মাকসুদা সুলতানা ঐক্য :

ঐ দিকে যেমন ইমরান এইচ বাহিনী টাকার বালিশে মাথা দিয়ে দিন কাটাচ্ছে আর এই দিকে আমাদে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান দের অবস্থা একটু বলি। হ্যাঁ আমাদের মধ্যে ও যে কেউ টাকার ধান্দার চেষ্টা করেনি তা বললে মিথ্যা বলা হবে, আমাদের মাঝে ও মাহবুব নামের একজন ক্ষণে ক্ষণে রূপ বদলাতে দেখেছি। সে একবার ইমরানের তাবুতে যায় আবার আমাদের কাছে ফিরে আসে, কোন এক কালে আমাদের প্রধান মন্ত্রীর সাথে তার দাঁড়ান একটা ছবি লেমিনেটিং করে সব সময় ব্যাগে নিয়ে ঘুরত। আর সুযোগ পেলেই সে বঙ্গবন্ধুর সৈনিক বলে সে ছবিটা সবাইকে দেখাত। তখন সে ওটা বেঁচে একটা ফায়দা নেওয়ার তালে ব্যাস্ত থাকতো।

আমাদের মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কম্যান্ডের মেহেদী এবং আমি সবই বুঝতাম কিন্তু আন্দোলনের স্বার্থে চুপ করে থেকেছি কারন সে ওসব যা ই করুক আমাদের দলের হয়ে অনেক পরিশ্রম করতো পরে বুঝতে পেরেছি ওটা আসলেই একটা ধান্দাবাজ ছিল। কারণ যখনি কোন টিভি ক্যামেরা আমাদের পথ দিয়ে আসত ওমনি মাহবুব দৌঁড়ে গিয়ে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে হাজির হতো, অথচ আমি আর মেহেদী সব সময় ই ক্যামেরা এভয়েড করতাম । এমন কি আমি যখন দলীয় কেউ আসলে তাঁদের ছবি তুলতাম ঠিক তখনো কোথা থেকে মাহবুব এসে সেই নেতাদের পাশে দাড়িয়ে ছবি তুলতে ব্যাস্ত হয়ে যেতো …। এসব দেখে আমি আর মেহেদী তাঁকে আমাদের কাছ থেকে আস্তে আস্তে সরিয়ে দিতে থাকলাম । তখন দেখতাম সে আবার ঐ গ্রুপের সাথে ঘেঁষতে চলে যেতো ।

আর আমাদের খাবার আর গণস্বাক্ষরের কাপড়, সিগনেচার পেন ছাড়া আনুসাংগিক খরচ কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধা কম্যান্ড , আওয়ালীগ এর আরও ২/৩ জন সরবরাহ করতেন, তবে সেটা অবশ্যই টাকার বাণ্ডিলে না । আমরা আমাদের চাহিদা পত্র পাঠাতাম আর সেই অনুযায়ী তাঁরাই কিনে পাঠাতেন । কিন্তু সব সময় ই আমাদের নগত টাকার প্রয়োজন হতো তারপর ও আমরা কারো কাছ থেকে নগত টাকা ইচ্ছে করেই নেই নি …

আন্দোলন তখন চরম জমজমাট গাজীপুরের এক শিল্পপতি তার পি এস কে পাঠালেন আমাদের কাছে , কারণ তিনি আমাদের মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের জন্য কিছু অর্থ সাহায্য দিতে চান।  সেই পি এস গেলো আমাদের মেহেদীর কাছে আর মেহেদী তাঁকে বলল আমি না ঐক্য আপার কাছে যান কথা বলেন দেখেন উনি কি বলেন , সেই পি এস আমাকে এসে বললেন “আপা আমাদের এম ডি স্যার একটু আপনার সাথে কথা বলবেন প্লিজ একটু কথা বলেন ” আমি ও ভদ্রতার খাতিরে তার ফোনটা নিয়ে কথা বলার এক পর্যায় এম ডি ভদ্রলোক আমাকে বললেন তিনি কিছু নগদ টাকা আমাদের খাওয়া আর জিনিষ পত্র কিনতে দিতে চাচ্ছেন কারণ তিনি নিজে একজন মুক্তিযোদ্ধা কিন্তু অসুস্থতার কারণে তিনি আমাদের কাছে আসতে পারছেন না ।  কিন্তু মনে প্রাণে আমাদের সাপোর্ট করছেন তখন আমি এম ডি ভদ্রলোকের কথা শুনে বিনয়ের সাথে বলেছিলাম আংকেল আপনি আমাদের বাবার মতো আপনি না আসতে পারলেও আমরা ধরে নিচ্ছি আপনি সব সময় আছেন আমাদের সাথেই, কিন্তু আপনি যে নগত টাকা দিতে চাইছেন আমি খুবই দুঃখিত আমরা কারো কাছ থেকেই নগদ টাকা নেই না। উত্তরে তিনি বললেন তাহলে কি কি লাগবে তাই একটা কাগজে লিখে আমার পি এস এর কাছে দিয়ে দেন আমি আগামীকালই তা আপনার কাছে পাঠিয়ে দিবো। আমি তখন কিছু চিপস, বিস্কিট, মোমবাতি, গণস্বাক্ষরের জন্য পলেস্তারের কাপড় আর কিছু সিগনেচার পেন দরকার লিখে কাগজের নিচে আমার নাম সই করে সেই পি এস এর কাছে দিয়েছিলাম । পরের দিন ঠিকই ভদ্রলোক তার কথা মতো সব পাঠিয়েছিলেন তখন আমিও সংগঠনের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানিয়ে একটা ফোন দিয়েছিলাম ।

এদিকে আরও দু / চার জন টাকা অফার করতেন প্রায় প্রতিদিন ই কিন্তু আমার আর মেহেদীর কথা ছিল কোন নগদ টাকা নয় সাথে থাকুন আমাদের যখন যা লাগবে কিনে এনে দিবেন তাহলেই হবে তখন পর পর বেশ কয়েক দিন একজন অনেক গুলো করে সেন্টার ফ্রুট চকলেট, প্রাণের আচারের ছোটো প্যাকেট আমার হাতে এনে দিতো … আর আমি আমাদের ওখানে দাঁড়িয়ে আন্দলনে আসা মানুষদের মাঝে ছুঁড়ে দিতাম । কেউ কেউ দেখলেই বলতো আপু আমি কিন্তু কাল ও আসবো চকলেট খেতে । তার মানে বুঝতে পারছেন তো মানুষের মনে হতে শুরু করেছিল ওখানে সবাই এক ই পথের পথিক ।

হ্যাঁ আমি দৃঢ় ভাবে আমার সংগঠন মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কম্যান্ড / প্রজন্মের / জয় বঙ্গবন্ধু গ্রুপের সাথে মানুষের অর্থনৈতিক লেনদেন এর সত্যিকারের হিসেব দিলাম । (তবে ঐ জনসমুদ্রে অন্য কেউ যদি বঙ্গবন্ধু বা আওয়ামী লীগের নাম ব্যাবহার করে আসলেই কোন ধান্দাবাজি করে থাকে তবে সেই দায় ভার আমাদের সংগঠন মুক্তিযোদ্ধা সন্তান প্রজন্মের নয়।) আমি আমার সংগঠনের সাথে এইচ বাহিনীর ফারাক টা বুঝালাম মাত্র।

যা বলছিলাম একদিন সন্ধায় আমাদের মাইক ভাড়া দিতে আর মোমবাতি কিনতে নগদ টাকার দরকার পড়লো তখন মেহেদী আমায় বলল “দোস্ত কিছু টাকা দে মোমবাতি আর মাইক ভাড়া দিতে হবে, আমি আমার ব্যাগ থেকে যা ছিল ওকে দিয়ে দিলাম পরে মেহেদী বলল আগে তোর যাওয়ার ভাড়া টা রেখে দে ” আমি ওর কথামত সি এন জি ভাড়া ১৫০ টাকা রেখে দিলাম , আর তার কিছুক্ষণ পর ই আমাদের সংগঠন থেকে কিছু টাকা আসলো । তখন মেহেদী টাকাগুলো অতো ভিড়ের মধ্যে আমায় রাখতে বলেছিল কিন্তু আমি ওকে বলেছি, এগুলো আমাদের নিজেদের টাকা আমি আমার ব্যাগ যেখানে সেখানে ফেলে রাখি তাই এই গুলো তুই তোর নিজের পকেটেই রাখ আর পরে আমার কর্মীদের চা খাওয়ানোর সময় তোর কাছ থেকে চেয়ে নিবো ।

তার একটু পরেই মেহেদী আমাদের এক সহকর্মীকে ওই টাকা থেকে সবার সামনেই কিছু টাকা বের করে দিলো সাইন পেন কিনতে। আর যাই কই, কেউ একজন কথা থেকে মেহেদীর টাকা দেওয়ার ছবি টা তুলে ঠিক পরের দিনই জামায়াতের বিভিন্ন পেজ এ পোস্ট করে দিলো, ‘এই দেখুন শাহাবাগের টাকার খেলা’ নাম দিয়ে। আমি আমার সংসদের কাজ সেরে যখন শাহাবাগ গেলাম তখন মেহেদী দৌঁড়ে এসে আমায় বলল “দোস্ত কাল তো আমার পেন কিনতে টাকা দেওয়ার ছবিটা ফেসবুকে চলে গেছে জামায়াতীদের পেজের মাধ্যমে তুই দেখছিস নাকি? তাকে বললাম না আমি ছাগু পেজ এ যাই না তাই জানিও না। তখন এক ছেলে তার ল্যাপটপ থেকে ঐ ছবিটা আমায় দেখাল কিন্তু আমি অবাক হলাম এটা ভেবে যে যখন শাহাবগে নাম উচ্চারণ করতে ভয় পেত ছাগু গ্রুপ তখন এখানে এসে , তাও আবার মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ছবি তোলা তো অসম্ভব তাহলে কে করলো এই কাজ টা! গণজাগরণেরই কেউ?

যারা মঞ্চের নাম ভাঙ্গিয়ে কোটি কোটি টাকা কামিয়ে নিচ্ছে তাদেরটা ছাগু পেজ এ যায় না অথচ জয় বঙ্গবন্ধু গ্রুপের সামান্য নিজেদের সংগঠন থেকে আসা এই কয়টা টাকা ফেসবুকে চলে গেল কি করে? তাহলে কি মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের হেয় করার জন্যই ঐ মঞ্চ থেকে কেউ এটা করেছে?

নাকি আওয়ামী লীগকে ফাঁসানোর জন্য এটা করা হচ্ছে? কিছুই বুঝলাম না আবার অনেক কিছু বুঝেই ব্যাপার টা নিয়ে চুপ হয়ে গেলাম আর মেহেদীকে বললাম তুই ও চুপ থাক সত্যি একদিন বের হবেই যে এটা কাদের কাজ ছিল। তার কিছুদিন পরেই জানলাম আমাদের ধারণা ঠিক, শুধু মাত্র মুক্তিযোদ্ধা সন্তান প্রজন্মকে ছোটো করানোর জন্যই মঞ্চ থেকে কেউ একজন ওটা করেছিল।

ঠিক তখনি আমার সাথে গায়ক রুপমের সাথে কথা হয় আমি ওকে জিজ্ঞাসা করলাম, রুপম তুমি তো ইমরান এইচদের সাথে আছো আন্দোলনের কি অবস্থা? কি ভাবতেছ তোমরা? তার উত্তরে রুপম আমায় বলল, যেভাবে চলে চলতে দাও আর তোমরাও চালিয়ে যাও । আর তার সাথেই ছিল আমার ইউনিভার্সিটির ক্লোজ ফ্রেন্ড শফিক তুহিন, আমি তুহিনকে দেখে জিজ্ঞাসা করলাম, কিরে তুই এইখানে কি করোস? উত্তরে তুহিন বরাবরের মতোই উত্তর দিয়েছিলো “তোদের দেখতে আসছি কিন্তু আসার পর আর ফিরে যাইতে মন চাইতেছেনা। আর আমি তো এখন প্রতিদিনই আসি কিন্তু তোর অইখানে যাই না কারণ তুই একটা আওয়ামী লীগ।’’

এটা তুহিন দুষ্টুমি করেই বলেছিল কারণ ও নিজে ওখানে মানে ইমরানদের সাথে গান গাইতে গেলেও সে কিন্তু অই ধান্দাবাজি সম্পর্কে তেমন কিছুই জানতো না । ও সেখানে যেতো প্রাণের টানেই।

আর ততদিনে ইমরানের সাথের ধান্দাবাজ বাহিনীর বদৌলতে ওদের মঞ্চের আড়ালে গাঁজা, ইয়াবা, ওয়াইন সহ বিভিন্ন নেশা শুরু হয়ে যায়। এখানেও কিন্তু সেই আগের মতোই প্রকৃত কর্মীরা তখনো এসবের বাইরেই থাকতো। ওরা আগেও যেমন ধোঁয়ায় ছিল তখন পর্যন্ত ওদের ভাগ্যের উন্নতির বদলে অবনতি হতে থাকলো ।

