০৫:৩৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ২৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঝগড়ায় উৎসাহ দেয় ফেসবুক

রিপোর্টার
  • সময় : ১০:১৭:০৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ মার্চ ২০১৭
  • / ৪২২ ভিউ

জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক তার প্ল্যাটফর্ম এমনভাবে নির্মাণ করেছে যেন মানুষ পরোক্ষভাবে হলেও কলহে জড়িয়ে পড়ে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের একজন অধ্যাপক এই দাবি করেছেন। গ্লেন স্পার্কস নামের ওই প্রফেসর বলছেন সেখানে এমন সব বক্তব্য, ছবি এবং ভিডিও থাকে যা দেখে মানুষ মানসিকভাবে আহত হয়। ফলে মন খারাপ হয়ে যায়, কোনো কিছু সহজভাবে নিতে ইচ্ছে করে না এবং একপর্যায়ে অজান্তেই বিবাদে জড়িয়ে পড়েন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটিতে সবাই যা ইচ্ছে তাই নিয়ে মন্তব্য করতে পারে। সেই কারণে ভাব প্রকাশের ক্ষেত্রে কেউ সচেতন থাকার প্রয়োজনবোধ করেন না। গ্ল্যান বলছেন, বিষয়টি আরও জটিল। ফেসবুক এমনভাবে তাদের প্ল্যাটফর্মটি সাজিয়েছে যাতে মানুষ কোনো বক্তব্য পড়া এবং দেখায় খুব বেশি সচেতন না থাকে।

এছাড়া, ফেসবুকে মানুষ চেনা-অচেনা বহু মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে। তাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা মানুষের ভুল ধরে তার সমালোচনা করতে ওস্তাদ। এদের কারণে অনেকে আবার বিব্রতবোধ করেন। আবার এমনও দেখা গেছে, ব্যবহারকারী তার দৃষ্টিকোণ থেকে কোনো মনোভাব জানিয়ে ফেসবুকে বক্তব্য দিল। আর সেটি পোস্ট করার সঙ্গে সঙ্গেই নানান মতবাদের মানুষ নিজেদের মনে যা আসছে তাই লেখা শুরু করল। এরফলে মতের ভিন্নতায় একসময় কমেন্টের মধ্যে কলহ স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

ব্রায়ান বিশ্ববিদ্যালয়(Brian Lamb School of Communication at Purdue University)এর ওই অধ্যাপক বলছেন, ফেসবুক কর্তৃপক্ষ সেটাই চায়। মতের ভিন্নতায় কলহ সৃষ্টি না হলে সেখানে অধিক মানুষের অংশগ্রহণ হবে না। যেহেতু ফেসবুক তার প্ল্যাটফর্মে অধিক মানুষের অংশগ্রহণ চায়, তাই লক্ষ্য পূরণের জন্য কলহ সৃষ্টিতে তাদের সম্মতি থাকে। গ্লেন স্পার্কস বলেন, পুরো বিষয়টি ঘটার অন্যতম কারণ হচ্ছে সেখানে অভিজ্ঞ অনভিজ্ঞ সব ধরনের মানুষ অংশগ্রহণ করতে পারে। মন্তব্য করতে পারে। একই সঙ্গে ছবি এবং ভিডিও শেয়ার করতে পারে। কিন্তু কোনো বিধিনিষেধ না থাকায় অধিকাংশ ব্যবহারকারী নির্বোধের মত নানা মন্তব্য করে। যা দেখে বিভিন্ন মতের মানুষের কলহে জড়িয়ে পড়তে বেশি সময় লাগে না।

স্পার্কস বলেন, না বুঝে মন্তব্যের অন্যতম কারণ হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মতামত প্রদাণে মানুষ অসচেতন হয়ে পড়ছে। আর দিন দিন এমন অসচেতন প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে কলহের জন্ম দিচ্ছে। তিনি বলেন, কোনো ব্যক্তি অপর ব্যক্তি সম্পর্কে ফেসবুকের পাতায় যে মন্তব্য করেন নিশ্চিত জানবেন সামনা সামনি দেখা হলে তা কখনই তিনি মুখে বলতেন না। আবার রাজনৈতিক কিংবা সামাজিক বিষয় সম্পর্কে কোনো মন্তব্য ফেসবুকের পাতায় যত সহজে মানুষ দিতে পারে, ভার্চুয়াল মিডিয়ার বাইরে তা পারবেন না। মতের অমিল থাকলেও তা আলোচনার মাধ্যমে বসে তা করবেন। কিন্তু ফেসবুকে এর কোনো বালাই নেই। প্রয়োজনও নেই। ফেসবুক তার প্ল্যাটফর্মে তৎপরতা বাড়াতে ব্যবহারকারীকে প্রচুর বন্ধু তৈরিতে উৎসাহিত করে। কিন্তু ফলাফলে দেখা যায় কেউ কাউকে ভালো করে চেনেন না। তাদের সম্পর্কে জানা তো বহুদূরের ব্যাপার। ফলে প্রকৃত বন্ধুত্বের জায়গা থেকেও তারা অনেকটাই সরে আসেন।

এই পোস্টটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ঝগড়ায় উৎসাহ দেয় ফেসবুক

সময় : ১০:১৭:০৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ মার্চ ২০১৭

জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক তার প্ল্যাটফর্ম এমনভাবে নির্মাণ করেছে যেন মানুষ পরোক্ষভাবে হলেও কলহে জড়িয়ে পড়ে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের একজন অধ্যাপক এই দাবি করেছেন। গ্লেন স্পার্কস নামের ওই প্রফেসর বলছেন সেখানে এমন সব বক্তব্য, ছবি এবং ভিডিও থাকে যা দেখে মানুষ মানসিকভাবে আহত হয়। ফলে মন খারাপ হয়ে যায়, কোনো কিছু সহজভাবে নিতে ইচ্ছে করে না এবং একপর্যায়ে অজান্তেই বিবাদে জড়িয়ে পড়েন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটিতে সবাই যা ইচ্ছে তাই নিয়ে মন্তব্য করতে পারে। সেই কারণে ভাব প্রকাশের ক্ষেত্রে কেউ সচেতন থাকার প্রয়োজনবোধ করেন না। গ্ল্যান বলছেন, বিষয়টি আরও জটিল। ফেসবুক এমনভাবে তাদের প্ল্যাটফর্মটি সাজিয়েছে যাতে মানুষ কোনো বক্তব্য পড়া এবং দেখায় খুব বেশি সচেতন না থাকে।

এছাড়া, ফেসবুকে মানুষ চেনা-অচেনা বহু মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে। তাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা মানুষের ভুল ধরে তার সমালোচনা করতে ওস্তাদ। এদের কারণে অনেকে আবার বিব্রতবোধ করেন। আবার এমনও দেখা গেছে, ব্যবহারকারী তার দৃষ্টিকোণ থেকে কোনো মনোভাব জানিয়ে ফেসবুকে বক্তব্য দিল। আর সেটি পোস্ট করার সঙ্গে সঙ্গেই নানান মতবাদের মানুষ নিজেদের মনে যা আসছে তাই লেখা শুরু করল। এরফলে মতের ভিন্নতায় একসময় কমেন্টের মধ্যে কলহ স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

ব্রায়ান বিশ্ববিদ্যালয়(Brian Lamb School of Communication at Purdue University)এর ওই অধ্যাপক বলছেন, ফেসবুক কর্তৃপক্ষ সেটাই চায়। মতের ভিন্নতায় কলহ সৃষ্টি না হলে সেখানে অধিক মানুষের অংশগ্রহণ হবে না। যেহেতু ফেসবুক তার প্ল্যাটফর্মে অধিক মানুষের অংশগ্রহণ চায়, তাই লক্ষ্য পূরণের জন্য কলহ সৃষ্টিতে তাদের সম্মতি থাকে। গ্লেন স্পার্কস বলেন, পুরো বিষয়টি ঘটার অন্যতম কারণ হচ্ছে সেখানে অভিজ্ঞ অনভিজ্ঞ সব ধরনের মানুষ অংশগ্রহণ করতে পারে। মন্তব্য করতে পারে। একই সঙ্গে ছবি এবং ভিডিও শেয়ার করতে পারে। কিন্তু কোনো বিধিনিষেধ না থাকায় অধিকাংশ ব্যবহারকারী নির্বোধের মত নানা মন্তব্য করে। যা দেখে বিভিন্ন মতের মানুষের কলহে জড়িয়ে পড়তে বেশি সময় লাগে না।

স্পার্কস বলেন, না বুঝে মন্তব্যের অন্যতম কারণ হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মতামত প্রদাণে মানুষ অসচেতন হয়ে পড়ছে। আর দিন দিন এমন অসচেতন প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে কলহের জন্ম দিচ্ছে। তিনি বলেন, কোনো ব্যক্তি অপর ব্যক্তি সম্পর্কে ফেসবুকের পাতায় যে মন্তব্য করেন নিশ্চিত জানবেন সামনা সামনি দেখা হলে তা কখনই তিনি মুখে বলতেন না। আবার রাজনৈতিক কিংবা সামাজিক বিষয় সম্পর্কে কোনো মন্তব্য ফেসবুকের পাতায় যত সহজে মানুষ দিতে পারে, ভার্চুয়াল মিডিয়ার বাইরে তা পারবেন না। মতের অমিল থাকলেও তা আলোচনার মাধ্যমে বসে তা করবেন। কিন্তু ফেসবুকে এর কোনো বালাই নেই। প্রয়োজনও নেই। ফেসবুক তার প্ল্যাটফর্মে তৎপরতা বাড়াতে ব্যবহারকারীকে প্রচুর বন্ধু তৈরিতে উৎসাহিত করে। কিন্তু ফলাফলে দেখা যায় কেউ কাউকে ভালো করে চেনেন না। তাদের সম্পর্কে জানা তো বহুদূরের ব্যাপার। ফলে প্রকৃত বন্ধুত্বের জায়গা থেকেও তারা অনেকটাই সরে আসেন।