আহমদ মুজতবা রাজি-(ফেসবুক থেকে)
প্রস্তাবিত সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে চলমান বিতর্কে আমিও একজন প্রতিবাদী হিসেবে নিজেকে ভাবতে পছন্দ করছি। জেলা শহরে বা সদর উপজেলার অংশ হোক এ বিশ্ববিদ্যালয় এটিই আমাদের দাবী। শহর বর্ধিত করার বিষয়ে যে দাবী করা হচ্ছে তা অন্য উপজেলায় স্থাপনের মাধ্যমে কোনভাবেই সম্ভব নয়। এটি হাস্যকর যুক্তি। যে উপজেলা সদর থেকে বিচ্যুতির মাধ্যমে জন্ম নিয়েছে সেটি আবার বর্ধিত শহরের অংশ হবে এটি অবান্তর যুক্তি ছাড়া কিছু নয়। ২৪ তারিখের জনসমাবেশের পর স্থানীয় একটি দৈনিকে পরিকল্পনা মন্ত্রী মহোদয়ের বক্তব্য সহকারে যে সংবাদ ছাপা হয়েছিল তা আশাবাদী করেনি আমাদের। এ বক্তব্য সাংঘর্ষিক বক্তব্য নিঃসন্দেহে। জায়গা নির্ধারণের জন্য মৌজা নির্ধারণ করে দিয়ে বললেন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান নিয়ে আলোচনা হবে। ভাবুন তো এটি কতবড় মিথ্যে আশ্বাস ছিল। কেন আমাদের মিথ্যে আশ্বাস দেয়া হলো? আমরা কি এতটাই মদন? নাকি আমাদের বেবুথা(!!) ভাবা হয়????
এত জনসমাগমের পর কেউ কেউ বললেন সরকারের উন্নয়নযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করার প্রয়াস এটি। নির্লজ্জ অভিযোগ এটি। শান্তিপুর্ণ এ জনসমাবেশের মাধ্যমে এ শহরের, এ উপজেলার মানুষ নিজ এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপনের দাবী করেছেন। নিজেদের দাবী আদায়ে হরতাল দেয়নি, ভাঙচুর করেনি, করেনি কোন ধরণের বিশৃঙ্খলা বা দাঙ্গা ফ্যাসাদ। সরকারের তথা সরকার দলের প্রতিপক্ষ বানানোর চেষ্টা করা হলো শহরবাসীদের সাথে পুরো সদর উপজেলাবাসীদের। এ বিষয়ে তাদের বোধোদয় হবে হয়তো কোন একদিন।
এ শহরে আধুনিকায়নের ছোয়া লাগার আগেই বিকেন্দ্রীকরনের অপচেষ্টা করছেন কেউ কেউ। সমৃদ্ধ জেলা শহর বানানোর আগেই বিকেন্দ্রীকরণ বিষয়টি প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে অনেকের মনে। এ শহরবাসী কখনোই আপত্তি করেনি একটি স্পেশালাইজড বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপারে। হবিগঞ্জে হবে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, সুনামগঞ্জে হবে প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। অথচ শিল্প কারখানা স্থাপনের মাধ্যমে অনেক এগিয়ে গেছে হবিগঞ্জ, সেখানে হতে পারতো বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কৃষিতে এগিয়ে থাকা এ জেলায় হতে পারতো কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। এমন উল্টো পরিকল্পনার বিরোধিতা করেনি এ জেলার মানুষ। চেয়েছে নিজ উপজেলায় স্থাপিত হোক বিশ্ববিদ্যালয়টি। এটি কি খুব বেশী দাবী না কি অন্যায় দাবী??
অনেকেই বলছেন দাবী জানানোর এই ম্যাড়ম্যাড়ে সমাবেশে সরকার তার সিদ্ধান্ত বদলাবে না। কেউ কেউ বলছেন স্বয়ং পরিকল্পনা মন্ত্রীই এ সিদ্ধান্ত বদলাতে দেবেন না। কতজনই কত কথা বলছেন। সুনামগঞ্জ বাচাও আন্দোলন, জাগো সুনামগঞ্জ, সচেতন সুনামগঞ্জবাসীর ব্যানারে পথসভা, গণস্বাক্ষর সংগ্রহ কর্মসুচী চলছে। এখনো এসব মানুষ বিশ্বাস করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি তাদের দাবী পুরণে সহায়ক হবে।
সেই সময়ের অপেক্ষায়!!!! জয় বা পরাজয় হিসেব করছিনা, দাবী তুলেছি দাবী আদায়ের দাবী থেকেই। অপ্রাসঙ্গিক, অমুলক যুক্তির কাছে হেরে না যাক জনমানুষের দাবী। দলমত নির্বিশেষে সবাই হোক গর্বিত সুনামগঞ্জবাসী। পরিকল্পনা মন্ত্রী তার কাজের মাধ্যমে অমরত্ব লাভ করুন সারাদেশে, সারা জেলায় অবশ্যই শুধুমাত্র শান্তিগঞ্জে নয়। সরকারের উন্নয়নমুলক কর্মকান্ড প্রভাব খাটিয়ে নিজ এলাকায় নিয়ে যাওয়া উন্নয়নযাত্রাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে এটিই সত্য ঘটনা। দায়ী আমরা নই, দায়ী তাদেরই করুন যারা অন্যায় করছেন।
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :Share on FacebookShare on Google+Tweet about this on TwitterEmail this to someoneShare on LinkedIn