ঐ ব্লগার গ্রুপের দেওয়ান তকি নামটা মোটামুটি সবাই জানেন তবু বলছি। তকি আসলে জন্মসূত্রে ঘোর আওয়ামী লীগ। নিজেও কুমিল্লা জেলা ছাত্রলীগের একজন নেতা কিন্তু শুধু অনলাইন ব্লগার হওয়ার কারণে তকি ইমরান এইচদের ওখানেই থেকে আন্দোলন করতো। এই ছেলে ঐ আন্দোলনের পেছনে নিজের বাসা থেকে এনে সহকর্মীদের পেছনে যে কতো টাকা খরচ করেছে তার হিসেব আজো মিলাতে পারেনি ।

তকি নিজে খুবই মন ভালো একটা ছেলে ও কোন দিন কোন ধান্দাবাজির মধ্যে ছিল না এমন কি অনেক কিছু ও নিজেই বুঝতে পারতো না ও উল্টা আমাকে জিজ্ঞাসা করতো আপু কি হইতাছে কও তো? আমি ওকে তখন কিছু উত্তর না দিয়ে চলে যেতাম কারণ আমি নিশ্চিত ছিলাম তকি যখন নিজে ইমরান এইচ সরকারের ভণ্ডামি বুঝে ফেলবে সাথে সাথে লাত্থি মেরে তাকে ত্যাগ করবে। ওদের সাথে ছিল হিমেল সে ও তকির বন্ধু ওরা দুজনেই চরম খেটেছিল কিন্তু একদিন ইমরান এর আসল রূপ টের পেয়ে ওরা দল ত্যাগ করেছিল ততদিনে অবশ্য অনেক দেরী হয়ে গেছিলো । শেষ পর্যন্ত ছিল কামরুজ্জামান সাগর। ওর ও অনেক করুণ অবস্থা হয়েছে সেটা আগামী পর্বে লিখবো।

তার ও আগের কথা তখন শাহাবাগ আর আন্দোলনের জায়গায় ছিল না ওটা ছিল একটা ফুর্তি করার পার্ক সন্ধ্যা হলেই দলে দলে মানুষ এসে নাচ গান সহ বিভিন্ন ধরণের কর্মকাণ্ড চালাতে শুরু করলো, আর ইমরান তার ধান্দাবাজি ধরে রাখতে আজ সরকারের পক্ষে কাল সরকারের বিপক্ষে একে দিন একেক বাহানা তুলে মাঠ গরম রাখার চেষ্টায় ব্যস্ত। এক একবার মনে হতো ও ই দেশের প্রধানমন্ত্রী । যতো বড় মুখ নয় ততো বড় কথা বলেই চলছিল। কখনো সরকারকে চ্যালেঞ্জ করার সাহসও দেখিয়ে ফেলত। আর সারা দেশের মানুষের কাছে টিভি ওর বন্দনা দেখে ও যা বলে তাই করা শুরু করলো । আর ইমরান এইচ সরকার “প্রিয় দেশবাসী” বলে ভাষণ দিতে লাগলো। আজ এই কর্মসূচি ঘোষণা কাল অই কর্মসূচি ঘোষণার মাধ্যমে মিডিয়া চাঙা করে রাখত।

আর মনে করে দেখুন সারাদেশে এমন কি পাড়ায় মহল্লায় দিনে দিনে নিত্য নতুন ব্লগার গ্রুপ তৈরি হল, যারা জীবনে এক লাইন লিখেনি তাঁরাও বিশাল বিশাল রিপোর্ট লিখতে শুরু করলো। ওটা তখন একটা ক্রেজ এ পরিণত হয়ে গেলো ।  অনেকেই ফেসবুকের আই ডি তে নিজের ব্যাক্তিগত পরিচয়ের জায়গায় নিজেই ব্লগার শব্দটা যুক্ত করে দিতে শুরু করেছিল । আর ইমরানের বানী তাঁরা দৈব বানীর মতো শুনতে থাকলো।

আর সরকার তখন আসলেই কিছুটা বেকায়দায় পরে গেছিলো বোধ করি। কারণ সরকার নিজেই হল রাজাকারদের যম আর সেই রাজাকার হটানো আন্দলনে সারা দেশের মানুষের এমন স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ। তারপর আবার চাওয়ার দাবী ও এক ই। তাই শুধু সারাদেশের মানুষের ঐ আন্দোলনকে সম্মান জানাতে আর অন্য দিকে তখন আমাদের দেশের মধ্যেই নিত্য নতুন মীরজাফরদের নানা রকম অপপ্রচার , কটূক্তি আর ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের আভাস পেয়েই সরকার তখন প্রকৃত দেশপ্রেমী জনতার সাথে ছিলেন। কিন্তু তাই বলে  ইমরান এইচ সরকারের মতো বেয়াদবি মার্কা আচরণ সহ্য করেছেন তা কিন্তু নয়।

