জাবি: ছাত্রদের অবরোধে পুলিশের টিয়ারশেল ও প্রতিপক্ষের হামলা
জাবি: সড়ক দুর্ঘটনায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্র নিহত পর ক্যাম্পাসে নামাজে জানাযার অনুমতি না দেওয়া এবং ঘাতক চালককে সনাক্ত করে শাস্তি প্রদানের দাবিতে ঢাক-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ চলছে। শনিবার বেলা পৌঁনে ১২ টা থেকে এখনো পর্যন্ত এ অবরোধ ও বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছে জাবির সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সরেজমিনে দেখা যায়, বিক্ষোভের শুরুতে প্রতিপক্ষ ছাত্ররা সাধারণ ছাত্রদের উপর হামলা চালায়। তারা সাধারণ বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের আন্দোলন বন্ধের নির্দেশ দেয়। কিন্তু প্রশাসনের অবহেলার কারণে দুই শিক্ষার্থীর জানাযা ক্যাম্পাসে না হওয়া ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় তারা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অবরোধ চালিয়ে যাবে বলে অঙ্গিকারবদ্ধ বলে ছাত্রলীগকে পাল্টা হুশিয়ারি দেয়।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের বক্তব্য, “সাম্প্রদায়িক মনোভাব নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তপন কুমার সাহা ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কুট-কৌশল করে ক্যাম্পাসে নিহত দুই সহপাঠীর নামাজে জানাযা করার অনুমতি না দিয়ে তারা লাশের সাথে রাজনীতি করেছে। প্রক্টর নিরাপত্তার অযুহাত দিয়ে এমন গর্হিত কাজের সিদ্ধান্ত নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আবেগ নিয়ে খেলা করছে। বাস্তবে প্রশাসন সাধারণ নিরাপত্তা দিতেও ব্যর্থ হয়েছে।”
অপরদিকে অবরোধ ২ ঘন্টা অতিবাহিত হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম ও প্রো-ভিসি অধ্যাপক আবুল হোসেন ঘটনাস্থলে এসে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন ও তাদের দাবি দাওয়া মেনে নেন। এসময় শিক্ষার্থীরা ভিসি’র কাছে কিছু দাবি উপস্থাপন করে এবং ভিসি তা মেনে নেন ও বাস্তবায়ন করার আশ্বাস দেন। দাবিগুলো হলো- ক্যাম্পাসের দুই গেটে ট্রাফিক সিগনাল বসানো, প্রান্তিক গেটে ওভার ব্রিজ নির্মাণ করা (তিন দিনের ভেতর কাজ শুরু করতে হবে), ক্যাম্পাসের সীমানায় যানবাহনের গতিসীমা ৩০ কি.মি. এর মধ্যে রাখার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং নিহত পরিবারের সর্বাত্মক সহযোগিতা করা। এরপর ভিসি ঘটনাস্থল ত্যাগ করার সময় সাংবাদিকদের বলেন, ‘যেহেতু আমি দাবি নেমে নেওয়ার পরও তারা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে সেহেতু আমি বলব তাদের অন্য কোন উদ্দেশ্য রয়েছে।” ভিসি’র এমন বক্তব্যে আন্দোলনকারীরা বলেন, ভিসিসহ প্রশাসনের উদাসীনতায় আমরা প্রতিনিয়তই সড়ক দুর্ঘনাসহ সাধারণ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগী। তাই আশ্বাস নয়, কাজ শুরু না করা পর্যন্ত আমরা ভিসি ম্যামের কথার উপর আস্থা রাখতে পারিনা। যেহেতু তিনি এর আগের আমাদের আশ্বাস দিয়ে কিছুই করেনি।”
এরপর আন্দোলনকারীরা মহাসড়কে আগুন জ্বালিয়ে আবারো বিক্ষোভ করতে থাকে। তাছাড়া রাস্তায় গাছের গুড়ি ফেলে অবরোধ শুরু করে। এদিকে দীর্ঘ সময় ধরে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করার ফলে চমর ভোগান্তিতে পড়েছে সাধারণ যাত্রিসহ দূর-দূরান্ত থেকে ঢাকা আসা যাত্রীরাও। এছাড়া ঢাকা ছেড়ে আসা পরিবহনগুলো চরম জ্যামে আটকা পড়ে আছে। কোন গাড়িই গন্তব্যের উদ্দেশ্যে সাভার পার হতে পারেনি। ঘটনাস্থলে আশুলিয়া থানা ও সাভার মডেল থানার পুলিশ অবস্থান করছে। কিন্তু তারা কোন রকম এ্যাকশনে যায় নি বা আন্দোলনকারীদের বাধা প্রদান করেনি। আশুলিয়া থানার ওসি মুহসিনুল কাদির বলেন, “আমারা প্রশাসনের সাথে কথা বলে তারা যে সিদ্ধান্ত দেয় সে অনুযায়ী কাজ করবো। তবে এখনো আমরা কোন এ্যাকশনে যায় নি।”