দেশে ফেরার অনুমতিপত্র পেল তুরস্কে আটককৃত ৩০০ বাংলাদেশি
বাংলাদেশ থেকে অবৈধ পথে ইউরোপে পাড়ি জমাতে গিয়ে তুরস্কে আটকা পড়া প্রায় দুই হাজার বাংলাদেশিকে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া চলছে। ইতোমধ্যে প্রাথমিক তালিকায় থাকা প্রায় ৫০০ জনের নাগরিকত্ব যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। তবে এদের মধ্যে তিন শতাধিক বাংলাদেশিকে দেশে ফেরার অনুমতিপত্র (ট্রাভেল পারমিট) দিয়েছে আঙ্কারাস্থ বাংলাদেশ দূতবাস। সম্প্রতি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আঙ্কারায় বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, গত কয়েক মাসে ইউরোপে পাড়ি জমানোর লক্ষ্যে তুরস্কে গিয়ে আটকা পড়েন প্রায় দুই হাজার বাংলাদেশি। তাদের বেশির ভাগেরই নেই কোনো পাসপোর্ট বা বৈধ কাগজপত্র। মূলত দেশী-বিদেশি দালালচক্রের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ, বিশেষ করে ইরান, লেবানন ও জর্ডান হয়ে তুরস্ক গেছেন তারা। আঙ্কারা ও ইস্তাম্বুলস্থ বাংলাদেশ মিশনের কর্মকর্তাদের সরবরাহ করা তথ্যমতে, আটকা পড়া বাংলাদেশিদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ যুদ্ধবিধ্বস্ত লিবিয়া হয়ে তুরস্কে গেছে। যদিও প্রায় দুই বছর ধরে লিবিয়া ভ্রমণে বাংলাদেশ সরকারের নিষেধাজ্ঞা বহাল রয়েছে।
কর্মকর্তারা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে মধ্যপ্রাচ্যে বৈধভাবে কর্মরত বাংলাদেশিরা ইউরোপের মোহে পড়ছেন। দালালচক্রের মাধ্যমে বৈধ কর্মসংস্থান ছেড়ে অবৈধ ও অনিশ্চিত গন্তব্যের দিকে ছুটছেন তারা। যদিও তুরস্ক মিশন ঢাকাকে যে রিপোর্ট দিয়েছে তাতে স্পষ্ট করেই বলা হয়েছে, তুরস্ক হয়ে অবৈধ পথে ইউরোপ প্রবেশের চেষ্টা যেকোনো সময়ই অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। বর্তমান সময়ে এটি প্রায় বন্ধ।
জানা গেছে, ডিটেনশন সেন্টার থেকে বের হয়েও অনেকে সমুদ্রপথে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাড়ি দেয়ার চেষ্টা করে। এতে অনেকেরই সাগরে মৃত্যু হয়েছে। অতিসম্প্রতি ইস্তাম্বুলে একজন বাংলাদেশি মারা গেছেন। তুরস্কে সক্রিয় ও সংঘবদ্ধ দালালচক্রের খপ্পরে পড়ে ভিনদেশী যেসব মানুষ জীবনের এমন ঝুঁকি নেয়, তারা বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গেও যুক্ত হয়ে পড়ে। সেই তালিকায় বাংলাদেশিরাও রয়েছে। এদিকে তুরস্কে আটকে পড়ার বাংলাদেশিদের বিষয়ে ঢাকাস্থ তুরস্কের রাষ্ট্রদূত ডেভরিম ওজতুর্ক বলেন, তিনি এ বিষয়ে অবগত নন। বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে তুরস্ক দূতাবাসে কোনো প্রকার যোগাযোগও করা হয়নি। তবে তিনি এতটুকু নিশ্চিত করে বলতে পারেন, যেসব বাংলাদেশি সেখানে দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছেন, তাদের দুর্ভোগ লাঘবের জন্য তুরস্ক সরকার সহযোগিতা করছে।