কারণ ২৬ মার্চ ২০১৩ এর আগে থেকেই ইমরানের আসল রূপ সরকার বুঝতে পেরেছিলেন তাই তখন মানে আন্দোলনের ১ মাস পরেই সরকার বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে ওকে সংযত হয়ে কথা বলার বা ভাষণ দিতে নির্দেশ দিতেন। এমন কি যখন ৩১/০৩/২০১৩ তারিখে ইমরান এইচ সরকার জাতীয় সংসদ ভবনে গণ স্বাক্ষরের স্মারকলিপি জমা দিতে গণজাগরণে আশা মানুষের মিছিল নিয়ে শাহাবাগ থেকে পায় হেঁটে রওনা হয়েছিল তখন প্রতিটি স্পটে স্পটে সরকারের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে ঝগড়া হয়েছে সেটা হয়তো কিছুটা হলেও মিডিয়ার সুবাদে আপনারা জানেন। তারপর অনেক ঝামেলা পার করে যখন সংসদ ভবনের গেটে আসলো তখন ভেতরে ঢোকার পারমিশন দিচ্ছিল না। তখন আমি নিজে মাননীয় স্পীকার মহোদয়কে অনুরোধ করে এবং আমি নিজে দায়িত্ব নিয়ে মত ৮ জনকে মাননীয় ডেপুটি স্পীকার মহোদয়ের কাছে স্মারকলিপি হস্তান্তরের ব্যাবস্থা করে দিয়েছিলাম।  যার প্রমাণ আমার কাছেই এখনো আছে। জাতীয় সংসদের অভ্যন্তরে ব্যাক্তিগত ক্যামেরা চালনার পারমিশন না থাকলেও আমি সেখানে আমার ক্যামেরায় সব বন্ধি করে নিয়েছিলাম, কারণ আমি ভেবেছিলাম জীবনে কোন না কোন দিন এই প্রমাণ গুলো আমাদের সংগঠনের জন্য প্রয়োজন হতে পারে। ওখানে কিন্তু কোন টিভি চ্যানেল বা প্রিন্ট মিডিয়ার ক্যামেরা ও ছিল না তাই ভেতরের খবর ভেতরেই থেকে গেছিলো ।

এবার বলুন সরকার/ আওয়ামী লীগ যদি সত্যিকারের ইমরান এইচ সরকারকে তার ওসব অপকর্ম জানার পরেও প্রশ্রয় দিতেন তাহলে আন্দলনের মাত্র ২ মাস পূর্ণ হওয়ার আগেই কেন এই আচরণ করেছিল? কেন তাঁকে জাতীয় সংসদে ঢুকতে বাঁধা দিয়েছিলো? সত্যিটা হল সরকার ইমরান এইচকে নয় বরং সত্যিকারের দেশ প্রেমী মানুষের আন্দোলনকে সন্মান দেখিয়ে শান্ত ছিলেন। আর আমাদের দেশের মিডিয়াগুলোও তখন সরকারের বিপক্ষে যার যতো অসন্তোষ ছিল তখন ঐ গণ জোয়ারে এক ঢিলে সব পাখি মারার প্রবণতাও বোধ করি সবাই দেখেছেন ।
তাই কি আর করা সরকার তার বিচক্ষণতা দেখিয়েছিলেন মাত্র। নিজ দেশে বাস করা শত্রুদের সাথে আমাদের আন্দলনরত মানুষের গৃহযুদ্ধ যাতে না বাঁধে সে জন্যই চুপ ছিলেন।  কারণ আওয়ামী লীগ সরকার খুব ভালো করেই জানতেন ঠিক সেই মুহূর্তে সরকার প্রকাশ্যে যদি গণ জাগরণের তথা ইমরান এর বিপক্ষে কোন বক্তব্য দেন ঠিক সেই মুহূর্তেই দেশের মধ্যে ঘাপটি মেরে বসে থাকা বিষধর সাপের হিংস্র ছোবলের কবলে পরে প্রাণ হারাবে সারা দেশের নিরপরাধ প্রকৃত দেশপ্রেমী অগণিত মানুষ। তাই সরকার তখন জনগণের স্বার্থেই নীরবতাকে শান্তি রক্ষার পথ হিসেবে বেছে নিয়েছিল। কিন্তু ভিতরে ভিতরে যা চলছিল সেটা সরকার ই ভালো জানেন তবে আমরা যারা খুব কাছে থেকে দেখেছি তাঁরা কিছুটা হলেই আঁচ করেছি ……

চলবে….

লেখক: সাংবাদিক

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn