসছিল, গাছ কাটতে গেলে গ্রামবাসীকে বাধা দেয়ার কথা বলে দিয়েছি। ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা আবদুল মোতালেব বলেন- “প্রথমদিকে কানুনগো বশির আহমদে তদন্তে যান। পরে স্যার আমাকে বললে আমি ও সার্ভেয়ার রুহুল আমীন সরেজমিন তদন্তে গেলে দেখি গাছ কাটা। স্লুইস গেইটের রাস্তাটির খারাপ অবস্থা। কানুনগো সাব তদন্ত প্রতিবেদন দিয়ে দিয়েছেন।”

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn