এম. এ রাজ্জাক :: সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সদর থেকে বালিয়াঘাট নতুন বাজার, শ্রীপুর বাজর থেকে বাদাঘাট এবং কাউকান্দি বাজার থেকে তাহিরপুর সদরের একমাত্র রাস্তাটি এবারের কয়েক দফা বন্যায় বিভিন্ন স্থানে ভেঙ্গে তছনছ হয়ে গেছে।  বিশেষ করে শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের খলিশা জুড়ি গ্রামের সম্মুখে প্রায় ৩শ গজ পাকা রাস্তার মাটি সরে ধেবে এক সাইট ঝুঁকিপূর্ন হয়ে পড়েছে। রাস্তাটির হাওর সাইটে ব্লক বা গার্ডওয়াল না থাকায় নীচ থেকে মাটি সরে গিয়ে এমনটি হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। যাতায়াতের জন্য অন্য কোন রাস্তা না থাকায় এই রাস্তা দিয়েই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মোটর সাইকেল চালকরা যাত্রীসহ পথচারীরা চলাচল করছেন। ফলে যে কোন সময় চালকরা যাত্রী নিয়ে মারাত্মক দুর্ঘটনার কবলে পড়তে পারেন বলে আশংকা করছেন স্থানীয়রা।

অপরদিকে, উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের অভ্যন্তরিণ রাস্তাঘাটগুলো দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় নাজুক হয়ে পড়েছে। রাস্তার বিভিন্ন স্থানে পাকা রাস্তা ভেঙ্গে, পিচ উঠে, ধেবে ও ছোট ছোট ভাঙ্গন দিয়ে মাটি সরে গিয়ে বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে প্রতিনিয়তই ছোট বড় দুর্ঘটনা ঘটছে।  বালিয়াঘাট নতুন বাজার থেকে শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত রাস্তার ব্লক ও মাটি সরে গিয়ে পাকা ভেঙ্গে রাস্তাটি এখন মরণ ফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত সোমবার সড়ক দুর্ঘটনায় তাহিরপুর উপজেলা কওমি মাদ্রাসা ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা জমির হোসাইন অকালে মৃত্যু বরণ করেছেন। শুধু তিনি নন এ ভাবে কয়েকদিন পরপর এসব ভাঙ্গাচূরা রাস্তায় সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে মানুষ অকালে মৃত্যুবরণ করলেও স্থানীয় প্রশাসনের নজরে পড়ছে না বিষয়টি। অভিযোগ উঠেছে, রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী ও এলাকাবাসীর জনদুর্ভোগ চরমে উঠলেও নির্বিকার এলজিইডি, উপজেলার চেয়ারম্যান, ইউপি চেয়ারম্যান ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার শ্রীপুর বাজার থেকে বালিয়াঘাট নতুন বাজার এবং নতুন বাজার থেকে বাদাঘাট বাজার ও  কাউকান্দি বাজার থেকে তাহিরপুর সদরের রাস্তাগুলোর বিভিন্ন স্থানে ব্লক উঠে, মাটি সরে, পাকা রাস্তা এক সাইট হয়ে ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়াই এলাকার মানুষসহ পথচারীরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। বালিয়াঘাট গ্রামের পথচারী রিপন মিয়া বলেন, গত বছর খলিশাজুড়ি রাস্তাটি পাকাকরণ করা হয়েছে। হাওর সাইটে ব্লক বা গার্ডওয়াল না দেওয়াই এক বছরের মধ্যেই রাস্তাটি উল্টে গেছে।  শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য শফিকুল ইসলাম বলেন, এবারের বন্যায় খলিশাজুড়ী গ্রামের সামনের পাকা রাস্তাটির নীচের মাটি সরে গিয়ে এক সাইট ধেবে গেছে। বিকল্প রাস্তা না থাকায় বিপদ জেনেও এইখান দিয়েই মানুষ চলাচল করছে।

এক স্কুল শিক্ষক জানান, উপজেলার রাস্তাঘাটের উন্নয়ন কাজে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অনিয়ম-দূর্নীতির কারণে টেকসই উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তাহিরপুরবাসী। এছাড়া জনদুভোর্গ লাঘবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও  দায়বদ্ধতা এড়াতে পারেন না। শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান খসরুল আলম বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের সীমিত বরাদ্দ দিয়ে এই রাস্তার সংস্কার করা সম্ভব না। ছোট খাটো কাজ হলে তারা ইউনিয়ন পরিষদে বরাদ্দ থেকে রাস্তার সংস্কার বা মেরামত করতে পারেন। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বালিয়াঘাট নতুন বাজারের রাস্তারটির কিছু অংশে মাটি দিয়ে মেরামতের কাজ চলছে। তাহিরপুর উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন বলেন, খলিশাজুড়ি রাস্তাটি পরিদর্শন করেছি। প্রকল্প না থাকায় এখানে আপাতত কাজ করাতে পারছি না।

বরাদ্দ পেলে রাস্তাটি দ্রুত মেরামত করা হবে বলে তিনি জানান।  তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুনা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন, এই রাস্তাটি খুবই জনগুরুত্বপূর্ণ। রাস্তাটির বিষয়ে ইউএনও এবং এলজিইডি অফিসকে বলা হয়েছে রাস্তাটি দ্রুত মেরামত করে দেয়ার জন্য।

এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn