‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’ জান্নাতুল নাঈম এভ্রিলকে নিয়ে চলছে নানা সমালোচনা। মঙ্গলবার ফেসবুক লাইভে এসে নিজের বিয়ে ও ডিভোর্সের কথা স্বীকার করার পর তাকে নিয়ে বিতর্ক নতুন মাত্রা পেয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অনেকেই তাকে নিয়ে বিভিন্ন পোস্ট করছেন। বুধবার এভ্রিলকে নিয়ে পোস্ট দিয়েছেন নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন। তসলিমা নাসরিনের পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হল। তসলিমা নাসরিন লিখেছেন, জান্নাতুল নাঈম এভ্রিলের বাবা গ্রামের গরিব চাষী। ১৬ বছর বয়সে এভ্রিলকে জোর করে বিয়ে দেন। আমার বাবা ধনী, নামী ডাক্তার, মেডিকেল কলেজের প্রফেসর ছিলেন। কেউ বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে এলে আমার বাবা বলে দিতেন আমার মেয়ে পড়াশোনা করবে বড় হবে। তারপর বিয়ে করতে চাইলে নিজের পছন্দ মতো বিয়ে করবে।

এভ্রিলের লেখাপড়ার সুযোগ ছিল না। স্বামীর ঘর থেকে পালিয়ে গিয়ে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে তাকে টিউশনি করতে হয়েছে, কলেজে পড়তে হয়েছে। বারো ক্লাস পর তার আর পড়া হয়নি। আমার বাবা মা আমাকে মুখে তুলে খাইয়ে, পরম আদর যত্নে রেখেছেন, উৎসাহ দিয়েছেন ডাক্তারি পড়তে। আমি ডাক্তারি পড়েছি। ডাক্তার হয়েছি। এভ্রিল ছিল অসহায়। খাওয়া জোটেনি টাকা জোটেনি। স্ট্রাগল করেছে বছরের পর বছর। নিজের পায়ে দাঁড়াতে চেয়েছে। শেষ পর্যন্ত একটি বাইক কোম্পানির ব্রান্ড অ্যাম্বাসেডর হয়েছে। ওর আরো বড় হওয়ার স্বপ্ন। আমার অভাব ছিল না। ডাক্তারি করার পাশাপাশি বই লিখেছি, বইগুলো প্রচুর লোকপ্রিয়তা পেয়েছে। পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। নানা পুরস্কার এবং সম্মান পেয়েছি বিভিন্ন দেশ থেকে। এভ্রিল মিস বাংলাদেশ প্রতিযোগিতায় নিজের সম্পর্কে মিথ্যা বলেছে। আমি সাতখণ্ড আত্মজীবনী লিখেছি। কোথাও নিজের সম্পর্কে এক বর্ণ মিথ্যা লিখিনি। এভ্রিল আর আমার মধ্যে আকাশ পাতাল তফাৎ। কিন্তু দেশের মানুষ যখন আমাদের গালি দেয়, গালিগুলো সব এক। কোনও মেয়েই যেন না ভাবে তারা আলাদা। সবাইকে প্রকাশ্যে এবং আড়ালে একইভাবে ডাকে এবং ডাকবে আমাদের মাথার ওপর বসে থাকা সম্মানিত পুরুষজাতি।’

উল্লেখ্য, গত ২৯ সেপ্টেম্বর বসুন্ধরা ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটির নবরাত্রি মিলনায়তনে ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’ হিসেবে জান্নাতুল নাঈম এভ্রিলের নাম ঘোষণা করা হয়। কিন্তু উপস্থাপিকা শিনা চৌহান জানিয়েছিলেন, প্রথম হয়েছেন জান্নাতুল সুমাইয়া হিমি। এ ঘটনার পর থেকেই অনুষ্ঠানটিকে ঘিরে চলে নানা আলোচনা-সমালোচনা। এরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এভ্রিলের বিয়ের ছবি ছড়িয়ে পড়লে বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন আয়োজকরা। গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানা যায়, বিচারকদের রায় তোয়াক্কা না করেই নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী এভ্রিলকে বেছে নিয়েছেন আয়োজকরা। জেসিয়াকে শুরুতে দ্বিতীয় রানারআপ করা হলেও পরে জানানো হয়, তিনি হয়েছেন প্রথম রানারআপ।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn